বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫
Natun Kagoj
শিরোনাম
  • ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে না: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসায় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক প্রাণের তিন কর্মীর কারাদণ্ড, কোম্পানির দাবি ‘পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র’ ভয় নয়, সচেতন করতেই এমন বিজ্ঞপ্তি: এনবিআর চেয়ারম্যান শুল্ক কমিয়ে ১৫ শতাংশে নামানোর চেষ্টা চলছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা ভারী বর্ষণে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর, নিম্নাঞ্চল প্লাবনের আশঙ্কা অবৈধ অভিবাসনের মরীচিকা ও বেদনাদায়ক বাস্তবতা উড়োজাহাজ সংকটে দুবাই ও কুয়েত ফ্লাইট বাতিল করল বাংলাদেশ বিমান যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুই জাহাজ কেনার অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার রাশিয়ার দখলে থাকা অঞ্চল ছেড়ে দিতে প্রস্তুত ইউক্রেন!
  • অবৈধ অভিবাসনের মরীচিকা ও বেদনাদায়ক বাস্তবতা

    অবৈধ অভিবাসনের মরীচিকা ও বেদনাদায়ক বাস্তবতা
    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    প্রতিনিয়তই আমরা এমন করুণ কাহিনি শুনি, যেখানে কেউ নিজের জীবনের সঞ্চয়, স্বপ্ন ও ভবিষ্যৎ সবকিছু উৎসর্গ করে বিদেশে ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় পা বাড়ায়, অথচ শেষমেশ খালি হাতে ফিরে আসে। সিলেটের আলমগীর চৌধুরী, নোয়াখালীর জায়েদ হাসান, এমন অসংখ্য তরুণের জীবনে যুক্তরাষ্ট্র যাত্রার স্বপ্ন পরিণত হয়েছে দুঃস্বপ্নে। কোটি কোটি টাকা খরচ, মাসের পর মাস জঙ্গল, নদী, পাহাড় পাড়ি দিয়ে প্রাণহানির ঝুঁকি নেওয়া, আর শেষমেশ দীর্ঘ বন্দিজীবন শেষে দেশে ফেরত আসা এ এক ভয়াবহ বাস্তবতা।

    যুক্তরাষ্ট্রসহ উন্নত দেশগুলোতে অভিবাসন নীতি দিন দিন কঠোর হচ্ছে। সীমান্ত পেরিয়ে প্রবেশকারীদের অনেকেই ‘আশ্রয় আবেদন’-এর সুযোগ পেলেও, অধিকাংশের আবেদন আদালতে খারিজ হয়ে যায়। কারণ, আশ্রয়ের শর্ত শুধুমাত্র দারিদ্র্য বা বেকারত্ব নয় বরং নিজ দেশে প্রাণনাশ, রাজনৈতিক বা ধর্মীয় নিপীড়নের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ থাকতে হয়। কিন্তু দালালরা এই আইনি বাস্তবতা গোপন রেখে তরুণদের রিফিউজি হওয়ার স্বপ্ন দেখায়। ফলাফল, আর্থিক সর্বনাশ, শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি, আর সামাজিক অপমান।

    ২০২৪ সালের জাতিসংঘের তথ্যমতে, এক লাখেরও বেশি বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আশ্রয় আবেদন করেছেন, যা প্রতি বছরই বাড়ছে। অথচ এদের বড় অংশই অবৈধ পথে প্রবেশের চেষ্টা করে ব্যর্থ হচ্ছেন। অনেকে নদী ও মরুভূমি পাড়ি দিতে গিয়ে প্রাণ হারান, কেউ আবার বন্দিজীবনের শিকার হন।

    আমাদের সমাজে বিদেশযাত্রা নিয়ে অযৌক্তিক উন্মাদনা ও ‘সফল প্রবাসী’ হওয়ার সামাজিক চাপ তরুণদের ঝুঁকিপূর্ণ পথে ঠেলে দিচ্ছে। পরিবারও প্রায়শই এই ঝুঁকি অনুমোদন করে, ভাবছে একবার বিদেশে পৌঁছালে আর্থিক উন্নতি নিশ্চিত। কিন্তু বাস্তবতা হলো, যারা বৈধ পথে যান, দক্ষতা ও আইনি অবস্থান নিশ্চিত করে যান, তাদের জন্য বিদেশে সাফল্যের সুযোগ অনেক বেশি।

    সরকারেরও উচিত এই ঝুঁকিপূর্ণ অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযান পরিচালনা করা এবং জনগণকে আইনি প্রক্রিয়ার বিষয়ে সচেতন করা। একই সঙ্গে দেশে কর্মসংস্থান ও দক্ষতা উন্নয়নের সুযোগ বাড়ানোই এই ‘মরীচিকা যাত্রা’ কমানোর মূল উপায়।

    প্রত্যেক তরুণের মনে রাখা উচিত, বিদেশ মানেই সুখের নিশ্চয়তা নয়, আর অবৈধ অভিবাসন মানেই এক অজানা অনিশ্চয়তা। জীবনকে বিপন্ন করে নয়, বরং দক্ষতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে বৈধ উপায়ে বিদেশযাত্রাই হতে পারে সাফল্যের একমাত্র সঠিক পথ।


    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    সর্বশেষ

    আরও পড়ুন