হিমালয়ের জলবায়ু সহনশীলতা বৃদ্ধিতে ইউএন ক্লাইমেট চেঞ্জ ও আইসিমোড-এর নতুন ত্রিবার্ষিক অংশীদারিত্ব


জলবায়ু পরিবর্তনের মুখোমুখি থাকা বিশ্বের অন্যতম সংবেদনশীল অঞ্চল হিন্দুকুশ হিমালয় অঞ্চলে জলবায়ু পদক্ষেপ ও অভিযোজন ক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সংস্থা (ইউএনএফসিসিসি) এবং ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ইন্টেগ্রেটেড মাউন্টেন ডেভেলপমেন্ট (আইসিমোড) একটি নতুন ত্রিবার্ষিক অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
এটি স্বাক্ষরিত হয় জার্মানির বন শহরে অনুষ্ঠিত জুন ইউএন ক্লাইমেট মিটিংস-এর সাইডলাইনে, যেখানে উপস্থিত ছিলেন ইউএন ক্লাইমেট চেঞ্জ-এর নির্বাহী সচিব সাইমন স্তিয়েল এবং আইসিমোড-এর মহাপরিচালক পেমা গ্যমতসো।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফ্রন্টলাইনে হিন্দুকুশ হিমালয়
হিমালয়ের বরফগলা, পানির অনিরাপত্তা, খাদ্য ঘাটতি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি এই অঞ্চলের কোটিকোটি মানুষের জীবন ও জীবিকা হুমকির মুখে ফেলেছে। এই নতুন অংশীদারিত্বের মাধ্যমে অঞ্চলটির সরকারগুলোকে তথ্যনির্ভর নীতিনির্ধারণ, বিনিয়োগ পরিকল্পনা, জলবায়ু অগ্রগতির নজরদারি এবং সহায়তা আহরণে সহায়তা দেওয়া হবে। এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করবে প্যারিস চুক্তির এনহান্সড ট্রানপারেন্সি ফ্রেমওয়ার্ক (ইটিএফ) এর অধীনে।
স্বচ্ছতা হবে টেকসই অভিযোজনের হাতিয়ার
সাইমন স্তিয়েল বলেন- “স্বচ্ছতা শুধু একটি রিপোর্টিং শর্ত নয়, এটি প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নের মেরুদণ্ড। এই অংশীদারিত্ব হিমালয়ের দেশগুলোকে কার্যকর জলবায়ু পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য, সক্ষমতা এবং অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে। আমরা একসাথে কাজ করে তথ্যকে বাস্তব অগ্রগতিতে রূপান্তর করতে পারি।”
আঞ্চলিক সহযোগিতায় নতুন দিগন্ত
পেমা গ্যমতসো বলেন- “আমাদের সদস্য দেশগুলোর জন্য এটি একটি বিরল সুযোগ— তারা এখন তাদের জলবায়ু অগ্রগতির প্রতিবেদন তৈরি করার পাশাপাশি চাহিদা নিরূপণ, ঘাটতি চিহ্নিত ও আন্তর্জাতিক সহায়তা আহ্বান করতে পারবে। হিমালয়ের ওপর তাপমাত্রা বৃদ্ধির যে ভয়াবহ প্রভাব পড়ছে, তা মোকাবিলায় এই ধরনের উদ্যোগ অত্যন্ত জরুরি।”
আইসিমোড দীর্ঘদিন ধরেই আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, চীন, ভারত, মিয়ানমার, নেপাল এবং পাকিস্তান-কে জলবায়ু নীতিনির্ধারণ ও বৈশ্বিক আলোচনায় প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে আসছে।
প্রকৃতিনির্ভর অভিযোজন ও পর্বত রক্ষা
এই অংশীদারিত্ব পর্বতের গুরুত্ব নিয়ে সম্প্রতি আয়োজিত একাধিক উচ্চপর্যায়ের সংলাপ ও ফোরামের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। যেখানে পর্বত অঞ্চলগুলোকে বাস্তুসংস্থান রক্ষা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং প্রকৃতিনির্ভর অভিযোজনের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।
এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে হিমালয় অঞ্চলে জলবায়ু স্বচ্ছতা জোরদার করে টেকসই, ন্যায্য ও কার্যকর অভিযোজন ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হবে - যা শুধু এই অঞ্চল নয়, বরং বৈশ্বিক জলবায়ু লক্ষ্য পূরণেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
