পজিটিভ রাজনীতির অঙ্গীকার থেকে নেতিবাচকতার পথে এনসিপি?


নতুন প্রজন্মের রাজনীতির হাওয়া বইয়ে দেওয়ার প্রত্যয়ে আত্মপ্রকাশ করেছিল এনসিপি। দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে নোংরা প্রোপাগান্ডা ও বিভাজনমূলক বক্তব্যের পরিবর্তে যুক্তি, তথ্য ও ইতিবাচক রাজনীতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তারা। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দলের কিছু নেতার কর্মকাণ্ড ও বক্তব্য সেই প্রতিশ্রুতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
গাজীপুরের কথিত “কলগার্ল” বা “হানিট্রাপ” ঘটনার পর যেভাবে একে চাঁদাবাজির লাইভ বলে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে, তা কেবল জনমনে বিভ্রান্তিই সৃষ্টি করেনি বরং পুরনো ধারার রাজনৈতিক বিদ্বেষকে নতুনভাবে উসকে দিয়েছে। আশ্চর্যের বিষয়, যেসব গতি ও কৌশলে অতীতে ক্ষমতাসীন দলের ভ্যারিফাইড পেজ থেকে তথ্য ছড়ানো হতো, ঠিক একই ধাঁচে এনসিপির কিছু নেতারা ব্যক্তিগত পেজ বা আইডি থেকেও ভুল বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার হতে দেখা গেছে।
রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে সমালোচনা, প্রতিবাদ এবং জবাবদিহিতা অপরিহার্য। বিএনপি, জামায়াত বা যেকোনো দলের নেতাকর্মীরা যদি অন্যায় বা ভুল করেন, তা সমালোচিত হবে এটাই গণতান্ত্রিক চর্চা। কিন্তু তথ্য বিকৃত করে, মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে, প্রতিপক্ষকে ‘ব্যাশিং’-এর মাধ্যমে হেয় করা, এমন রাজনীতি কেবল সংঘাত বাড়ায়, সহনশীলতা ধ্বংস করে।
এনসিপি যদি সত্যিই নিজেদের ‘বিকল্প রাজনীতি’র প্ল্যাটফর্ম দাবি করতে চায়, তবে তাদের নেতাকর্মীদের পুরনো ধারার রাজনৈতিক বিদ্বেষ, অপপ্রচার ও চরিত্রহননমূলক কৌশল ত্যাগ করতে হবে। জনগণ নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্য অপেক্ষা করছে, যেখানে ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধা, তথ্যভিত্তিক সমালোচনা এবং ইতিবাচক প্রতিযোগিতা থাকবে। কিন্তু সেই পরিবর্তন যদি কথায় সীমাবদ্ধ থাকে আর কাজে পুরনো পথেই হাঁটা হয়, তবে এনসিপি খুব দ্রুতই জনগণের আস্থা হারাবে, ঠিক যেমনটা পুরনো রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষেত্রে ঘটেছে।
