শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫
Natun Kagoj
শিরোনাম
  • তাওহিদ হৃদয়ের ফিফটি, কিন্তু দুইশ পেরিয়েই থামল বাংলাদেশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য: ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ১, আক্রান্ত ৬১৯ বিমানবন্দর এলাকায় আগুন: সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে সরানো হচ্ছে বিমান জুয়ার বিজ্ঞাপন চললেই ওয়েবসাইট বন্ধের নির্দেশনা কার্গো সেকশনে আগুন, শাহজালাল বিমানবন্দরের জরুরি ব্যবস্থা কার্যকর শহিদ মিনার এলাকায় শিক্ষকরা, আজ কালো পতাকা মিছিলের আয়োজন রাজধানীতে জুলাই সনদ সংঘর্ষে ৯০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের শহীদ ও আহত পরিবারকে অবহেলার অভিযোগ জুলাই সনদ অনুষ্ঠানে ব্যর্থতার শোচনীয় রেকর্ড ভাঙতে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ, অঙ্কনের অভিষেক চলমান শিক্ষক আন্দোলন নিয়ে বিএনপির প্রতিক্রিয়া
  • গাজায় ইসরায়েলের বর্বরতা আন্তর্জাতিক আইনের মৃত্যুবার্তা: ইবি উপাচার্য

    গাজায় ইসরায়েলের বর্বরতা আন্তর্জাতিক আইনের মৃত্যুবার্তা: ইবি উপাচার্য
    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ভিসি প্রফেসর ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কেবল গাজা ইস্যুতে সমালোচনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। তারা সন্ত্রাসী এবং কুখ্যাত আইনলঙ্ঘনকারী রাষ্ট্র ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এখনো কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারেনি। গাজা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক আইন আজ প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। কারণ, গাজায় ইসরায়েলের ব্যাপক ও অবিশ্বাস্যভাবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন (আইএইচএল) লঙ্ঘন পরবর্তী সময়ে এর প্রয়োগ এবং অস্তিত্ব নিয়েও প্রশ্ন তোলে। শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) তুরস্কের চাংকিরি কারাতেকিন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টরেট ভবনের কনফারেন্স হলে আয়োজিত ‘Gaza Conflict: A Dying Declaration of International Law’ (গাজা সংঘাত: আন্তর্জাতিক আইনের মৃত্যুকালীন জবানবন্দী) শীর্ষক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।

    এতে তিনি অক্টোবর মাসে গাজার সীমান্ত এলাকায় হামাসের আক্রমণের বৈধতা, গাজার ওপর ইসরায়েলের হামলা ও তার বৈশিষ্ট্য, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে ইসরায়েলের আচরণ বিশ্লেষণ করেন। আলোচনায় ভিসি বলেন, ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের এক চক্রান্তের ফলে ইসরায়েল অবৈধভাবে জন্মগ্রহণ করে। গাজা সংঘাতে ইসরায়েলের আচরণ আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের এক নজিরবিহীন লঙ্ঘন। ২০২৩ সাল থেকে চলমান সংঘাতে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের মূল ভিত্তি ধ্বংস করে দিয়েছে।

    আন্তর্জাতিক মানবিক আইন ও ফৌজদারি আইনের দৃষ্টিকোণ থেকে ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণকে বৈধ দাবি করে তিনি বলেন, গাজা উপত্যকা একটি দখলকৃত অঞ্চল এবং এর জনগণ আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের অধিকারী (বিখ্যাত ‘ফিলিস্তিনের প্রাচীর মামলা’-এ আইসিজে-র উপদেষ্টা মতামত অনুযায়ী)। হামাসের আক্রমণ দখলদার ইসরায়েলের কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে ছিল এবং তাই জাতিসংঘ সনদের ৫১ অনুচ্ছেদের অধীনে ‘আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ’ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। স্থায়ী দখলদারিত্ব আত্মরক্ষার অধিকারের চিরস্থায়ী চরিত্র তৈরি করে। এ প্রসঙ্গে ইসরায়েলের আচরণ মূল্যায়ন করতে গিয়ে তিনি বলেন, গাজার ওপর ইসরায়েলের হামলা আত্মরক্ষার অধিকারের প্রয়োগ নয়; বরং এটি দখলদার শক্তির আক্রমণ। আইসিজে’র মতামত অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক আইনে ইসরায়েলের ৫১ অনুচ্ছেদের অধিকার নেই। এটি জাতিসংঘ সনদের ২(৪) অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করে নতুন আক্রমণ হিসেবে বিবেচ্য।

    ভিসি আরো বলেন, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন (আইএইচএল) অনুসারে ইসরায়েলের হামলা নিষিদ্ধ শ্রেণির কর্মকাণ্ডের আওতায় পড়ে। এতে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে আক্রমণ, নির্বিচারে বোমাবর্ষণ, আবাসিক এলাকা, বাজার, দোকান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ধ্বংস, মানবিক সহায়তার ওপর বাধা আরোপ করে অনাহারকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার, জীবনধারণের প্রয়োজনীয় জিনিস ধ্বংস, মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণ, নির্যাতন, নারী নির্যাতন, বিশ্বাসঘাতক যুদ্ধ, সম্মিলিত শাস্তি, যুদ্ধবন্দীদের হত্যা, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি ও যুদ্ধে সন্ত্রাস—সবই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘনের শামিল। আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আইনের অধীনে গাজা আক্রমণে ইসরায়েল যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যা চালিয়েছে। এছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে গণহত্যা বন্ধে আইসিজের অস্থায়ী আদেশও লঙ্ঘন করেছে।

    অনুষ্ঠান শেষে সফর বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ভিসি বলেন, “আমি অত্যন্ত বিস্মিত হয়েছি যে বিশ্ববিদ্যালয়টি মাত্র ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েও এত অল্প সময়ে চমকপ্রদভাবে এগিয়ে গেছে। বিশাল ও অটল প্রচেষ্টার মাধ্যমে একটি বিশ্ববিদ্যালয় কীভাবে অগ্রসর হতে পারে, সেটির বাস্তব উদাহরণ এটি। শিক্ষা কার্যক্রমে ব্যাপক প্রসার ঘটানো ও বিদেশি শিক্ষার্থী আকৃষ্ট করায় আমি মুগ্ধ।”

    প্রসঙ্গত, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তুরস্কের চাংকিরি কারাতেকিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইরাসমাস+ KA171 আন্তর্জাতিক ক্রেডিট মবিলিটি প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণভিত্তিক সফরে অংশ নেন। ইরাসমাস সমন্বয় অফিস থেকে পাঠানো আমন্ত্রণপত্র অনুযায়ী, তিনি ১২ অক্টোবর থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত এ সফরে অংশগ্রহণ করেন।


    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    সর্বশেষ