বিগ ব্যাং: একঘন বিন্দু থেকে মহাবিশ্বের বিস্ফোরণ


বিগ ব্যাং (Big Bang) হলো মহাবিশ্বের উৎপত্তি সম্পর্কে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য এবং বৈজ্ঞানিকভাবে সমর্থিত তত্ত্ব। এই তত্ত্ব অনুযায়ী, আজ থেকে প্রায় ১৩.৮ বিলিয়ন বছর আগে, একটি অত্যন্ত ঘন এবং গরম একক বিন্দু (singularity) থেকে বিস্ফোরণ বা "বিগ ব্যাং" এর মাধ্যমে মহাবিশ্বের সৃষ্টি হয়।
বিগ ব্যাং তত্ত্বের মূল বিষয়গুলো:
1. শুরুতে সবকিছু ছিল একটি বিন্দুতে
মহাবিশ্বের সমস্ত পদার্থ, শক্তি, স্থান এবং সময় একটি অত্যন্ত ক্ষুদ্র, গরম ও ঘন বিন্দুতে কেন্দ্রীভূত ছিল।
2. বিস্ফোরণ নয়, সম্প্রসারণ
বিগ ব্যাং কোনো সাধারণ "বিস্ফোরণ" নয় বরং এটি একটি স্থান ও সময়ের দ্রুত সম্প্রসারণ ছিল। অর্থাৎ মহাবিশ্ব নিজেই প্রসারিত হতে শুরু করে।
3. সময় এবং স্থান সৃষ্টি হয় বিগ ব্যাং এর সময়েই
বিগ ব্যাং এর আগে "সময়" বা "স্থান" বলে কিছু ছিল না — সবকিছু শুরু হয় এই ঘটনার পরেই।
4. আজও মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হচ্ছে
বিজ্ঞানীরা দেখতে পান যে সব গ্যালাক্সি একে অপর থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। এটি প্রমাণ করে যে মহাবিশ্ব আজও প্রসারিত হচ্ছে, যেটি বিগ ব্যাং তত্ত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ।
বিগ ব্যাং তত্ত্বের প্রমাণ:
- রেডশিফট (Redshift): আলোকরশ্মির তরঙ্গদৈর্ঘ্য দীর্ঘ হওয়া — যা দূরবর্তী গ্যালাক্সিগুলো থেকে আসা আলোতে দেখা যায়। এটা দেখায় যে তারা আমাদের থেকে দূরে যাচ্ছে।
- কসমিক মাইক্রোওয়েভ ব্যাকগ্রাউন্ড (CMB): মহাবিশ্বের প্রাচীনতম আলো, যা বিগ ব্যাং-এর "পরের দিন" থেকে এসেছে এবং আজও সারা মহাবিশ্বে ছড়িয়ে আছে।
- হাইড্রোজেন ও হিলিয়ামের অনুপাত: মহাবিশ্বে এই হালকা উপাদানগুলোর যে পরিমাণ রয়েছে, তা কেবল বিগ ব্যাং তত্ত্ব দ্বারা সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করা যায়।
দৈএনকে/জে .আ
