আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেলেন ১৩ বছরের ওয়াসরিয়া খুশবু


বাংলাদেশের প্রতিভাবান তরুণী দাবাড়ু ওয়াসরিয়া খুশবু আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। মাত্র ১৩ বছর বয়সেই তিনি অর্জন করেছেন মহিলা ফিদে মাস্টার (WFM) খেতাব। বিশ্ব দাবা সংস্থা (FIDE) সম্প্রতি তার রেটিং ২১৪৫ হওয়ায় তাকে এই সম্মানসূচক টাইটেল প্রদান করেছে, যা তার ভবিষ্যতের জন্য বড় সম্ভাবনার সূচনা করে।
আন্তর্জাতিক দাবা ফেডারেশনের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো নারী দাবাড়ুর রেটিং ২১০০ ছাড়ালেই মহিলা ফিদে মাস্টার হওয়ার জন্য আবেদন করা যায়। খুশবু সেই শর্ত পূরণ করে নতুন এক সাফল্যের পালক দেশের দাবায় যুক্ত করলেন।
এই অর্জনের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ওয়াসরিয়া খুশবু বলেন, গত দুই বছর বাবার চাকরি না থাকায় দাবা প্রশিক্ষণ ভালোভাবে চালাতে পারেনি তাই আমার অর্জনও কম ছিলো। এই বছর আর্থিক সংকটের জন্য বাবাকে অনেক বলার পরও শ্রীলঙ্কায় জোন ৩.২ খেলতে যেতে পারিনি। তাই কাংখিত WIM অর্জন করা হয়নি। তাই বাংলাদেশ রেটিং দিয়ে নিজেকে এগোনোর চেষ্টা করেছি।
খুশবু আরও বলেন, ২,১০০ করলে WFM নিয়ম টা চালু হয়েছে তা আমার জানা ছিল। এটা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, নিউজ দেখে জানতে পারি আমার WFM হওয়ার সুযোগ আছে এবং আমরা দাবা ফেডারেশন এ যোগাযোগ করলে উনারা Fide তে আবেদন করেন।
তিনি আরও জানান, আমার এখন এই রেটিং ধরে রাখতে এবং সামনে আরও এগিয়ে যেতে আন্তর্জাতিক মানের একক প্রশিক্ষণ প্রয়োজন, মিনিমাম ৬ মাস। তাহলেই আমি WIM ও WGM এর পথে এগিয়ে যেতে পারবো। যা আন্তর্জাতিক খেলায় অংশ নিয়ে করতে হবে। ভালো প্রশিক্ষণ ছাড়া এই অর্জন ধরে রাখা বা এগিয়ে যাওয়া কষ্টকর।
খুশবু তার স্বপ্নের কথা জানিয়ে বলেন, আমি আগামী ১-২ বছরের মধ্যে ২৩৫০+ রেটিং অর্জন করতে চাই। লক্ষ্য বাংলাদেশ এর জন্য এশিয়ার মেয়েদের সর্বোচ্চ রেটিং নারী দাবাড়ু ও WGM অর্জন করা।
খুশবু ইতিমধ্যেই বয়সভিত্তিক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা প্রতিযোগিতায় নজর কেড়েছেন। তবে বাংলাদেশের নারী দাবায় এখনো পর্যন্ত কোনো মহিলা গ্র্যান্ডমাস্টার নেই। মহিলা আন্তর্জাতিক গ্র্যান্ডমাস্টারের তালিকায় আছেন রাণী হামিদ, শামীমা আখতার লিজা ও শারমিন শিরিন সুমী।
মহিলা আন্তর্জাতিক মাস্টারের নিচের ধাপ হলো ফিদে মাস্টার। দেশে এখনো মহিলা ফিদে মাস্টারের সংখ্যা দশও পেরোয়নি। ক্যান্ডিডেট মাস্টার আছেন কয়েকজন, তবে আন্তর্জাতিক দাবা অঙ্গনে সেটি আনুষ্ঠানিক খেতাব হিসেবে বিবেচিত হয় না।
