আমুর পালিত পুত্র ফয়সাল বরিশাল গণপূর্তের দুর্নীতির সম্রাট


রাজাপুরের এককালের ছাত্রলীগ নেতা, পরে আমির হোসেন আমুর পালিত পুত্র, আর আজ বরিশাল গণপূর্তের “দুর্নীতির সম্রাট” নাম ফয়সাল আলম। বলা চলে, এ কর্মকর্তা পদে নয়, আসনে বসেন টাকা গোনার মেশিনে। ঠিকাদারদের মুখে মুখে তাই রসিকতা,“আমুর মতো ফয়সালও টাকা গোনেন মেশিন দিয়ে।”
ঝালকাঠি থেকে বরিশাল,যেখানেই গেছেন, সেখানে যেন নতুন করে “টাকা ছাপাখানা” খুলেছেন। সদর মডেল মসজিদ থেকে ২৫০ শয্যার হাসপাতাল, এনএসআই ভবন থেকে পুলিশ লাইনের মেস,সবখানেই তার “স্বাক্ষর” একটাই: কোটি কোটি টাকা গায়েব! দুদকের মামলাও হয়েছিল, কিন্তু ‘আমুর ছেলে’ তকমা লাগানো থাকায় মামলা গিলে ফেলল সময়।
বরিশালে আসার পর তো একেবারে “অল-ইন-ওয়ান” সিন্ডিকেট বানালেন। তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মানিক লাল দাস, সহকারী প্রকৌশলী মামুন রাড়ি, আর অফিসের এসও-এসডি,সবাই একসাথে। নাম দেয়া যায়,গণপূর্ত লিমিটেড: সিইও ফয়সাল আলম।”
শেবাচিম হাসপাতালের ক্যান্সার ইউনিটে ভবন অর্ধেকও শেষ হয়নি, অথচ কাগজে-কলমে কোটি কোটি টাকার জেনারেটর, এসি, ক্যাবল, সাউন্ড সিস্টেম,এমনকি স্টেজ কার্টেইন পর্যন্ত বসানো শেষ। বাস্তবে মালামাল সাইটে ঢোকানোর জায়গা নেই, কিন্তু টাকায় টানাটানি নেই।
একইভাবে বরিশাল নভোথিয়েটার এখনো অর্ধেক দাঁড়িয়ে, অথচ বিল পরিশোধ পুরোটাই শেষ। অডিটোরিয়ামের সাউন্ড সিস্টেম থেকে শুরু করে ভিডিও ওয়াল পর্যন্ত সব কিছুরই “কাগজে উৎসব” হয়ে গেছে, যদিও দর্শক এখনো খালি মাঠ।
সরকারি অর্থ লোপাটের এই টাকায় ফয়সাল শুধু নিজের পকেট ভরেননি, রাজনীতিতেও ঢালাও বিনিয়োগ করেছেন।পালিত বাবা আমুর নির্বাচনী প্রচারণা, শাহজাহান ওমরের নৌকার খরচ, এমনকি ছাত্রলীগকে ২০ লাখ টাকা দিয়ে ছাত্র আন্দোলন দমানোর চেষ্টা,সবখানেই তার টাকার ছড়াছড়ি।
কিন্তু ২০২৪ সালের ৫ আগস্টে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর বেঁচে থাকার মহড়া দিলেন ভিন্ন নাটকে। একদিনে আওয়ামী পরিচয় উধাও, রাতারাতি তিনি হলেন বিএনপিপন্থী কর্মকর্তা! অবৈধ অর্থের জোরে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে আইইবি বরিশাল কমিটির ভাইস চেয়ারম্যানের চেয়ারে বসলেন। বদলির আদেশ হলেও স্থানীয় এক ঠিকাদারের টাকার জোরে আজও বহাল তবিয়তে,বরিশাল গণপূর্তের সিন্ডিকেটের সর্দার।”
প্রশ্ন উঠছে, এত কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি, এত অপকর্ম,তবুও কেন কর্তৃপক্ষ নিশ্চুপ? নাকি ফয়সাল আলমের টাকার মেশিনের সামনে সবারই মুখ বন্ধ?
একাধিকবার ফোন করেও ফয়সালের কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। যেন টাকার শব্দই তার একমাত্র ভাষা।
