বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫
Natun Kagoj
শিরোনাম
  • সরকারের ভুল সিদ্ধান্তে মাথাচাড়া দিতে পারে ফ্যাসিস্ট: তারেক রহমান জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করতে স্বচ্ছ ব্যাখ্যার আহ্বান এনসিপির সারা দেশের ১০২ জন এসি (ল্যান্ড) কে প্রত্যাহার করল সরকার অন্তর্বর্তী সরকারের এক্সিট পলিসি নির্ধারণের সময় এসেছে: ড. দেবপ্রিয় সাঁতারে নতুন ইতিহাস, ৩৭ বছর পর ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি বাংলাদেশিদের গাজীপুরে আসন বাড়াতে ও বাগেরহাটে কমাতে নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাব রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আত্মতুষ্টি নয়, প্রয়োজন কঠোর নজরদারি ও জবাবদিহিতা গণঅভ্যুত্থান দিবস ঘিরে নাশকতার শঙ্কা নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাজধানীতে প্রতি মাসে গড়ে ২০টির বেশি হত্যাকাণ্ড, চুরি-ডাকাতির ঘটনাও উদ্বেগজনক খালেদা জিয়া সুস্থ, তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন: আবদুল আউয়াল মিন্টু
  • আমাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলেছিলেন সৌদি রাষ্ট্রদূত: মডেল মেঘনা

    আমাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলেছিলেন সৌদি রাষ্ট্রদূত: মডেল মেঘনা
    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে প্রতারণার মামলায় জব্দ হওয়া পাসপোর্ট, মোবাইল ও ল্যাপটপ ফেরত চেয়ে আবারও আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন মডেল মেঘনা আলম।

    মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সকালে তিনি ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ সংক্রান্ত আবেদন জমা দেন। এর আগে একই মামলায় এসব সামগ্রী ফেরতের জন্য আদালতে আবেদন করেছিলেন তিনি।

    মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলামের আদালতে এসে মেঘনা বলেন, আমার সঙ্গে বিভিন্ন রাষ্ট্রদূতের প্রফেশনাল সম্পর্ক রয়েছে। সৌদি রাষ্ট্রদূত ইশা আমাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলেছিল। তার যথেষ্ট প্রমাণ আমার কাছে রয়েছে। আমি যথেষ্ট প্রমাণ দিতে পারব যে, আমাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলা হয়েছিল।

    এদিন সকালে রাজধানীর ধানমন্ডি থানার প্রতারণা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে করা মামলার শুনানি শেষে মেঘনা আলমের মোবাইল ফোন, ল্যাপটপে রাষ্ট্রবিরোধী কোনো উপাদান আছে কি না তা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত।

    নিজেই প্রেমের ফাঁদে পড়ার বিষয়ে মেঘনা আলমের বক্তব্যের পর বিচারক তার উদ্দেশে বলেন, এখন এটা আলোচনার বিষয় নয়। এরপর মেঘনা আলম বলেন, বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আমার ওপর নির্ভর করে। ছয়টি মহাদেশের ১০টি আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজ করেছি। এ ছাড়াও নারীদের অধিকার বিষয়ে অনেক কাজ করেছি। আমার ব্যবহৃত ম্যাকবুক, ল্যাপটপ, মোবাইল ও পাসপোর্ট ফেরত চাই।

    তখন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, তিনি নারীদের নিয়ে কী কাজ করেন তা মামলার এজাহারে স্পষ্ট। তিনি মূলত নারীদের দিয়ে ব্ল্যাকমেল করাতেন।

    তখন মেঘনা প্র‍তিবাদ জানিয়ে বলেন, আপনি রাষ্ট্রদূতকে অসম্মান করছেন। এরপর উভয়পক্ষ তর্কে জড়িয়ে পড়েন। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আমি নিরপরাধ।

    image-46321-1744600466

    উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত মডেল মেঘনা আলমের জব্দকৃত ম্যাকবুক, ল্যাপটপ, মোবাইলে রাষ্ট্রবিরোধী কোনো উপাদান আছে কি না তা তদন্তের নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে এসব ডিভাইসের মালিকানা যাচাই-বাছাই করে আগামী ৩১ আগস্ট তদন্তকারী কর্মকর্তাকে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।

    এদিন বেলা ১১টার দিকে নিজের পাসপোর্ট, মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ফেরত পেতে আদালতে হাজির হন মডেল মেঘনা আলম। এ সময়, মেঘনা হাতে খেজুরের কার্টন ও জায়নামাজ হাতে নিয়ে আদালতের কাঠগড়ায় ওঠেন। এর মিনিট দশেক পর এই মামলার শুনানি হয়।

    মেঘনা আলমের পক্ষে আইনজীবী মহিমা বাঁধন ও মহসিন রেজা আসামির জিনিসপত্র ফেরত চেয়ে শুনানি করেন। শুনানিতে আইনজীবীরা বলেন, মেঘনা আলম একজন লিডারশিপ ট্রেইনার। তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য প্রায়ই তাকে দেশের বাইরে যেতে হয়। এজন্য মেঘনা আলমের আইফোন-১৬ প্রো, ম্যাকবুক, অপো মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ খুব প্রয়োজন। এসব জিনিসপত্র ফেরতের জন্য প্রয়োজনীয়ও সব কাগজপত্র দেওয়া যাবে।

    এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. হারুন অর রশিদ এর বিরোধিতা করে শুনানিতে বলেন, আসামি বিভিন্ন বিদেশি রাষ্ট্রের কূটনীতিক/প্রতিনিধি ও দেশীয় ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন। এই মামলাটি চাঞ্চল্যকর। আসামির মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ দিয়ে কার কার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন তা জানা দরকার। আরও কার কার সঙ্গে ব্ল্যাকমেইল করেছেন, কাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলেছেন তা তদন্ত হয়ে আসা জরুরি। আসামির জিনিসপত্র ফেরতের জন্য রাষ্ট্রপক্ষ ঘোর আপত্তি জানাচ্ছে।

    মামলায় অভিযোগে বলা হয়, মেঘনা আলম, দেওয়ার সমিরসহ অজ্ঞাতনামা ২ থেকে ৩ জন একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা বিভিন্ন সুন্দরী মেয়েদের দিয়ে বাংলাদেশে কর্মরত বিভিন্ন বিদেশি রাষ্ট্রের কূটনীতিক/প্রতিনিধি ও দেশীয় ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করিয়ে কৌশলে বিভিন্ন উপায়ে অবৈধপন্থা অবলম্বনের মাধ্যমে তাদের সম্মানহানির ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করে আসছিলেন। দেওয়ান সমির কাওয়াই গ্রুপ নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সিইও এবং সানজানা ইন্টারন্যাশনাল নামক একটি ম্যানপাওয়ার প্রতিষ্ঠানের ফার্মের মালিক মর্মে জানা যায়।

    এর আগে, মিরআই ইন্টারন্যাশনাল ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড নামক একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল। বিভিন্ন আকর্ষণীয়, স্মার্ট মেয়েদের তার প্রতিষ্ঠানে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে নিয়োগ দিয়ে বিদেশি কূটনীতিক ও ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের কাছে সহজে যাতায়াত নিশ্চিত করা এবং দেওয়ান সমির তার ম্যানপাওয়ার ও অন্যান্য ব্যবসাকে অধিকতর লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড় করানোর লক্ষ্যে চক্রান্তের অংশ হিসেবে অসৎ উদ্দেশ্যে তার সহযোগী আসামিদের সহায়তায় বিভিন্ন কূটনীতিককে টার্গেট করে ব্ল্যাকমেইল করে বড় অংকের টাকা চাঁদা হিসেবে দাবি করেন।

    গত ১০ এপ্রিল বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের আটকাদেশ দিয়ে মডেল মেঘনাকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে তার ৩০ দিনের আটকাদেশ বাতিল হয়েছিল। গত ১৭ এপ্রিল ধানমন্ডি থানার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরবর্তীতে ২৮ এপ্রিল আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।


    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    সর্বশেষ