ভিএআর বিতর্ক কমাতে ফিফা উদ্ভাবন করছে নতুন কার্ড


ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) চালু হলেও ফুটবল ম্যাচে সিদ্ধান্তকে ঘিরে বিতর্ক কমেনি; বরং অনেক ক্ষেত্রে তা আরও বেড়েছে। প্রযুক্তির মাধ্যমে ন্যায্যতা আনার চেষ্টা করা হলেও দীর্ঘসূত্রতার কারণে অনেক ম্যাচের ছন্দ নষ্ট হচ্ছে।
এই সমস্যার সমাধানে ফিফা নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তারা মাঠে নিয়ে আসছে দুটি নতুন কার্ড — বেগুনি এবং নীল। নতুন কার্ডগুলো মূলত ম্যাচের ন্যায্যতা নিশ্চিত করা এবং বিতর্ক নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যবহার করা হবে। ফিফা আশা করছে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে দর্শক এবং খেলোয়াড় উভয়ের জন্য খেলা আরও স্বচ্ছ ও মসৃণ হবে।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফিফা পরীক্ষামূলকভাবে নতুন এই ব্যবস্থা চালু করছে, যার নাম ‘ফুটবল ভিডিও সাপোর্ট’ বা এফভিএস। টেনিসের মতো করে কোচদের হাতে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার সুযোগ দেয়া হবে এই প্রক্রিয়ায়। চিলিতে অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ এবং আরও কয়েকটি ছোট টুর্নামেন্টে ইতোমধ্যে এই কার্ড ব্যবস্থার ট্রায়াল চলছে।
ফিফার দাবি, এফভিএস হলো কম খরচে, স্থিতিশীল ও সহজ ব্যবহারের একটি প্রযুক্তিগত বিকল্প। এটি এমন লিগগুলোতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে, যেখানে ভিএআর প্রযুক্তি চালানো ব্যয়বহুল, যেমন ইতালির সিরি সি বা স্পেনের প্রিমেরা ফেদেরাসিওন। আগস্ট মাস থেকে ব্রাজিল ও ইতালির নারী লিগেও এর পরীক্ষা চলছে।
এই নতুন ব্যবস্থায় ম্যাচের শুরুতে প্রতিটি দলের কোচকে দেয়া হবে দুটি কার্ড—একটি বেগুনি,অন্যটি নীল । কোচ ম্যাচে সর্বোচ্চ দুইবার রেফারির সিদ্ধান্ত পর্যালোচনার অনুরোধ জানাতে পারবেন। অনুরোধের পর রেফারির সিদ্ধান্ত যদি বদলে যায়, তবে সেই কার্ডটি আবার ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু যদি সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিত থাকে, তাহলে কোচকে সেই কার্ডটি হারাতে হবে।
কার্ড ব্যবহারের পদ্ধতিটিও বেশ ভিন্ন। কোচকে আঙুল ঘুরিয়ে একটি বৃত্তের মতো ইশারা দিতে হবে, যা দেখে চতুর্থ রেফারি বুঝবেন তিনি ‘রিভিউ’ চাইছেন। এরপর কোচ তার কার্ডটি হস্তান্তর করবেন এবং ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই আনুষ্ঠানিক পর্যালোচনা শুরু হবে।
ভিএআর ব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রতা, ব্যয় এবং বিভ্রান্তি নিয়ে রেফারি ও খেলোয়াড়দের মধ্যে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ রয়েছে। প্রিমিয়ার লিগের সাবেক রেফারি গ্রাহাম স্কট সম্প্রতি বলেছেন, ভিএআরের অংশ হিসেবে কাজ করা পুরোপুরি আনন্দহীন। তিনি বলেন,‘মাঠের বাইরে থেকে আপনি কিছুই নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না... এটা একদমই আনন্দদায়ক নয়।’
খেলোয়াড়দের কাছেও প্রযুক্তিটি জনপ্রিয় নয়, কারণ ভিএআরের কারণে আনন্দঘন মুহূর্তগুলো অনেক সময় হারিয়ে যায়। তাই ফিফা এখন এমন এক বিকল্প খুঁজছে, যা একদিকে প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে, অন্যদিকে খেলার ছন্দও নষ্ট করবে না।
