ফিলিস্তিনের শিশু ও সাধারণ মানুষ রক্ষার জন্য উয়েফার বার্তা


ইতালির উডিনের ব্লুনার্জি স্টেডিয়ামে গতকাল অনুষ্ঠিত উয়েফা সুপার কাপের ফাইনালে প্যারিস সাঁ-জার্মাঁ (পিএসজি) টটেনহাম হটস্পারের মুখোমুখি হয়। নিয়মিত সময় ২-২ গোলে শেষ হওয়ার পর টাইব্রেকারে ৪-৩ ব্যবধানে জিতে শিরোপা জিতেছে ফরাসি ক্লাবটি। তবে ম্যাচের আগে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তাও নজর কেড়েছে—উয়েফা মাঠে যুদ্ধবিরোধী ব্যানার প্রদর্শন করে, যেখানে লেখা ছিল, 'স্টপ কিলিং চিলড্রেন' এবং 'স্টপ কিলিং সিভিলিয়ানস'। দুই দলের খেলোয়াড়েরা মাঠে সারিবদ্ধ হওয়ার পর তাদের সামনে এই বার্তাগুলো প্রদর্শন করা হয়।
ইউরোপিয়ান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফা এ আয়োজনে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার দুই শরণার্থী শিশুকেও নিয়ে আসে। পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে উয়েফা সভাপতি আলেক্সান্দার সেফেরিনের পাশে সাদা টি-শার্ট পরা ওই দুই শিশু দাঁড়িয়ে ছিল। ব্যানার প্রদর্শনের ছবি উয়েফার এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়, 'বার্তাটি জোরালো ও পরিষ্কার'।
উয়েফার শিশুদের জন্য ফাউন্ডেশন জানিয়েছিল, শুধু ফিলিস্তিন নয়, বিশ্বের যেকোনো সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলের যুদ্ধের শিকার শিশুদের পাশে দাঁড়াতেই এই উদ্যোগ। তবে গত মঙ্গলবারের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গাজার শিশুদের জন্য বিশেষ মানবিক সহায়তার কথা উল্লেখ করা হয়। পদক বিতরণে উপস্থিত ছিল ১২ বছর বয়সী তালা, যিনি গাজা থেকে চিকিৎসার জন্য মিলানে এসেছেন, এবং ৯ বছর বয়সী মোহাম্মদ, যিনি বিমান হামলায় বাবা-মাকে হারিয়েছেন।
উয়েফা দীর্ঘদিন ধরে আফগানিস্তান, লেবানন, সুদান, সিরিয়া, ইয়েমেন ও ইউক্রেনসহ বিভিন্ন সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলের শিশুদের সহায়তায় প্রকল্প চালিয়ে আসছে। সুপার কাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আফগানিস্তান, ইরাক, নাইজেরিয়া, ফিলিস্তিন ও ইউক্রেনের শিশুদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে ব্যানারে নির্দিষ্ট কোনো দেশ বা অঞ্চল উল্লেখ করা হয়নি, যদিও উয়েফার নীতিমালায় ম্যাচের আগে, চলাকালে বা পরে রাজনৈতিক বার্তা প্রদর্শন নিষিদ্ধ।
বিতর্ক শুরু হয় লিভারপুলের মিসরীয় তারকা মোহাম্মদ সালাহর মন্তব্যের পর। গত সপ্তাহে ইসরাইলি হামলায় নিহত হন দক্ষিণ গাজা উপত্যকার সাবেক ফুটবলার সুলেইমান আল-ওবেইদ, যিনি ‘ফিলিস্তিনি পেলে’ নামে পরিচিত ছিলেন। ৪১ বছর বয়সী এ স্ট্রাইকার জাতীয় দলের হয়ে ২৪ ম্যাচে দুটি গোলসহ ক্যারিয়ারে শতাধিক গোল করেছেন। উয়েফা এক্স অ্যাকাউন্টে তাঁর স্মরণে পোস্ট দেয়—'বিদায় সুলেইমান আল-ওবেইদ, একজন প্রতিভাবান খেলোয়াড়, যিনি দুঃসময়েও শিশুদের আশা জুগিয়েছেন।' তবে পোস্টে তার মৃত্যুর কারণ বা ইসরাইলি হামলার প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়নি।
সালাহ পোস্টটি শেয়ার করে উয়েফাকে উদ্দেশ করে লিখেছেন, 'আপনারা কি বলতে পারেন, তিনি কীভাবে, কোথায় এবং কেন মারা গেছেন?'—যা সংস্থাটির ওপর সরাসরি প্রশ্নচিহ্ন তোলে।
