সোমবার, ০৪ অগাস্ট ২০২৫
Natun Kagoj
শিরোনাম

গাজায় দুর্ভিক্ষের ছবি: ইসরায়েলি জিম্মিদের ভিডিও ঘিরে তোলপাড়

গাজায় দুর্ভিক্ষের ছবি: ইসরায়েলি জিম্মিদের ভিডিও ঘিরে তোলপাড়
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

গাজার ভয়াবহ মানবিক সংকটের এক করুণ চিত্র উঠে এসেছে হামাস প্রকাশিত দুই ইসরায়েলি জিম্মির ভিডিওতে। ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, খাদ্য সংকটে জিম্মিরা এতটাই দুর্বল হয়ে পড়েছেন যে তারা স্বাভাবিকভাবে হাঁটতেও পারছেন না, এমনকি দাঁড়িয়ে থাকতে হিমশিম খাচ্ছেন। গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এই ভিডিওগুলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি কাড়ে এবং পশ্চিমা বিশ্বে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়।

যেখানে গাজার অন্তত ১৭৫ জন দুর্ভিক্ষে মারা গেছেন, তার অনেকটাই অবহেলিত থেকেছে পশ্চিমা বিশ্বে। অথচ এই দুই জিম্মির দুর্দশা দেখে হঠাৎ করে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ফ্রান্সসহ পশ্চিমা নেতারা।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেছেন, ভিডিও প্রকাশ ‘বীভৎস’ এবং এটি প্রচারণার একটি অসুস্থ কৌশল। জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিক ম্যার্ৎস দাবি করেছেন, যুদ্ধবিরতির জন্য জিম্মিদের মুক্তিই হতে হবে প্রধান শর্ত। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বলেছেন, সব জিম্মির মুক্তি ও গাজায় ত্রাণ সরবরাহ নিশ্চিত করতে ফ্রান্স নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

প্রথম ভিডিওতে ব্রাসলাভস্কি নামের এক জিম্মিকে দেখা যায় কান্নায় ভেঙে পড়তে। তিনি বলেন, আজ শুধু তিনটি ফালাফেল (ছোলা বা ডাবরির চপ) খেয়েছি, খাবার-পানি শেষ হয়ে গেছে, দাঁড়ানোরও শক্তি নেই।

দ্বিতীয় ভিডিওতে ডেভিড নামের আরেক জিম্মিকে দেখা যায় নিজের কবর খুঁড়তে। তিনি বলেন, আমি কয়েক দিন ধরে অভুক্ত, তেমন পানি পাইনি।

ভিডিও দুটি প্রকাশের পর ইসরায়েলে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। জিম্মিদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু তাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, সব জিম্মিকে ফেরাতে প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। তিনি রেড ক্রসকে অনুরোধ করেছেন, যেন দ্রুত জিম্মিদের কাছে খাবার ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছানো হয়।

রেড ক্রস জানিয়েছে, তারা নেতানিয়াহুর অনুরোধে সাড়া দিয়েছে এবং হামাসকে আহ্বান জানিয়েছে জিম্মিদের কাছে পৌঁছাতে দিতে। প্রকাশিত ভিডিওগুলো দেখে তারা মর্মাহত বলেও জানিয়েছে।

হামাসের সামরিক শাখা কাসেম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু ওবেইদা জানান, জিম্মিরা যা খায়, গাজার সাধারণ মানুষও তা-ই খায়। তারা বিশেষ কোনো সুবিধা পাচ্ছে না। তিনি বলেন, যদি জিম্মিদের কাছে ত্রাণ পৌঁছাতে হয়, তবে গাজার সব এলাকায় মানবিক করিডোর খুলতে হবে এবং ত্রাণ বিতরণের সময় কোনো হামলা চলবে না।

জাতিসংঘ বলছে, গাজায় দুর্ভিক্ষের সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। গাজায় শিশুদের বড় অংশ অপুষ্টিতে ভুগছে এবং মানবিক সহায়তার ঘাটতি মারাত্মকভাবে বেড়েছে।

পশ্চিমা মিত্ররা এই দুর্ভিক্ষের জন্য ইসরায়েলের অবরোধকে দায়ী করছে, আর ইসরায়েল বলছে—এর জন্য দায়ী একমাত্র হামাস।


গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন