পরমাণু প্রযুক্তিতে ইরানের অগ্রগতি অব্যাহত: আব্বাস আরাগচি


ইরান এখনো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের সক্ষমতা ধরে রেখেছে—এমনটি জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিনান্সিয়াল টাইমস (এফটি)-কে দেওয়া এক সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, চলমান যুদ্ধ পরিস্থিতি পরমাণু আলোচনার পথকে আরও সংকীর্ণ করে তুলেছে। তার মতে, রাজনৈতিক উত্তেজনা ও অস্থিতিশীলতা ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ঘিরে সম্ভাব্য সমঝোতার সুযোগ কমিয়ে দিয়েছে।
সাক্ষাৎকারে আরাগচি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় ফেরার আগে তেহরান নতুন কিছু শর্ত আরোপ করতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, 'আমরা স্বাভাবিক ব্যবসায় ফিরতে পারি না, বিশেষ করে যখন ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধ চলাকালে ওয়াশিংটনও তাতে জড়িত ছিল। আলোচনা চলাকালীন সময়ে আমাদের ওপর হামলা চালানো যুক্তরাষ্ট্রকে ব্যাখ্যা করতেই হবে এবং প্রতিশ্রুতি দিতে হবে যে, এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না।'
এর আগে গত মাসে ইরান ঘোষণা করেছিল, আলোচনায় বসতে হলে যুক্তরাষ্ট্রকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এবারের সাক্ষাৎকারে আরাগচি সেই অবস্থান আরও জোরালো করেছেন। তিনি বলেন, আলোচনার পুনরায় শুরু হলে সেখানে অর্থনৈতিক ক্ষতিপূরণের বিষয়টি থাকতে হবে এবং আলোচনার সময় ইরানের ওপর কোনো ধরনের সামরিক হামলা চালানো যাবে না।
তিনি জানান, যুদ্ধকালীন সময়ে এবং পরবর্তীকালে তিনি ও মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফ বার্তা বিনিময় করেছেন। উভয় পক্ষ ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অচলাবস্থা সমাধানের বিষয়ে ‘উপযুক্ত সমাধান’-এর পথ খুঁজছিল।
আরাগচি বলেন, উইটকফ তাকে আশ্বস্ত করেছেন যে আলোচনার সুযোগ এখনো রয়েছে এবং তিনি তেহরানকে ফের আলোচনা শুরু করার প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে ইরান তাতে শর্ত জুড়ে দিচ্ছে।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি প্রসঙ্গে আরাগচি জানান, ইসফাহানের কাছে তৃতীয় ও নতুন একটি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র প্রস্তুত অবস্থায় ছিল। যদিও সেটি এখনো চালু হয়নি, তবে আক্রমণের আগেই কেন্দ্রটি প্রস্তুত করা হয়েছিল বলে তার ধারণা।
তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক যুদ্ধ ইরানি নেতৃত্বের ভেতরে আলোচনা বিরোধী মনোভাবকে উসকে দিয়েছে, যা ভবিষ্যতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
