জেল সুপারের 'গোপন সাম্রাজ্য': ৫ কোটি টাকার ভবন!


মাগুরা জেলা কারাগারের জেল সুপার মহিউদ্দিন হায়দারের বিরুদ্ধে ‘অবৈধ সম্পদের পাহাড়’ তৈরির অভিযোগ ঘিরে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। ৩১ জুলাই দৈনিক আজকালের সংবাদে প্রকাশিত একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে আসে তার বিপুল সম্পদের চিত্র, যা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।
সূত্র জানায়, খুলনার অভিজাত এলাকায় জেল সুপার মহিউদ্দিন হায়দার যে বিলাসবহুল পাঁচতলা ভবন নির্মাণ করেছেন, তার আনুমানিক ব্যয় ধরা হচ্ছে ৪ থেকে ৫ কোটি টাকা। অথচ সরকারি হিসাব অনুযায়ী তার সর্বমোট আয় ও ঋণ মিলে মাত্র ৬০ লাখ টাকা।
জেল সুপার মহিউদ্দিন হায়দারের অবৈধ সম্পদের মধ্যে রয়েছে জিপিএফ সঞ্চয়: ১৫ লাখ টাকা, ইসলামী ব্যাংক ফরিদপুর শাখা (ঋণ): ২ লাখ, ইসলামী ব্যাংক খুলনা শাখা (হোম লোন): ৪০ লাখ, সোনালী ব্যাংক বাগেরহাট শাখা (ঋণ): ৩ লাখ।
এই অর্থে এত বড় ও বিলাসবহুল ভবন নির্মাণ কীভাবে সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও তিনি দাবি করেছেন, গরু ও মুরগির খামার থেকে আয় করেছেন, কিন্তু স্থানীয়ভাবে এসব খামারের কোনো কার্যকর প্রমাণ মেলেনি।
আরও বিস্ময়কর তথ্য হলো, মহিউদ্দিন হায়দার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তোলা একটি ছবি ব্যবহার করে নিজের অবস্থানকে রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। যদিও তিনি এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, তবে ছবিটি ইতোমধ্যেই বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) দেওয়া তথ্যে তিনি দাবি করেছেন, দুদক আমার হিসাব দেখে সন্তুষ্ট। কিন্তু এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দুদক কিংবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি, যা জনমনে আরও সন্দেহ সৃষ্টি করছে।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি ক্ষমতাসীন সরকারের সময় গুরুত্বপূর্ণ ও আর্থিকভাবে লাভজনক জেলগুলোতে পোস্টিং পেতেন। যদিও তিনি তার কর্মস্থলের তালিকায় বরগুনা, বাগেরহাট, মেহেরপুর, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহের কথা বললেও চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও বগুড়ায় দায়িত্বকাল সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি।
