রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫
Natun Kagoj
শিরোনাম
  • আড়াই ঘণ্টার বৈঠক শেষে কোনো সিদ্ধান্ত নয়, কোচ-প্রস্তুতি নিয়েই রয়ে গেল প্রশ্ন দ্বিতীয় ম্যাচেও কি 'পরীক্ষাগার' বানানো হবে বাংলাদেশ দলকে? হত্যাকাণ্ড ও নৈরাজ্যে জড়িতদের সরকার প্রশ্রয় দিচ্ছে: তারেক রহমান নবায়নযোগ্য জ্বালানি গ্রিডে অন্তর্ভুক্ত না হওয়া পর্যন্ত থামবো না: আহসান খান পুরান ঢাকার নৃশংস হত্যাকাণ্ডে বিচারহীনতার প্রতিচ্ছবি ও রাজনীতির সংকট বিশ্বরেকর্ড গড়ল জাপান, ১ সেকেন্ডে ডাউনলোড করা যাবে সব ভিডিও চাঁদাবাজি নয়, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে খুন হন সোহাগ: পুলিশ সরকার মব জাস্টিস বরদাশত করে না: রিজওয়ানা হাসান রাজসাক্ষী হিসেবে সহায়তার শর্তে চৌধুরী মামুনকে ক্ষমা: ট্রাইব্যুনাল সারা দেশে আধিপত্য বিস্তারকারীদের তালিকা তৈরি হচ্ছে: আইজিপি
  • তিস্তা ও অন্যান্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি: প্রস্তুতি ও সচেতনতা জরুরি

    তিস্তা ও অন্যান্য নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি: প্রস্তুতি ও সচেতনতা জরুরি
    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    বাংলাদেশের নদনির্ভর ভৌগোলিক বাস্তবতায় বর্ষা মৌসুমে বন্যা একটি নিয়মিত ও চিরচেনা চ্যালেঞ্জ। এই প্রেক্ষাপটে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি ও সম্ভাব্য প্লাবনের আশঙ্কা নতুন কিছু নয়, তবে প্রতিবারের মতো এবারও তা নিয়ে দুশ্চিন্তা ও প্রস্তুতির ঘাটতি চোখে পড়ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিস্তা নদীর পানি সতর্কসীমায় পৌঁছাতে পারে এবং রংপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চল সাময়িকভাবে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

    এছাড়াও ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি সমতলও বাড়ছে, যদিও এখনো বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। সিলেট অঞ্চলের কুশিয়ারা নদীও একই রকমভাবে পানি বাড়ছে, যার ফলে সেখানে ছোট পরিসরের বন্যা দেখা দিতে পারে। গঙ্গা-পদ্মার পানির প্রবণতা ইঙ্গিত দিচ্ছে যে আগামী কয়েকদিন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলেও জলাবদ্ধতার শঙ্কা বাড়বে।

    এই বাস্তবতায় কয়েকটি দিক গভীরভাবে ভাবনার দাবি রাখে। প্রথমত, যেহেতু এইসব তথ্য অগ্রিম জানা যাচ্ছে, তাই স্থানীয় প্রশাসন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর এবং ত্রাণ সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় এখনই শুরু হওয়া উচিত। বিশেষ করে তিস্তা অববাহিকার মানুষদের দ্রুত সরিয়ে নেওয়ার জন্য আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা জরুরি। দ্বিতীয়ত, স্থানীয় কৃষক ও দিনমজুরদের জন্য বিকল্প জীবিকা ও ত্রাণ ব্যবস্থাও আগে থেকেই পরিকল্পিত হওয়া দরকার, যাতে তারা অনিশ্চয়তার মধ্যে না পড়ে।

    তৃতীয়ত, নদ-নদীর অনিয়মিত পানি প্রবাহ, বিশেষ করে তিস্তার মতো আন্তঃসীমান্ত নদীর ক্ষেত্রে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পানি বণ্টন সংক্রান্ত আলোচনার স্থবিরতা বারবার দেশের ভুগোলিক ঝুঁকিকে আরও বাড়িয়ে তোলে। তাই কূটনৈতিক স্তরেও এই ইস্যুগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

    সবচেয়ে বড় কথা, প্রতিবার বন্যা হলে তা যেন 'অপ্রত্যাশিত' না মনে হয়। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৃষ্টিপাতের প্রকৃতি ও নদীর গতিপথে পরিবর্তন এসেছে, যা ভবিষ্যতে আরও তীব্র হবে। এই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের দুর্যোগ প্রস্তুতি, নদী ব্যবস্থাপনা এবং জলবায়ু অভিযোজন পরিকল্পনাও যুগোপযোগী করতে হবে।

    বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রয়োজন স্থানীয় জনগণকে সচেতন করা, সময়মতো সতর্ক সংকেত পৌঁছে দেওয়া, এবং সবচেয়ে দুর্বল জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়ানো। বন্যা প্রতিরোধ নয়, বরং বন্যার প্রভাব কমিয়ে আনা ও ক্ষয়ক্ষতি নিয়ন্ত্রণ করাই আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। আর এই লক্ষ্য অর্জনে চাই সমন্বিত, দ্রুত এবং বাস্তবমুখী পদক্ষেপ। এখনই সময় প্রস্তুতি নেওয়ার, কারণ পানি বাড়ছে—সঙ্গে বাড়ছে ঝুঁকিও।


    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    সর্বশেষ