দ্বিতীয় ম্যাচেও কি 'পরীক্ষাগার' বানানো হবে বাংলাদেশ দলকে?


শ্রীলঙ্কা সফরে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল যেন ছন্দহীনতা, আত্মবিশ্বাসহীনতা আর ভুল সিদ্ধান্তের চক্রে বন্দী। শুধু প্রথম টি-টোয়েন্টি নয়, টেস্ট সিরিজের পর থেকেই টাইগারদের পারফরম্যান্স ক্রমেই নিম্নমুখী। একজন ব্যাটার বা বোলারকেও বলা যাচ্ছে না যে তিনি ছন্দে আছেন। গোটা দলই যেন ফর্মহীন এক যাত্রাপথে।
বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি সিরিজে দলের একাদশ গঠন, ব্যাটিং অর্ডার এবং খেলোয়াড় বাছাই নিয়ে যেভাবে সমালোচনা হচ্ছে। তাতে প্রশ্ন উঠেছে, দল নির্বাচনের ক্ষেত্রে কি বাস্তবতা বা ফর্ম নয়, বরং চলছে অদূরদর্শী 'পরীক্ষা-নিরীক্ষা'?
ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিকভাবে রান করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছেন নাইম শেখ। টপ অর্ডারে খেলার অভ্যাস ও দক্ষতা থাকলেও তাকে নামানো হয়েছে চারে। অথচ সেই পজিশনে ব্যর্থ হয়েছেন লিটন দাস, যিনি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বহুদিন ধরেই রান খরায় ভুগছেন। ১১ বলে ৫ রান করে আউট হয়ে তিনি ব্যাটিং মোমেন্টামও নষ্ট করেছেন।
নাইম শেখ যদিও তার চারে নামার চাপ সয়ে ২৯ বলে ৩২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন কিন্তু স্বভাবসিদ্ধ জায়গায় সুযোগ পেলে হয়তো অবদান আরও বড় হতো। একইভাবে শামীম হোসেন পাটোয়ারীকেও খেলানো হয়েছে সাত নম্বরে, যেখানে তিনি ব্যাট করার সুযোগই পেয়েছেন মাত্র ৫ বল! অথচ সেই ৫ বলেই ২ ছক্কায় করেছেন ১৪ রান।
ব্যাট হাতে সম্প্রতি বেশ সফল জাকের আলী অনিককে একাদশে রাখা হয়নি। আরেকদিকে অধিনায়ক লিটন দাস ফর্মহীন হয়েও থাকছেন ব্যাটিংয়ের মূল দায়িত্বে। আবার সাইফউদ্দীন, যিনি ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই অবদান রাখতে সক্ষম, তাকে শুধু বল করার সুযোগ দিয়েই ক্ষান্ত টিম ম্যানেজমেন্ট। প্রশ্ন হচ্ছে, দল যদি ভারসাম্যহীন হয়, তবে এর দায় খেলোয়াড়ের না, পরিকল্পনার?
অসামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যাটিং লাইনআপ আর অকার্যকর ব্যাটিং পজিশনের কারণে হাতে ৫ উইকেট রেখেও বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে করতে পেরেছে মাত্র ১৫৩ রান। যা প্রতিপক্ষের জন্য পর্যাপ্ত চ্যালেঞ্জ ছিল না।
ভক্তদের এখন একটাই প্রশ্ন, দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে (১৩ জুলাই) কি সেই একই ভুল পথে হাঁটবে টিম ম্যানেজমেন্ট? নাকি এই ম্যাচে বাস্তববাদী, পারফরম্যান্সনির্ভর সিদ্ধান্ত দেখা যাবে? নাইম শেখ ও শামীম হোসেনকে কি এবার উপযুক্ত পজিশনে খেলানো হবে? জাকের আলীর মতো ফর্মে থাকা ক্রিকেটারকে কি এবার দেখা যাবে একাদশে?
সব প্রশ্নের উত্তর মিলবে মাঠে। তবে এটুকু স্পষ্ট, ফ্যানদের ধৈর্যের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। ভুল পরিকল্পনায় আরেকটি ম্যাচ হারলে কেবল সিরিজ নয়, হারাবে সমর্থকদের আস্থা, হারাবে দলের আত্মবিশ্বাস।
