দুর্ধর্ষ পিএসজি, রিয়ালকে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা পাকা


ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি) দেখাল দাপট, আর স্বপ্নভঙ্গ হলো রিয়াল মাদ্রিদের। মেটলাইফ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে কোনো প্রতিরোধই গড়তে পারেনি রিয়াল।
পিএসজি রিয়ালকে হারিয়েছে একপ্রকার একচেটিয়া আধিপত্য দেখিয়ে—৪-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে।
ম্যাচের শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রণ নেয় লুইস এনরিকের শিষ্যরা। রিয়াল কিছুটা জমে উঠলেও প্রথমার্ধেই ম্যাচের রাশ চলে যায় প্যারিসের ক্লাবটির হাতে। দ্বিতীয়ার্ধে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে তারা। রিয়াল মাদ্রিদকে কার্যত কোণঠাসা করে ফেলে।
এ জয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে জায়গা করে নিল পিএসজি, যেখানে তারা লড়বে শিরোপার জন্য। অন্যদিকে, রিয়ালের শিরোপা জয়ের স্বপ্ন থেমে গেল সেমিফাইনালেই।
রিয়ালের মতো অভিজ্ঞ ও ঐতিহ্যবাহী ক্লাবের এমন করুণ পরাজয় ফুটবল বিশ্বে বিস্ময় জাগিয়েছে। তবে পিএসজির আধিপত্যপূর্ণ পারফরম্যান্স ছিল এক কথায় অনবদ্য—রীতিমতো ক্লাসে রূপ নিয়েছে তাদের ফুটবল।
ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে একচেটিয়া আধিপত্য দেখিয়ে ৪-০ গোলের বড় জয় তুলে নিয়েছে প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি)। এই জয়ের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠল লুইস এনরিকের দল, যেখানে আগামী রোববার (১৩ জুলাই) তারা মুখোমুখি হবে চেলসির।
মেটলাইফ স্টেডিয়ামে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিল পিএসজি। ম্যাচের মাত্র ২৫ মিনিটের মধ্যেই তিন গোল হজম করে রিয়াল মাদ্রিদ, যা কার্যত ম্যাচের গতিপথ ঠিক করে দেয়।
খেলার ষষ্ঠ মিনিটেই পিএসজিকে এগিয়ে দেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার ফ্যাবিয়ান রুইজ। ওসমান দেম্বেলের পাস থেকে গোল করে দলকে এনে দেন স্বস্তির শুরু। মাত্র তিন মিনিট পর ফের ব্যবধান বাড়ান দেম্বেলেই। রিয়াল ডিফেন্ডার রুডিগারের ভুল পাস ধরে গোলরক্ষক কোর্তোয়ার একা মুখোমুখি হয়ে সহজেই বল জালে পাঠান ফরাসি উইঙ্গার।
রিয়াল মাদ্রিদ গোলরক্ষক কোর্তোয়া কিছু সময় প্রতিরোধ গড়লেও তা যথেষ্ট ছিল না। ২৪তম মিনিটে আবারও গোল করেন রুইজ, এবার পাস আসেছিল আশরাফ হাকিমির পা থেকে। প্রথমার্ধেই ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় পিএসজি, যা কার্যত রিয়ালের বিদায়ের ঘণ্টা বাজিয়ে দেয়।
দ্বিতীয়ার্ধে রিয়াল মাদ্রিদ চেষ্টা করলেও গোলের মুখে তেমন কোনো হুমকি তৈরি করতে পারেনি। বরং ম্যাচের ৮৭তম মিনিটে চতুর্থ গোলটি করে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে দেন পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড গনকালো রামোস। গোলের পর সেলিব্রেশনে দেখা যায় সতীর্থ দিয়োগো জোটার প্রতি শ্রদ্ধা—গত ৩ জুলাই এক গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান জোটা ও তার ভাই আন্দ্রে সিলভা, সেই স্মরণেই রামোসের ট্রিবিউট।
শেষ পর্যন্ত আর কোনো গোল না হলে ৪-০ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে পিএসজি। সাবেক দল রিয়ালের বিপক্ষে নিজের প্রথম ম্যাচে ছিলেন নির্ভরহীন কিলিয়ান এমবাপ্পে। অন্যদিকে, ভিনিসিউস জুনিয়রও ছিলেন বেশ নিষ্প্রভ—নিজের সেরা ছায়াটুকুও যেন খুঁজে পাননি মাঠে।
এই জয়ে পিএসজি নিশ্চিত করেছে ফাইনালে ওঠা। আর রিয়ালের জন্য এটি ছিল এক বড় ধাক্কা—দলের তারকারা যেমন ছন্দহীন ছিলেন, তেমনি রক্ষণভাগও ছিল পুরোপুরি বিপর্যস্ত।
