ভোলায় বিএনপি-বিজেপি সংঘর্ষ: বিএনপির রাজনৈতিক উত্তেজনা ও শান্তি ভঙ্গের দায়

ভোলার নতুন বাজারে শনিবার (১ নভেম্বর) ঘটানো বিএনপি-বিজেপি সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হওয়ার ঘটনা রাজনৈতিক অস্থিরতার একটি উদ্বেগজনক উদাহরণ। সকাল থেকে ভোলা জেলা বিএনপি ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) অফিসের সামনে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ও সমাবেশ চলছিল। পরিস্থিতি যখন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, তখন উভয় পক্ষের নেতাকর্মীরা মিছিল ও সমাবেশের নামে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপে জড়িয়ে পড়েন।
জেলার ইতিহাস বিবেচনা করলে দেখা যায়, বিএনপির স্থানীয় নেতাদের মধ্যে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে উত্তেজনা সৃষ্টি হওয়া নতুন ঘটনা নয়। কিন্তু এই ধরনের সংঘর্ষ শুধু রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতাকেই প্রভাবিত করে না; এতে সাধারণ নাগরিক, ব্যবসা-বাণিজ্য ও স্থানীয় শান্তি-শৃঙ্খলাও বিঘ্নিত হয়। বিএনপির নেতাদের কর্মকাণ্ডকে যখন মিছিল, সমাবেশ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সীমার বাইরে যায়, তখন রাজনৈতিক দলের মূল উদ্দেশ্য—জনগণের কল্যাণ ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা—পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিএনপি মিছিলের সময় উত্তেজনা সৃষ্টি হওয়ার দায় বিতরণ করছেন। বিএনপির জেলা সদস্যসচিব রাইসুল আলম দাবি করেন, তাদের সমাবেশ শান্তিপূর্ণ ছিল, বিপরীত দিক থেকে আক্রমণ করা হয়েছে। তবে এই ধরনের দায় চাপানো কৌশল রাজনৈতিক দায়মুক্তির কোনো সুযোগ তৈরি করে না। নেতাকর্মীদের প্রয়োজন সতর্কতা অবলম্বন এবং স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণ কার্যক্রম নিশ্চিত করা।
বিজেপিও অভিযোগ করেছেন, বিএনপি মিছিলের সময় তারা ইটপাটকেল ও মারধরের শিকার হয়েছেন। এই পরিস্থিতি নির্দেশ করছে, রাজনৈতিক উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে দলের অভ্যন্তরীণ নেতৃত্ব ও তদারকি কার্যকর না হলে স্থানীয় শান্তি ও নিরাপত্তা গুরুতর ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
পুলিশ পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে এনেছেন বলে জানিয়েছেন ভোলা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। তবে প্রশাসনের সংহত ভূমিকা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর নৈতিক দায়বদ্ধতা ছাড়া এই ধরনের সংঘর্ষের পুনরাবৃত্তি থামানো কঠিন। রাজনৈতিক দলের জন্য অপরিহার্য যে, স্থানীয় নেতারা শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রচারের মাধ্যমে মিছিল ও সমাবেশকে জনগণের কল্যাণে রূপান্তরিত করুন, শুধুমাত্র উত্তেজনা ও সংঘর্ষের Arenas হিসেবে নয়।
ভোলা জেলা বিএনপির সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড স্থানীয় শান্তি ও প্রশাসনের উপর চাপ সৃষ্টি করছে। রাজনৈতিক নেতাদের উচিত রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে সহিংসতায় পরিণত না করা, বরং সংলাপ ও সমঝোতার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা। প্রশাসনকেও উচিত কঠোরভাবে নিয়মনীতি প্রয়োগ করে সকল পক্ষকে আইনের আওতায় আনা। জননিরাপত্তা ও সামাজিক শান্তি নিশ্চিত করা দেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার একটি অপরিহার্য দায়িত্ব।