মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫
Natun Kagoj
শিরোনাম
  • ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু, মোট মৃত ২৫৩ অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বিপন্ন করছে তিনটি চ্যালেঞ্জ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিবৃতি: বাড়িভাড়া আরও বাড়ছে বুধবার থেকে শ্রেণিকক্ষে ফেরার সিদ্ধান্ত নিলেন শিক্ষক-কর্মচারীরা বাবা সিআরসেভেনের স্বপ্ন পূরণের পথে এগোচ্ছে ছেলে রোনালদো জুনিয়র যে উপদেষ্টা শিক্ষকদের সঙ্গে সংলাপ এড়ায়, তার প্রয়োজন নেই শাহজালাল বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের পর অক্ষত পণ্যের তালিকা প্রকাশ বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক আজ অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে যুবকদের আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ আজ মান উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশ্ব মান দিবস পালিত হচ্ছে
  • নিরাপত্তা ও দূতাবাসের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে

    ইতালিতে প্রধান উপদেষ্টার অনুষ্ঠানে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার আমন্ত্রণ

    ইতালিতে প্রধান উপদেষ্টার অনুষ্ঠানে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার আমন্ত্রণ
    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    ইতালির রোমে বাংলাদেশি প্রবাসীদের সঙ্গে এক বিশেষ মতবিনিময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুস।

    মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রোমের স্থানীয় সময় সকাল ১১ টার দিকে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের রাজনৈতিক, সামাজিক এবং মুক্তিযোদ্ধা জুলাই যোদ্ধার প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে এই আয়োজনে চট্টগ্রাম মহানগর আকবরশাহ থানার ছাত্রলীগের নিষিদ্ধ ঘোষিত সাংগঠনিক সম্পাদক শারাফাত হোসেন রিয়াজের উপস্থিতি ঘিরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।

    শারাফাত হোসেন রিয়াজ চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী ছাত্রলীগের আকবরশাহ থানার সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন।

    এই ধরনের একজন নিষিদ্ধ নেতাকে কিভাবে প্রধান উপদেষ্টার মত উচ্চ পর্যায়ের একটি নিরাপত্তা-বেষ্টিত অনুষ্ঠানে প্রবেশ ও আমন্ত্রণ জানানো হলো তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ইতালির প্রবাসী কমিউনিটির নেতারা।

    একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, আমন্ত্রিতদের তালিকা তৈরি করে রোমে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস। এ তালিকা প্রস্তুত করেন রাষ্ট্রদূত এ টি এম রকিবুল হক ও দূতালয় প্রধান রিয়াদ হোসেন। অভিযোগ রয়েছে, তারা নিজেদের পছন্দের লোকদের নাম অন্তর্ভুক্ত করে অনুমতি ছাড়াই আমন্ত্রণপত্র পাঠান। শারাফাত হোসেন রিয়াজের ছাত্রলীগের নিষিদ্ধ পদ-পদবি গোপন রেখে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের সঙ্গে তথ্য গোপন করে দূতাবাস এই আমন্ত্রণ পাঠায়।

    এই ঘটনা প্রধান উপদেষ্টার নিরাপত্তার প্রতি চরম অবহেলা ও অপেশাদারিত্বের উদাহরণ। আজ যদি ঐ ব্যক্তি কোনো ধরনের অঘটন ঘটাতেন, তাহলে তার দায় কে নিত?

    এ বিষয় প্রবাসী জুলাই যোদ্ধা নিরব খান জানান, আমি নিজে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলাম এবং এই ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদ করতে চাইলেও আমাকে সুযোগ দেওয়া হয়নি।

    আরেক প্রবাসী জুলাই যোদ্ধা সোহাগ খান বলেন, আমরা যারা বছরের পর বছর রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিকে সচল রেখেছি, জুলাই আন্দোলনে আমরা প্রবাসে থেকে রেমিট্যান্স সাট ডাউন গোষনা করি,শেখ হাসির গদি নর ভরে করে দেয়,আজ আমাদের বাদ দিয়ে একজন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো চরম অপমান।

    প্রবাসী সমাজের মতে, রাষ্ট্রদূত রকিবুল হক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সুপারিশে নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ায় আওয়ামী লীগের একাংশের প্রতি অতিরিক্ত পক্ষপাত দেখান। তার নেতৃত্বাধীন দূতাবাস বারবার আওয়ামী লীগঘেঁষা নেতাদের প্রাধান্য দিয়ে প্রবাসী কমিউনিটিকে বিভক্ত করেছে।

    ইতিপূর্বেও রোম দূতাবাসের বিরুদ্ধে দলীয় সজনপ্রীতির অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ করেছিল ইতালি বিএনপি ও অন্যান্য গোষ্ঠী। এবার প্রধান উপদেষ্টার অনুষ্ঠানে নিষিদ্ধ ছাত্রনেতার উপস্থিতি সেই অভিযোগকে আরও জোরালো করেছে।

    ঘটনার পর ইতালি প্রবাসী সমাজ রাষ্ট্রদূত ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

    তাদের ভাষ্য, এটি নিছক অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল নয়, বরং নিরাপত্তা বিঘ্ন ঘটানোর মতো গর্হিত অপরাধ। একজন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে স্থান দেওয়া প্রধান উপদেষ্টার সম্মান ও নিরাপত্তার প্রতি অবমাননা।

    জানা গেছে, উক্ত অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বাইরে রেখেই অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, স্থানীয় সাংবাদিকরা আমন্ত্রিত ছাত্রলীগ নেতাদের চিনে ফেলার ভয়ে এবং এই ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হতে পারে ভেবেই সংবাদকর্মীদের দূরে রাখা হয়। এ বিষয়ে দূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের নিরাপত্তাজনিত কারণে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। কিন্তু তাদের আমন্ত্রণের মধ্যে ড. ইউনূস বিরোধী, অর্থাৎ নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আমন্ত্রণ করা হয় এবং তারা অনুষ্ঠানে প্রবেশ করেন। যদি নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীর দ্বারা কোনো প্রকার অঘটন ঘটে, তার দায়ভার কে নেবে? স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, ছাত্রলীগের কর্মীদের সাথে দূতাবাসের গোপন সম্পর্ক রয়েছে এবং সাংবাদিকরা এটি জানতে পারলে তথ্য প্রকাশ হবে, তাই এই কারণে দূতাবাস থেকে সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।


    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    আরও পড়ুন