স্তন ক্যান্সার নির্ণয়ে আল্ট্রাসোনোগ্রাফির ভূমিকা


বাংলাদেশে স্তন ক্যান্সারের হার দ্রুত বাড়ছে, আর প্রাথমিক পর্যায়ে সঠিকভাবে শনাক্ত করা গেলে সম্পূর্ণ নিরাময়ের সম্ভাবনা অনেক বেশি। এজন্য শুধুমাত্র “ম্যামোগ্রাফি” নয়, আল্ট্রাসোনোগ্রাফি (USG)-ও এখন ব্রেস্ট ক্যান্সার ম্যানেজমেন্টে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান।
USG কীভাবে কাজ করে?
USG বা আল্ট্রাসোনোগ্রাফি শব্দতরঙ্গের মাধ্যমে স্তনের টিস্যুর ভেতরের গঠনকে দৃশ্যমান করে। এটি রেডিয়েশন-মুক্ত, ব্যথাহীন, এবং নিরাপদ একটি পদ্ধতি — যা টিস্যুর ঘনত্ব, টিউমারের প্রকৃতি এবং অবস্থান স্পষ্টভাবে দেখাতে পারে।
স্তন ক্যান্সার নির্ণয়ে USG এর ভূমিকা:
১. Dense Breast এ বেশি কার্যকর:
যেসব মহিলার স্তন টিস্যু dense বা ঘন (সাধারণত ৪০ বছরের নিচে বয়স), তাদের ক্ষেত্রে ম্যামোগ্রাফিতে ছোট ক্ষুদ্র টিউমার খুঁজে পাওয়া নাও যেতে পারে। সেখানে USG অনেক সময় সেই টিউমার শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
২. Solid vs Cystic পার্থক্য নির্ণয়:
USG দ্বারা বোঝা যায় চাকা বা দলাটি solid নাকি তরল (cystic) — যা পরবর্তী চিকিৎসা পরিকল্পনা নির্ধারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৩. বায়োপসি গাইড হিসেবে ব্যবহৃত হয়:
যখন টিস্যু সংগ্রহ (core biopsy / FNAC) প্রয়োজন হয়, তখন USG-guided biopsy সবচেয়ে নিরাপদ ও নির্ভুল উপায়।
৪. চিকিৎসার পর ফলো-আপ:
কেমোথেরাপির পর রোগীর টিউমারের আকার কমছে কি না, বা নতুন কোনো লেশান তৈরি হয়েছে কি না, তা পর্যবেক্ষণের জন্য USG খুব কার্যকর।
৫. নোডাল ইনভলভমেন্ট মূল্যায়ন:
বগলের (axillary) লিম্ফ নোডে ছড়িয়েছে কি না, সেটিও USG দ্বারা প্রাথমিকভাবে মূল্যায়ন করা যায়।
USG এর বিশেষ সুবিধাসমূহ:
ক. কোনো রেডিয়েশন ঝুঁকি নেই
খ. গর্ভবতী নারী ও তরুণ রোগীদের জন্য নিরাপদ
গ. সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য
ঘ. রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা পরিকল্পনা উভয় ক্ষেত্রেই সহায়ক
প্রাথমিক স্তরে ব্রেস্ট ক্যান্সার শনাক্ত করতে “Triple Assessment” অর্থাৎ
- ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা
- ইমেজিং (USG ± Mammography)
- বায়োপসি
এই তিনটি ধাপই সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সমন্বিত পদ্ধতি।
তাই স্তনে কোনো চাকা বা দলা , ব্যথা বা চামড়ার পরিবর্তন অনুভব করলে অবহেলা করবেন না। প্রথম ধাপে একটি ব্রেস্ট USG করান এবং অভিজ্ঞ অনকোলজিস্ট বা সার্জনের পরামর্শ নিন।সময়মতো সঠিক পদক্ষেপই বাঁচাতে পারে ।
দৈএনকে/জে .আ
