শেয়ারবাজারে প্রবাসী ও বিদেশি বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণ বাড়ল


দেশের শেয়ারবাজারে দীর্ঘদিন ধরে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কমছিল। তবে শেষমেষ সেই প্রবণতায় পরিবর্তন এসেছে। সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বর মাসে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব ৪০টি বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সময়ে স্থানীয় বিনিয়োগকারীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে বিদেশি ও প্রবাসীরা ধারাবাহিকভাবে শেয়ারবাজার ছাড়ছিলেন। চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত এ প্রবণতা অব্যাহত থাকলেও সেপ্টেম্বরে এসে প্রথমবারের মতো সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। ৩১ আগস্ট বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীর নামে বিও হিসাব ছিল ৪৩,৭৬১টি যা ৩০ সেপ্টেম্বর এ সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৩,৮০১টিতে। এ হিসেবে এক মাসে বেড়েছে ৪০টি বিও হিসাব। তবে এখনো ২০২৩ সালের তুলনায় বিদেশি ও প্রবাসীদের উপস্থিতি অনেকটাই কম। ২০২৩ সালের অক্টোবরে এই সংখ্যা ছিল ৫৫,৫১২টি। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে কমেছে ১১,৭১১টি বিও হিসাব।
এদিকে শুধু বিদেশি নয়, স্থানীয় বিনিয়োগকারীরাও সেপ্টেম্বর মাসে শেয়ারবাজারে ফিরেছেন। আগস্টে দেশি বিনিয়োগকারীর নামে বিও হিসাব ছিল ১৫,৮৪,১০৪টি। যা সেপ্টেম্বরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫,৯০,৬৯৫টিতে । অর্থাৎ এক মাসে বেড়েছে ৬,৫৯১টি বিও হিসাব। তবে ২০২৪ সালের শুরুতে মোট বিও হিসাব ছিল ১৭,৭৩,৫৫১টি। বর্তমানে এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬,৫২,২২৭টি। অর্থাৎ এ পর্যন্ত কমেছে ১,২১,৩২৪টি বিও হিসাব।
এরমধ্যে পুরুষ বিনিয়োগকারী: আগস্টে ১২,৩৫,৮৯৮ → সেপ্টেম্বরে ১২,৪১,৪৭৬ (বৃদ্ধি ৫,৫৭৮টি); নারী বিনিয়োগকারী: আগস্টে ৩,৯১,৯৭১ → সেপ্টেম্বরে ৩,৯৩,০২০ (বৃদ্ধি ১,০৪৯টি) এবং কোম্পানি হিসাব: আগস্টে ১৭,৫৩২ → সেপ্টেম্বরে ১৭,৭৩১ (বৃদ্ধি ১৯৯টি)। এছাড়া, একক নামে বিও হিসাব বেড়েছে ৬,২১৯টি এবং যৌথ নামে বিও হিসাব বেড়েছে ১,৪০৮টি
বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেড়লেও সূচকে ইতিবাচক প্রভাব পড়েনি। আগস্ট শেষে ডিএসই এক্স (DSEX) সূচক ছিল ৫,৫৯৪ পয়েন্ট। যা সেপ্টেম্বরে নেমে এসেছে ৫,৪১৫ পয়েন্টে। অর্থাৎ এক মাসে সূচক কমেছে ১৭৯ পয়েন্ট।
অপরদিকে, আগস্টে বাজার মূলধন ছিল ৭,২৮,০৪৮ কোটি টাকা। যা সেপ্টেম্বরে দাঁড়িয়েছে ৭,২৫,০৬৩ কোটি টাকা। এ হিসেবে এক মাসে কমেছে ২,০৮৫ কোটি টাকা।
লেনদেনও নিম্নমুখী। এক সময় যেখানে প্রতিদিন হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হতো, এখন তা নেমে এসেছে ৬০০ কোটির ঘরে। গত ১৫ কার্যদিবসে একদিনও হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয়নি।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীর সংখ্যার বৃদ্ধি ইতিবাচক ইঙ্গিত দিলেও বাজারের মৌলিক চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। সূচক ও বাজার মূলধনের পতন বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুরোপুরি ফেরায়নি।
