মণ্ডামিঠাইসহ তিন ঐতিহ্যবাহী দুর্গাপুজোর মিষ্টি


বাংলার বনেদি বাড়ির দুর্গাপুজো কেবল ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি প্রাচীন পারিবারিক ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। একশো বছরের পুরনো পুজা থেকে শুরু করে আড়াইশো বছরের পুজা—সবই সময়ের সাক্ষী। এসব বাড়ির পুজা শুধু ঠাকুরদালান বা শোভাযাত্রার জন্য নয়, ভোগের থালায় মিষ্টির বৈচিত্রও বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণযোগ্য। এবার দেখুন দুর্গাপুজোর তিনটি ঐতিহ্যবাহী মিষ্টির রেসিপি।
১. নারকেলের তক্তি
পুজাতে নারকেলের তক্তি এক বিশেষ আকর্ষণ।
উপকরণ:
- ২ কাপ নারকেল কোরা
- ১/২ কাপ ক্ষীর
- ১ কাপ গুড়
- ১/২ কাপ সাদা তিল
- ছাঁচ
প্রণালী:
১. তিল শুকনো খোলায় ভেজে গুঁড়ো করে রাখুন।
২. কড়াইতে নারকেল কোরা, গুড় ও ক্ষীর মিশিয়ে কিছুক্ষণ জ্বাল দিন।
৩. তিলগুঁড়ো মিশিয়ে আরও নাড়াচাড়া করুন।
৪. মিশ্রণটি বেটে নিয়ে ছাঁচে ফেলে সন্দেশের আকারে গড়ে নিন।
৫. ঠান্ডা করে ভোগে পরিবেশন করুন।
২. মণ্ডামিঠাই (আটার নাড়ু)
পুজার ভোগের অন্যতম আকর্ষণ মণ্ডামিঠাই।
উপকরণ:
- ৪ কাপ নারকেল কোরা
- ১/২ কাপ আটা
- ২ কাপ আখের গুড়
- ১/২ কাপ ভেলি গুড়
- ৫–৬টি বড় এলাচ (থেঁতো করা)
- ৫–৬ টেবিল চামচ ঘি
প্রণালী:
১. একটি ভারী পাত্রে নারিকেল, ঘি এবং আখের গুড় জ্বাল দিতে হবে।
২. জ্বাল হয়ে এলে ভেলি গুড়, এলাচ ও আটা মিশিয়ে নিন।
৩. রান্না হয়ে এলে আঁচ বন্ধ করে খানিকটা ঠান্ডা হতে দিন।
৪. হাতে ঘি মেখে নিয়ে ছোট ছোট নাড়ু গড়ে নিন।
৫. ঠান্ডা হয়ে গেলে পরিবেশন করুন ভোগে।
৩. ক্ষীরমোহন
পুজাতে ভোগের থালায় অপরিহার্য মিষ্টি ক্ষীরমোহন।
উপকরণ:
- ৩ লিটার দুধ
- ৩ কাপ ছানার জল
- ৪–৫টি ছোট এলাচ
- ১ কাপ চিনি
- ১০০ গ্রাম ময়দা
- ৫০ গ্রাম সুজি
প্রণালী:
১. ৩ কাপ পানি ও ৩ কাপ চিনি দিয়ে চিনির শিরা তৈরি করুন।
২. পরিমাণমতো দুধ ঘন করে, ছানার পানি দিয়ে ছানা তৈরি করুন।
৩. ছানা থেকে জল ঝরিয়ে বড় থালায় ছড়িয়ে দিন।
৪. এতে এলাচ, ময়দা, চিনি ও সুজি মিশিয়ে মাখুন।
৫. হাতে গোল গোল আকার দিয়ে চিনির শিরায় কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখুন।
৬. অন্য পাত্রে দুধ গাঢ় করে ক্ষীর বানান। মিষ্টিগুলো ক্ষীরের মধ্যে ডুবিয়ে কিছুক্ষণ ঢেকে রাখুন।
৭. ঠান্ডা করে পরিবেশন করুন।
পুজাতে ভোগ শুধুমাত্র নৈবেদ্য নয়, এটি ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও পরিবারের গল্পের এক জাদুকরী অংশ। মণ্ডামিঠাই থেকে নারকেলের তক্তি, ক্ষীরমোহন—প্রতিটি মিষ্টি আলাদা কৌশল, স্বাদ ও ইতিহাস বয়ে নিয়ে আসে ভোগের থালায়।
দৈএনকে/জে .আ
