ফিলিস্তিনি সাহায্যকেন্দ্রে বর্বর ইসরায়েলি হামলার দৃশ্য প্রকাশ


গাজার মানবিক সহায়তা কেন্দ্রগুলোতে সাহায্য চাইতে আসা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর পরিকল্পিত ও লক্ষ্যভিত্তিক হামলার চিত্র প্রকাশ করেছেন আমেরিকান শিশু চিকিৎসক ড. আহমদ ইউসুফ। তিনি জানান, এই হামলা প্রায় প্রতিদিনই হচ্ছে এবং নির্দিষ্ট বয়সের ছেলেমেয়ে ও যুবকদের শরীরের নির্দিষ্ট অংশ লক্ষ্য করে আঘাত করা হচ্ছে।
ড. ইউসুফ মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) জর্ডানের রাজধানী আম্মান থেকে আল জাজিরাকে জানিয়েছেন, তিনি দুই সপ্তাহের বেশি সময় থেকে আল-আকসা হাসপাতাল এবং আল-শিফা হাসপাতালে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করার সময় গাজার মানবিক কেন্দ্রগুলোতে ব্যাপক আহত হওয়ার ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন। এই ঘটনাগুলো মূলত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের, জিএইচএফ (GHF) খাবার বিতরণ কেন্দ্রে ঘটে। চিকিৎসক বলেন, “একই ধরনের হামলার নিদর্শন প্রতিদিনের মতো ছিল। যেমন, এক দিনে পায়ে বা পেলভিসে গুলি, পরের দিনে বুক বা মাথায় আঘাত।”
ড. ইউসুফ আরও বলেন, হামলায় আহতরা মূলত তরুণ এবং যুবক, কারণ পরিবারে খাদ্য পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব তাদের বহন করতে হয়। কখনও কখনও ফিলিস্তিনিরা জিএইচএফ সাইট এড়িয়ে অন্য জায়গায় সাহায্য নিতে গেলে ইসরায়েলের বোমা হামলা তীব্রতর হয়ে ওঠে। তিনি গাজা পুরোপুরি “মৃত্যুর জাল” হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
তাঁর অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, প্রতিদিন যে নির্দিষ্ট সংখ্যা মানুষকে হত্যা করা হয়, তা যেন একটি “কোটা” নির্ধারিত। একসময় ফিলিস্তিনিরা সাইটে না গেলে, ইসরায়েল আরও তীব্র বিমান হামলা চালায়। শেষ চার দিনে খাবারের কিছু সুবিধা আসায় হামলার ধরন পরিবর্তিত হয়ে সাধারণ বোমাবর্ষণে পরিণত হয়েছে, যেখানে শিশু, মহিলা ও বৃদ্ধরাও আহত হয়েছেন।
ড. ইউসুফ অভিযোগ করেছেন যে, ইসরায়েল তার ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের চিকিৎসা সরঞ্জাম, ওষুধ ও শিশুখাদ্য নিয়ে প্রবেশ করতে দেয়নি। এর ফলে আহতরা প্রাপ্য চিকিৎসা ও মানবিক সহায়তা পায়নি। তিনি ইসরায়েলের এই সহিংসতা “উৎপাতমূলক গণহত্যা” আখ্যা দিয়েছেন।
হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট (মেডিকেল স্টাফ)-দের মতে, জিএইচএফ সাইটগুলোতে ইসরায়েলের লক্ষ্যভিত্তিক ও এলোমেলো হামলা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘন ও যুদ্ধাপরাধের মধ্যে পড়ে। শুধুমাত্র মঙ্গলবার ইসরায়েলি হামলায় সাহায্যকেন্দের আশেপাশে ১৯ জন নিহত হয়েছেন এবং আরও বহু আহত হয়েছেন। মে মাসের শেষ থেকে এখন পর্যন্ত নিহত ১,৮৩৮ ফিলিস্তিনি এবং ১৩,৪০৯ জন আহত হয়েছেন। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা
দৈএনকে/ জে .আ
