টিকিটের দাবিতে দীর্ঘ অবস্থানে ফুটবল আলট্রাস
সোমবার (২ জুন) বিকেল থেকে বাফুফে ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছে দেশের অন্যতম সংগঠিত সমর্থক গোষ্ঠী ‘ফুটবল আলট্রাস’। টিকিট বণ্টনের স্বচ্ছতা ও সহজলভ্যতা নিশ্চিতের দাবিতে শুরু হওয়া এই আন্দোলন মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। আন্দোলনকারীদের দাবি, নিয়মিত খেলা দেখা সমর্থকরাও টিকিট পাচ্ছেন না, বরং অনিয়মের মাধ্যমে টিকিট চলে যাচ্ছে অপ্রয়োজনীয় জায়গায়।
ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, মাঠের পারফরম্যান্সের পাশাপাশি গ্যালারির দর্শকের উপস্থিতি নিশ্চিত করতেও বাফুফেকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।
‘টিকিট চাই, অধিকার চাই’, ‘নো আলট্রাস, নো ফুটবল’—এমন নানা স্লোগান ও প্ল্যাকার্ড হাতে সোমবার বিকেল থেকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ভবনের সামনে অবস্থান করছেন দেশের শীর্ষ সমর্থক গোষ্ঠী ‘ফুটবল আলট্রাস’-এর সদস্যরা। প্রায় বিশজন আলট্রাস সদস্য এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। তাদের দাবি, যারা বছরের পর বছর মাঠে থেকে দলকে সমর্থন দিয়ে গেছেন, আজ তাদেরই গুরুত্বহীন করে রাখা হচ্ছে।
আলট্রাস জানিয়েছে, তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য এই অবস্থান চালিয়ে যাবে, যতক্ষণ না তাদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়া হয়। তাদের অভিযোগ, প্রায় দুই মাস আগে তারা অর্থ পরিশোধ করে আগাম টিকিটের জন্য আবেদন করলেও বাফুফে কোনো জবাব দেয়নি। পরে যখন টিকিট বরাদ্দ দেওয়া হলো, তখন দুই-তিন হাজার চাহিদার বিপরীতে মাত্র ১০০ টিকিট দেওয়া হয়, যা তারা স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।
বাফুফে ভবনের সামনের গেটে চলা আন্দোলনের সময় কর্মকর্তারা পেছনের গেট দিয়ে অফিস কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এখনও পর্যন্ত বাফুফে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য কিংবা সমাধানের উদ্যোগ নেয়নি।
এদিকে, এবারই প্রথম পুরো টিকিটিং প্রক্রিয়া পরিচালনার দায়িত্ব ছিল টিকিফাই নামক একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মের ওপর। কিন্তু সাইবার হামলার কারণে অনেকেই সময়মতো টিকিট কিনতে পারেননি। যদিও পরে জানানো হয়, সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে—এ নিয়ে ক্ষোভ আরও বেড়েছে। অনেক সমর্থক বলছেন, টিকিটের এই ‘অস্বচ্ছ ও বিতর্কিত’ ব্যবস্থাপনার দায় এড়াতে পারে না বাফুফে।
টিকিট বিতরণ নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন বাফুফের সহ-সভাপতি ফাহাদ করিম। এক সময় যিনি প্রবাসী ফুটবলারদের দেশে ফেরানোর উদ্যোগের জন্য সমর্থকদের প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন, এখন তিনিই সমালোচনার মুখে। শুধু সমর্থকগোষ্ঠীগুলো নয়, ফেডারেশনের ভেতরেও কয়েকজন নির্বাহী সদস্য টিকিট সংক্রান্ত অস্বচ্ছতাকে কেন্দ্র করে অসন্তুষ্ট।
ফুটবল আলট্রাস ছাড়াও বাংলাদেশ ফুটবল সাপোর্টার ফোরামসহ আরও কয়েকটি গোষ্ঠীও টিকিট সংকটে হতাশা প্রকাশ করেছে। যেসব সংগঠন দেশের ফুটবলের কঠিন সময়ে মাঠে-গ্যালারিতে পাশে থেকেছে, তাদের এভাবে উপেক্ষিত করা নিঃসন্দেহে সমর্থকদের আস্থার সংকট তৈরি করছে বলে মন্তব্য করছেন অনেকে।
