বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫
Natun Kagoj
শিরোনাম
  • ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে না: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসায় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক প্রাণের তিন কর্মীর কারাদণ্ড, কোম্পানির দাবি ‘পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র’ ভয় নয়, সচেতন করতেই এমন বিজ্ঞপ্তি: এনবিআর চেয়ারম্যান শুল্ক কমিয়ে ১৫ শতাংশে নামানোর চেষ্টা চলছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা ভারী বর্ষণে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর, নিম্নাঞ্চল প্লাবনের আশঙ্কা অবৈধ অভিবাসনের মরীচিকা ও বেদনাদায়ক বাস্তবতা উড়োজাহাজ সংকটে দুবাই ও কুয়েত ফ্লাইট বাতিল করল বাংলাদেশ বিমান যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুই জাহাজ কেনার অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার রাশিয়ার দখলে থাকা অঞ্চল ছেড়ে দিতে প্রস্তুত ইউক্রেন!
  • আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক: আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন অধ্যায়

    আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক: আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন অধ্যায়
    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    আগামী ১৫ আগস্ট আলাস্কায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখোমুখি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এই সাক্ষাৎ কেবল দুই দেশের কূটনীতিক সম্পর্কেই নয়, বিশ্ব রাজনীতির গতি পরিবর্তনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষত, ইউক্রেন সংকটের ভবিষ্যত নির্ধারণে এই বৈঠকের প্রভাব অনেক বেশি হবে।

    বৈঠকের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেছে দুই দেশের প্রশাসন। বিশ্ব রাজনীতিতে এতদিন ধরে ঝুলন্ত থাকা বহু প্রশ্ন এই বৈঠকে আলোচনার টেবিলে আসতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্প ও পুতিনের এই ‘বিগ মিটিং’ অনেকটাই নির্ধারণ করবে আগামী দিনের কূটনৈতিক পরিস্থিতি।

    ট্রাম্পের জন্য এই বৈঠক রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক এক মাইলফলক। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তিনি দ্রুত যুদ্ধ বন্ধের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যদিও শুরুতে রাশিয়ার প্রতি কিছুটা নমনীয়তা দেখিয়েছিলেন ট্রাম্প, কিন্তু যুদ্ধবিরতি নিয়ে অগ্রগতি না হওয়ায় পরবর্তীতে কঠোর শুল্ক আর নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে মস্কোর ওপর চাপ বাড়িয়েছেন তিনি। এই প্রেক্ষাপটে আলাস্কায় বৈঠক হওয়ার ঘটনা ট্রাম্পের রাজনৈতিক কৌশলে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

    আর পুতিনের কাছে ইউক্রেন যুদ্ধ একদিকে সামরিক ও রাজনৈতিক মিশন। পূর্ব ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করাই তার মূল লক্ষ্য। এছাড়া, ন্যাটোর বিস্তার রোধ করাও তার অগ্রাধিকার। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনকে ‘শতাব্দীর বৃহত্তম ভূরাজনৈতিক বিপর্যয়’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন পুতিন বারংবার। তিনি চান রাশিয়ার পুরনো প্রভাব ফিরে আসুক, আর তাই আলোচনায় ইউক্রেনের অধিকৃত অংশকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে দাবি করবেন এবং ন্যাটোর প্রসার রোধে জোর দেবেন।

    তবে বৈঠক থেকে ইউক্রেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনুপস্থিতি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি তাদের ভূখণ্ড ছাড়ার প্রস্তাবে একদমই রাজি নন। আর অধিকৃত ভূখণ্ডের ওপর এই দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কূটনৈতিক সমঝোতার পথ কঠিন করে তুলেছে।

    আলাস্কা কেন এই বৈঠকের ভেন্যু হলো, তাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা দরকার। একসময় রাশিয়ার অংশ ছিল এই অঞ্চল, যা ১৮৬৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিক্রি করা হয়। তাই আলাস্কায় বৈঠক আয়োজন একদিকে দুই দেশের ইতিহাস ও সম্পর্কের প্রতীকী অর্থ বহন করে। অন্যদিকে, এটি তুলনামূলক কম জনবসতিপূর্ণ, নিরাপদ ও সহজে নিয়ন্ত্রণযোগ্য এলাকা হওয়ায় শীর্ষ নেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও সহজ হয়।

    বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্পের উদ্দেশ্য ছিল এই বৈঠককে কোনো দেশের রাজধানীর বাইরের নিরপেক্ষ মঞ্চ হিসেবে গড়ে তোলা, যেখানে কোনো পক্ষই নিজেদের আধিপত্য জানান দিতে পারবে না। আলাস্কা সেই মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে, যা কূটনৈতিক সৌহার্দ্য বজায় রাখতে সাহায্য করবে।

    তাই এই বৈঠক কেবল দুই দেশের সম্পর্কের জন্য নয়, সমগ্র বিশ্ব রাজনীতির জন্য একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে। ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যত, আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা—সবকিছুর ওপর তার প্রভাব পড়বে দীর্ঘদিন।


     


    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    সর্বশেষ

    আরও পড়ুন