রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
Natun Kagoj

ইরান–যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের শর্ত ঘোষণা খামেনেয়ির

ইরান–যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের শর্ত ঘোষণা খামেনেয়ির
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

যদি যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে সমর্থন বন্ধ করে, মধ্যপ্রাচ্যে তাদের সামরিক ঘাঁটি গুটিয়ে নেয় এবং আঞ্চলিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ বন্ধ করে, তবেই তাদের সহযোগিতার অনুরোধ বিবেচনা করবে তেহরান , বলেছেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনেয়ি । 

সোমবার (৩ নভেম্বর) বিশ্বব্যাপী অহংকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জাতীয় দিবস উপলক্ষে তেহরানে স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি দল খামেনেয়ির সঙ্গে দেখা করেন। সেখানে তিনি এ কথা বলেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের দীর্ঘ রাজনৈতিক বিরোধ, মার্কিন নীতির ঐতিহাসিক পটভূমি এবং ইরানের ভবিষ্যৎ কৌশল নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেন খামেনেয়ি।

দেশটির আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা তাসনিমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানি জাতির প্রতি মার্কিন শত্রুতা ১৯৫৩ সালের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শুরু হয় এবং তখন থেকেই অব্যাহত রয়েছে বলে জানান খামেনেয়ি। বলেন, ‘ইসলামি প্রজাতন্ত্র এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বন্দ্ব মৌলিক এবং উভয় পক্ষের স্বার্থের সংঘাত থেকে উদ্ভূত।

তিনি উল্লেখ করেন, ‘যদি ওয়াশিংটন ইহুদিবাদী শাসনব্যবস্থার প্রতি তার সমর্থন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে, অঞ্চল থেকে তার সমস্ত সামরিক ঘাঁটি প্রত্যাহার করে এবং আঞ্চলিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত থাকে, তবেই ইরানের সাথে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো অনুরোধ বিবেচনা করা যেতে পারে। সেটি অদূর ভবিষ্যতে নয় বরং পরবর্তী সময়ে বিবেচ্য হতে পারে।’

ইরানের শীর্ষ এই নেতা আরও বলেন, ‘অনেক সমস্যার সমাধান করার এবং দেশকে রক্ষা করার অন্যতম উপায় হলো শক্তিশালী হয়ে ওঠা। বিশেষ করে ব্যবস্থাপনাগত, বৈজ্ঞানিক এবং সামরিক সক্ষমতা, সেইসঙ্গে প্রেরণার মাধ্যমে সেটি হয়ে থাকে।’ তিনি জোর দেন, সরকারের উচিত এসব ক্ষেত্রে দৃঢ়ভাবে দায়িত্ব পালন করা।

আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ি ১৯৭৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস দখলকে ইরানের ইতিহাস ও জাতীয় পরিচয়ের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘যারা বলে “আমেরিকার মৃত্যু হোক” স্লোগান ইরানের প্রতি মার্কিন শত্রুতার কারণ, তাদের দাবি ইতিহাসের বিকৃতি। যুক্তরাষ্ট্রের শত্রুতা ইরানের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের এবং এর কারণ হলো ইসলামি প্রজাতন্ত্রের স্বাধীন অবস্থান ও তাদের স্বার্থবিরোধী নীতি।’

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের অহংকারী স্বভাব কেবল আত্মসমর্পণই চায়। প্রতিটি মার্কিন প্রেসিডেন্টই এই মনোভাব পোষণ করেছে, যদিও কেউ প্রকাশ্যে তা বলেননি। বর্তমান প্রেসিডেন্ট স্পষ্টভাবে তা প্রকাশ করেছেন। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের আসল স্বভাব প্রকাশ পেয়েছে।’

ইরানি জাতির সামর্থ্য, সম্পদ, বুদ্ধিবৃত্তিক ও আধ্যাত্মিক পটভূমি এবং তার সজাগ ও উৎসাহী তরুণদের বিবেচনায় তাদের আত্মসমর্পণের প্রত্যাশা করা অর্থহীন বলেও মন্তব্য করেন তিনি। আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ি বলেন, ‘আমরা সুদূর ভবিষ্যতের ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারি না, তবে বর্তমানে সকলের জানা উচিত, অনেক সমস্যার সমাধান শক্তিশালী হওয়ার মধ্যেই নিহিত।’


দৈএনকে/জে, আ
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন