রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
Natun Kagoj

ঐকমত্য কমিশন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রত্যাশার ফাঁক: বিএনপির হতাশা

ঐকমত্য কমিশন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রত্যাশার ফাঁক: বিএনপির হতাশা
ক্যানভা এআই
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

জাতীয় রাজনীতি আজকের দিনে বহু জটিল এবং উত্তেজনাপূর্ণ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এমন এক প্রেক্ষাপটে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সম্প্রতি প্রকাশ করেছেন তার দল এবং সমর্থকরা যে হতাশার সম্মুখীন, তা শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলের অভিমত হিসেবে নয়, বরং দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ সংকেতও বহন করে।

তিনি স্পষ্ট করেছেন যে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপগুলো বিএনপির প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। বিশেষত জুলাই সনদ বাস্তবায়ন সংক্রান্ত সুপারিশ এবং ৪৮টি দফার ওপর গণভোটের প্রসঙ্গে কোনো পূর্ব আলোচনার অভাব, বিএনপির মধ্যে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। সালাহউদ্দিন বলেছেন, এতদিন কেন এত আলোচনা, এত কসরত করা হলো, তা প্রশ্নবিদ্ধ। এটি স্পষ্ট করে যে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যথাযথ সমন্বয় ছাড়া কমিশনের পদক্ষেপ জনগণের বিশ্বাস অর্জনে অপ্রতুল।

এতদূর পর্যন্ত আলোচনার ফলাফল যে একরূপ বা প্রতিশ্রুতিশীল নয়, তা বিএনপির হতাশার মূল কারণ। কমিশন ও অন্তর্বর্তী সরকার যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা জাতিকে বিভক্তি এবং অনৈক্য সৃষ্টি করার আশঙ্কা উত্থাপন করেছে। এই অবস্থায় প্রশ্ন থাকে, ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কি যথার্থভাবে সাধিত হচ্ছে, নাকি তা কেবল রাজনৈতিক বহুলচর্চিত নকশার একটি অংশ?

রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী অধিকার সম্পর্কেও বিএনপির উদ্বেগ সুস্পষ্ট। জোটবদ্ধ দলের স্বাধীনভাবে নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করার দাবি, হঠাৎ করে সংশোধিত প্রস্তাবে বাধ্যতামূলক করার প্রচেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোর স্বায়ত্তশাসনের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করছে। এটি দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে এবং রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

সালাহউদ্দিন আহমদের বক্তব্য অনুযায়ী, বর্তমান সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হলেও, কমিশন এবং সরকারের কিছু কর্মকাণ্ডে যা দেখা যাচ্ছে তা হতাশাজনক। রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের জন্য এটি একটি সতর্কবার্তা। দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সুস্থতা নিশ্চিত করতে হলে, রাজনৈতিক অংশীদারিত্ব ও স্বচ্ছ আলোচনার পরিবেশ সৃষ্টি করা অত্যন্ত জরুরি।

শেষ পর্যন্ত, রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যাশার সঙ্গে কমিশন ও অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপের ফাঁক পূরণ করা না হলে, দেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার প্রতি সাধারণ জনগণের আস্থা ক্ষুণ্ণ হবে। আজকের এই হতাশা শুধু বিএনপির নয়, এটি সমগ্র রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক এবং নাগরিক সমাজের জন্যও একটি দৃষ্টান্ত, যে দেশের গণতন্ত্রকে সুদৃঢ় ও নিরপেক্ষ রাখতে হলে সকল পক্ষের অংশগ্রহণ এবং সহযোগিতা অপরিহার্য।


গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

আরও পড়ুন