ট্রাম্পের আর্জেন্টিনা গরুর মাংস আমদানি পরিকল্পনায় ক্ষুব্ধ খামারি


মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আর্জেন্টিনা থেকে গরুর মাংস আমদানির পরিকল্পনা করছেন, যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দেশটির খামারিরা।
সোমবার (২০ অক্টোবর) ন্যাশনাল ক্যাটলম্যানস বিফ অ্যাসোসিয়েশন প্রধান নির্বাহী কলিন উডঅল মন্তব্য করেন, ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা পশুপালন খাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে, তবে মাংসের দাম কমাতে কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখবে না।
রোববার রাতে প্রেসিডেনশিয়াল উড়োজাহাজ এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে গরুর মাংসের দাম ঐতিহাসিক উচ্চতায় পৌঁছে গেছে, তাই আমদানি বাড়িয়ে দাম কমানোর বিষয়টি তিনি বিবেচনা করছেন। তিনি আরও বলেন, 'আমরা যদি আর্জেন্টিনা থেকে অল্প পরিমাণ গরুর মাংস কিনি, তাহলে তাদের অনেক সুবিধা হবে।'
ট্রাম্পের এই পরিকল্পনার কারণে মার্কিন খামারিরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। এর আগে মার্কিন প্রশাসন আর্জেন্টিনাকে ২০ বিলিয়ন ডলারের মুদ্রা-বিনিময় সহায়তা দিয়েছিল। তখন চীন যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তে আর্জেন্টিনা থেকে সয়াবিন কেনা শুরু করায় মার্কিন কৃষকরা ওই অর্থনৈতিক সহায়তার চুক্তি দেওয়াতেও ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন।
সম্প্রতি বেইজিংয়ের কাছে সয়াবিন রফতানির প্রতিযোগিতায় দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির কাছে ওয়াশিংটন পিছিয়ে পড়েছে। ন্যাশনাল ফার্মার্স ইউনিয়নের সভাপতি রব লারিউ বলেন, 'এখন আবার মাংস আমদানি করে তাদের পুরস্কৃত করা একেবারেই উচিত নয়।' মন্টানার খামারি জ্যান ম্যাকডোনাল্ড তার ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, 'আমি এই সপ্তাহে বাছুর বিক্রির প্রস্তুতি নিচ্ছি। প্রেসিডেন্টের পরিকল্পনায় আমি ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন।'
তবে, মার্কিন অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, এভাবে আমদানি করে গরুর মাংসের দাম কমবে না। তারা বলেছেন, আর্জেন্টিনা থেকে বাড়তি মাংস আমদানি যুক্তরাষ্ট্রে দামের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে না, কারণ দেশটি গত বছর মার্কিন আমদানির মাত্র দুই শতাংশ সরবরাহ করেছিল। তারা সতর্ক করেছেন, বিদেশি মাংসের বাড়তি আমদানিতে স্থানীয় খামারিরা উৎপাদন বৃদ্ধির উৎসাহ হারাতে পারেন।
ওকলাহোমা স্টেট ইউনিভার্সিটির কৃষি অর্থনীতিবিদ ডেরেল পিল বলেন, 'একটি গরুকে বিক্রি উপযোগী করতে প্রায় দুই বছর লাগে। তাই দ্রুত উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব নয়।' আমেরিকান ফার্ম ব্যুরো ফেডারেশনের সভাপতি জিপি ডুভাল বলেন, 'বিদেশি মাংসের স্রোতে বাজার ভরে গেলে দীর্ঘমেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্যস্বাধীনতা হুমকিতে পড়বে।'
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারিতে মার্কিন গবাদিপশুর সংখ্যা গত ৭৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। দীর্ঘমেয়াদি খরা ও খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে খামারিরা পশু সংখ্যা কমাতে বাধ্য হন। পাশাপাশি, মে মাস থেকে মেক্সিকো থেকে গবাদিপশু আমদানি প্রায় বন্ধ রয়েছে এবং ব্রাজিলের পণ্যের ওপর মার্কিন শুল্ক বৃদ্ধির কারণে সেখান থেকেও মাংস আমদানি কমেছে।
দৈএনকে/রে,আ
