নেতৃত্ব মানে শোনা, কণ্ঠরোধ নয়: বাঁধন


শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকীতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোবিজ অঙ্গনের তারকারা বিশেষ পোস্ট দিয়েছেন। কিন্তু হঠাৎ করে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে যে, এসব পোস্ট হয়তো অর্থের বিনিময়ে প্রকাশিত হয়েছে।
একটি কথিত ব্যাংক স্টেটমেন্টের ছবি ভাইরাল হয়। তবে ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা রিউমর স্ক্যানার বাংলাদেশ বলছে, এই স্টেটমেন্টটি ভুয়া।
এবার সেই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। একদিকে শেখ মুজিবের মৃত্যুবার্ষিকীতে বাধাপ্রদান ও অন্যদিকে তাকে শ্রদ্ধা জানানোয় এমন গুজব ছড়ানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিনেত্রী।
তার মতে, মানুষ কাকে সমর্থন করবে আর কাকে করবে না, সেটা সম্পূর্ণ তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। কারো কণ্ঠরোধ করাটা আরেক ফ্যাসিবাদের জন্ম দেবে বলেও জানান বাঁধন।
রোববার (১৮ আগস্ট) এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে বাঁধন বলেন, আপনাদের কে সেই অধিকার দিয়েছে যে মানুষের পছন্দ-অপছন্দ নিয়ন্ত্রণ করবেন? শেখ হাসিনার মতো হওয়ার চেষ্টা করবেন না। আপনারা তো দেখেছেন তার কী পরিণতি হয়েছে। তার পতনের পর ভেবেছিলাম মানুষ শিক্ষা নেবে। কিন্তু না, অহংকার এখনো থেমে নেই! মানুষ কাকে সমর্থন করবে আর কাকে করবে না, সেটা সম্পূর্ণ তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত।
এই অভিনেত্রী যোগ করে আরও বলেন, আপনি কে সেটা ঠিক করে দেওয়ার? মানুষের নিজস্ব বুদ্ধি আছে। কেউ যদি শেখ মুজিবুর রহমানকে সম্মান করতে চায়, সেটা তাদের অধিকার। এটা আপনার অনুমতির বিষয় নয়। শুধু আপনার চিন্তার সঙ্গে না মিললেই কাউকে খারাপ মানুষ হিসেবে ব্র্যান্ড করার কোনো অধিকার আপনার নেই।
টাকার বিনিময়ে পোস্ট করার দাবি প্রসঙ্গে বাঁধন বলেন, আর হেসে খুন হওয়ার মতো ব্যাপার হলো- আপনাদের অবস্থা এতই সস্তা হয়ে গেছে যে লজ্জা লাগে। প্রথমে রটনা ছড়াল, আমি নাকি জুলাই বিদ্রোহে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ২০০ কোটি টাকা নিয়েছি! এবার নতুন গুজব ছড়াচ্ছেন শেখ মুজিব নিয়ে পোস্ট করার জন্য নাকি আমরা মাত্র ২০ হাজার টাকা পেয়েছি! সত্যি? ২০০ কোটি থেকে ২০ হাজার! এত বড় ঝুঁকি কেউ কি এমন অল্প টাকার জন্য নেয়? কী হাস্যকর সার্কাস!
মানুষের কণ্ঠরোধ না করে বরং তাদের কথা শোনার অনুরোধ জানিয়ে বাঁধন বলেন, এখন আর মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না। না মিথ্যা দিয়ে, না তুচ্ছ গুজব দিয়ে, না ফাঁপা হুমকি দিয়ে। পৃথিবী বদলে গেছে। সোশ্যাল মিডিয়া আছে। গ্লোবালাইজেশন আছে। মানুষ এখন আপনাদের ফাঁকিবাজি খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারে। একজন প্রকৃত নেতা মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করেন না, তাদের অনুপ্রাণিত করেন। একজন প্রকৃত নেতা মানুষের কণ্ঠরোধ করেন না, তাদের কথা শোনেন। একজন প্রকৃত নেতা ভিত্তিহীন অপবাদ ছড়ান না, তিনি বিশ্বাস গড়ে তোলেন। তাই এই ক্ষমতার ভ্রম ছেড়ে দিন। মানুষকে পুতুলের মতো নাচানোর স্বপ্ন দেখবেন না। সেই সুতো অনেক আগেই ছিঁড়ে গেছে। জেগে উঠুন, নইলে ইতিহাস এবার আরও নির্মমভাবে আঘাত করবে।
সবশেষে বাঁধন বলেন, একজন প্রকৃত নেতা হোন। একজন প্রকৃত মানুষ হোন। নইলে শেখ হাসিনার আরেকটি ব্যর্থ কপি হয়ে থেকে যাবেন এবং বিশ্বাস করুন, সেই ট্র্যাজেডির সিক্যুয়াল কারও দরকার নেই।
দৈএনকে/ জে .আ
