শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫
Natun Kagoj

অক্সফোর্ডে ভর্তি, ৬ বিশ্ব রেকর্ডের মালিক মাহনূর

অক্সফোর্ডে ভর্তি, ৬ বিশ্ব রেকর্ডের মালিক মাহনূর
ছবি: সংগৃহীত
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

মাহনূর চীমা ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন নিয়েই বড় হয়েছেন, এবং এবার সেই স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। ১৮ বছর বয়সী এই তরুণী তার একাডেমিক যাত্রায় অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছেন। পাকিস্তানি বংশদ্ভূদ ব্রিটিশ নাগরিক হিসেবে তিনি নিজের নামে ৬টি বিশ্ব রেকর্ড গড়ে তুলেছেন। এই নজিরবিহীন সাফল্যের কারণে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ও তাকে ভর্তি হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে।

তরুণ এই শিক্ষার্থী ২৪টি এ-লেভেল বিষয়ে সর্বোচ্চ ডিস্টিংশন (৮০ শতাংশের উপর) পেয়ে অ্যাকাডেমিক ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। নতুন করে ভেঙেছেন চারটি বিশ্ব রেকর্ড।

২০০৬ সালে পাকিস্তান থেকে ব্রিটিশ মুলুকে যান মাহনূর। তার বাবা-মা পাকিস্তানি। লাহোরের অধিবাসী ব্যারিস্টার উসমান চীমা ও তৈয়বা চীমার সিদ্ধান্তে ভর্তি হন লন্ডনের স্থানীয় স্কুলে। এরপর থেকেই তার সাফল্যযাত্রার শুরু। এখন সেটি অঙ্কুর থেকে মহীরূহে।

আগের জিসিএসই সাফল্যের সঙ্গে মিলিয়ে এখন মাহনূরের মোট ছয়টি বৈশ্বিক একাডেমিক রেকর্ড রয়েছে। যা মাধ্যমিক স্তরের কোনো শিক্ষার্থীর জন্য সর্বোচ্চ। তিনি মেডিসিন পড়ার জন্য অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন।

মাহনূর বিশ্ব রেকর্ড করেছেন এককভাবে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক এ-লেভেল বিষয় (২৪টি) এবং এক্সটেন্ডেড প্রজেক্ট কোয়ালিফিকেশন (EPQ) ডিস্টিংশন সহ উত্তীর্ণ হয়ে। সবগুলো এক পরীক্ষাবোর্ডের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে।

তার দ্বিতীয় এ-লেভেল রেকর্ড হলো—সবচেয়ে বেশি সংখ্যক A* এবং A গ্রেড। মোট ১৯টি শীর্ষ গ্রেড অর্জন।
তৃতীয়টি একটি সম্মিলিত রেকর্ড: এ-লেভেলে ১১টি A* গ্রেড এবং জিসিএসই/ও লেভেলে আগের ৩৪টি A* গ্রেড — মোট ৪৫টি A* গ্রেড, যা মাধ্যমিক শিক্ষায় কোনো শিক্ষার্থীর জন্য বিশ্বব্যাপী সর্বোচ্চ।

চতুর্থ সম্মিলিত রেকর্ড— সবচেয়ে বেশি সংখ্যক আলাদা বিষয় ডিস্টিংশনসহ উত্তীর্ণ হওয়া। মোট ৫৮টি, যার মধ্যে রয়েছে ২৪টি এ-লেভেল ও ৩৪টি জিসিএসই।
২০২৩ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে মাহনূর ৩৪টি জিসিএসই বিষয় উত্তীর্ণ হন। যার মধ্যে ১০ম বছরে রেকর্ড ১৭টি A* এবং মোট ৩৪টি A* গ্রেড ছিল। এই অর্জন তাকে পঞ্চম ও ষষ্ঠ বিশ্ব রেকর্ড এনে দেয়।

এখন অক্সফোর্ডে মেডিসিন নিয়ে পড়বেন। পাকিস্তানের গণমাধ্যম জিও নিউজকে ফোনে মাহনূর বলেন, ‘অক্সফোর্ডের ডাক পাওয়া ছিল ‘শৈশবের স্বপ্ন পূরণ’। আমি ভীষণ আনন্দিত। অক্টোবরে অক্সফোর্ডে যোগ দেব এবং জীবনের পরবর্তী অধ্যায় শুরু করতে ভীষণ উত্তেজিত। আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ, বিশেষ করে আমার বাবা-মায়ের অন্তহীন ত্যাগের জন্য।’

জিসিএসই সাফল্যের পর মাহনূর স্ট্যানহোপ হাউসে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের সঙ্গে দেখা করেন। পাকিস্তানের গর্ব হিসেবে দুই প্রধানমন্ত্রী তাকে প্রশংসা করেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে একটি ম্যাকবুক উপহারও পান।

মাহনূরের সঙ্গীতেও ডিপ্লোমা (যা একটি স্নাতক ডিগ্রির সমমান) আছে। এলএএমডিএ থেকে অভিনয় ও পাবলিক স্পিকিংয়ে স্বর্ণপদক পেয়েছেন। তিনি মাত্র ১০ দিনে তার EPQ সম্পন্ন করে ১০০% নম্বর পেয়েছেন। বিশ্বের প্রাচীনতম উচ্চ আইকিউ সংস্থা মেনসারও সদস্য মাহনূর।


গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন