ডুবে গেল ৭০০ একর মাছের ঘের: কোটি টাকার ক্ষতির মুখে চাষিরা


দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল মৎস্যভান্ডার নামে খ্যাতবিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উপকূলে রবাগেরহাটের মোংলা উপজেলার চিলা ইউনিয়নের জালছেড়া ব্রিজ এলাকায় চিলা নদীর দক্ষিণ পাড়ের বাঁধ ভেঙে অন্তত ৭০০ একর চিংড়ি ও সাদা মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে।
এতে বাগদা, গলদা, রুই, কাতলা, মৃগেলসহ নানা প্রজাতির কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। ক্ষতির মুখে পড়েছেন শতাধিক মৎস্য চাষি ও ঘের ব্যবসায়ী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার (১৩ আগস্ট) বিকেলে ভরা জোয়ারের প্রবল স্রোতে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ মিটার বাঁধ ভেঙে যায়। মুহূর্তের মধ্যে খালের পানি আশপাশের ঘের ও ফসলি জমিতে ঢুকে পড়ে। এক ঘেরের মাছ অন্য ঘেরে চলে যায়, আর বেশিরভাগ মাছ নদীর স্রোতে ভেসে যায়। স্থানীয়দের দাবি, এ অঞ্চলে লবণাক্ত পানির কারণে চাষাবাদ প্রায় অসম্ভব, তাই চিংড়ি ও সাদা মাছই এখানে প্রধান জীবিকা।
এ ঘটনায় মাছ চাষিদের মধ্যে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে। তারা জানান, বাঁধ পুনর্নির্মাণ ও সরকারি সহায়তা ছাড়া এই ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা অসম্ভব।
চিলা ইউনিয়নের সাবেক সদস্য শেখর চন্দ্র রায় বলেন, “বাঁধ ভেঙে বহু পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। মাছ, জমি, ঘরবাড়ি সবই শেষ।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে বাঁধে ফাটল থাকলেও কর্তৃপক্ষ মেরামতের উদ্যোগ নেয়নি। এবার সাগরে লঘুচাপের প্রভাবে পানি বাড়ায় দুর্বল অংশ ভেঙে যায়।
মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আরাফাত হোসেন জানান, খবর পাওয়ার সাথে সাথেই লোক পাঠানো হয় এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা প্রশাসনের একটি দল ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ সংস্কার ও প্রাথমিক খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম শুরু করেছে।
বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের কারণে সুন্দরবন উপকূলে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে। আবহাওয়া অফিস মোংলা ও সুন্দরবন এলাকায় ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করেছে, এবং নদীর পানি স্বাভাবিকের তুলনায় ২-৩ ফুট বেড়েছে বলে জানা গেছে।
