বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫
Natun Kagoj
শিরোনাম
  • সরকারের নীতি ও অস্বচ্ছ সিদ্ধান্তে ওষুধ শিল্পে সংকট: মির্জা ফখরুল মালয়েশিয়া সফর শেষে দেশের পথে প্রধান উপদেষ্টা গোপালগঞ্জ স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সুজন সিকদার গ্রেপ্তার বিএনপি ক্ষমতায় এলে পুলিশ হত্যা মামলায় ফাঁসানো হতে পারে আনিসুলদের মামলা প্রত্যাহার, জিএম কাদেরের কার্যক্রমে আর বাধা নেই ৫ দফা দাবিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের এক মাসের আলটিমেটাম সরকারকে শিক্ষার্থীদের অবরোধ প্রত্যাহারে ঢাকা-উত্তরাঞ্চল রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক যতীন সরকার আর নেই ঋণখেলাপিরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না: অর্থ উপদেষ্টা তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর: খোলা হলো ৪৪ গেইট
  • সেকাল বনাম একাল, সময়ের পালাবদলের গল্প

    সেকাল বনাম একাল, সময়ের পালাবদলের গল্প
    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    স্মৃতির পাতায় ভেসে ওঠে এক ছবি! শীতের সকালের কুয়াশা, খালি পায়ে ভেজা ঘাস মাড়িয়ে স্কুলে যাওয়া ছোট্ট ছেলেটি, বুকের ভেতর ধুকপুকানি বেড়ে চলেছে। গেটের পাশে দাঁড়িয়ে গুরুজি, হাতে সরু বাঁশের বেত। দেরি করলে বা পাঠ না পারলে সেই বেত নেমে আসবে হাতের তালুতে বা পায়ে। ব্যথা লাগবে ঠিকই, কিন্তু বাড়ি ফিরে মায়ের মুখে শোনা যাবে-“মারলে মেরেছে, মানুষ করার জন্যই।”

    সেকালে শিক্ষক শুধু বইয়ের পাঠ শেখাতেন না, জীবনও শেখাতেন। মাঠে ক্রিকেট খেলার সময়ও যদি ভুল পথে হাঁটতে দেখতেন, কাছে ডেকে বোঝাতেন। কখনও কড়া কথা, কখনও স্নেহের স্পর্শ—এই দুই মিশ্রণেই বড় হতো শিষ্যরা।

    কালের স্রোতে সেই দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। এখন শ্রেণিকক্ষে বেতের জায়গায় এসেছে ল্যাপটপ, প্রজেক্টর আর হাসিমুখে গল্পের মাধ্যমে বোঝানো। শাসনের বদলে উৎসাহ, শাস্তির বদলে বন্ধুত্বপূর্ণ পরামর্শ। শিক্ষকরা এখন জানেন, ভয়ের চেয়ে ভালোবাসা দিয়ে শেখানোয় ফল বেশি মেলে।

    “গুরুজির বেতের ব্যথা অনেক আগেই ভুলে গেছি, কিন্তু তাঁর স্নেহ এখনো মনে গেঁথে আছে।”

    শিক্ষাবিদদের মতে, সেকালের শাসন শিক্ষার্থীদের ভেতর শৃঙ্খলা ও ভয় সৃষ্টি করলেও, তা অনেক সময় আত্মপ্রকাশের স্বাধীনতাকে সীমাবদ্ধ করত। একালের নরম পদ্ধতি শিক্ষার্থীর আত্মবিশ্বাস ও সৃজনশীলতা বাড়াচ্ছে, যদিও শৃঙ্খলা বজায় রাখা এখন আরও চ্যালেঞ্জিং।

    শাসনের ধরন বেতের আঘাত, কঠোর নির্দেশ উৎসাহ, আলোচনা, পরামর্শ শিক্ষক-শিক্ষার্থী দূরত্ব ভয় ও শ্রদ্ধা মিলিত সম্পর্ক স্নেহ ও শ্রদ্ধা মিশ্রিত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক
    অভিভাবকের দৃষ্টিভঙ্গি কঠোর শাসনের সমর্থন শারীরিক শাস্তির বিরোধিতা। ফলাফল শৃঙ্খলা দৃঢ়, সৃজনশীলতা সীমিত সৃজনশীলতা বৃদ্ধি, শৃঙ্খলা চ্যালেঞ্জের মুখে।

    যুগ বদলেছে, কিন্তু শিক্ষকতার মূল লক্ষ্য বদলায়নি মানুষ গড়া। হয়তো আজকের শিক্ষাব্যবস্থায় দরকার সেকালের শৃঙ্খলার দৃঢ়তা আর একালের ভালোবাসার উষ্ণতা একসঙ্গে মেলানো। কারণ বেতের দাগ মুছে যায়, কিন্তু শিক্ষকের স্নেহ ও নির্দেশনা থেকে যায় সারাজীবন।


    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন