ট্রেন্ডে আবারও জিনঘ্যাম প্রিন্টের রাজত্ব


স্কুল ইউনিফর্ম বা পিকনিকে সঙ্গে থাকা সেই চেক কাপড় কি এখনো মনে পড়ে? সেই পুরনো দিনের প্রিন্টটাই আবার ফিরেছে ফ্যাশনের মূলধারায়। 'জিনঘ্যাম' নামের এই চেক প্রিন্ট এখন আরও আধুনিক, আরও রঙিন এবং নিঃসন্দেহে অনেক বেশি স্টাইলিশ।
তবে হ্যাঁ, একটু ভুলভাবে পরলে যেন মনে না হয়, আপনি স্কুলে যাচ্ছেন! তাই চলুন জেনে নিই কীভাবে পরলে এই পুরোনো প্রিন্ট হয়ে উঠবে একেবারে ট্রেন্ডি।
এখন শুধু ফ্রক বা ঘাঘরার প্রিন্ট নয়
জিনঘ্যাম প্রিন্ট দেখলেই আগে মনে হতো ছোটদের ফ্রক কিংবা মেলার ঘাঘরা। কিন্তু সময় এখন বদলেছে। পুরোনো সেই চেনা প্রিন্টই এখন আসছে নতুন রূপে, আধুনিক কাট আর স্টাইলিংয়ে।
হালকা রঙের একটা ট্যাঙ্ক টপের ওপর যদি পরেন জিনঘ্যাম ব্লেজার, পুরো লুকটাই হয়ে যাবে স্মার্ট আর গুছানো। ক্রপ টপের সঙ্গে মিলিয়ে জিনঘ্যাম প্যান্ট পরলে সেটাও দেখাবে কেয়ারফ্রি আর কনফিডেন্ট। শুধু তাই নয়, ওয়ান-শোল্ডার ড্রেস কিংবা ঢিলেঢালা শার্ট ড্রেসেও এখন জিনঘ্যাম বেশ চলছে।
প্রিন্টে এবার অন্য রঙের খেলা
জিনঘ্যাম মানেই কি শুধু কালো-সাদা বা লাল-সাদা? আগে হয়তো এই দুই রঙেই বেশি দেখা যেত। কিন্তু এখন সময় এসেছে নতুন কিছু চেষ্টা করার।
সেজ গ্রিন, ধুলোমাখা নীল কিংবা মাটির ছোঁয়াযুক্ত বাদামি, এই ধরনের নরম, শান্ত রঙে জিনঘ্যাম প্রিন্ট দেখাবে আরও পরিণত আর আধুনিক। চোখে লাগে না, বরং নজর কাড়ে। অফিস হোক বা রাস্তাঘাট, এই রঙের চেক প্রিন্ট আপনাকে দেবে আলাদা এক উপস্থিতি। পরীক্ষা করে দেখতে পারেন, পরিচিত প্রিন্টও নতুন রঙে কতটা বদলে যায়।
নতুন প্রিন্টে অভ্যস্ত হতে বেছে নিন সহজ উপায়
নতুন কোনো প্রিন্ট মানেই সবার আগে সাহস দেখানো নয়। কেউ কেউ একটু দ্বিধায় থাকেন, পরবেন কি না, মানাবে তো? তাদের জন্য সহজ এক উপায় হলো জিনঘ্যাম প্রিন্টকে পরা পরিচিত, বেসিক পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে।
যেমন, একটা সাধারণ সাদা শার্টের সঙ্গে জিনঘ্যাম স্কার্ট খুব ভালো মানিয়ে যায়। আবার একটা চেক প্রিন্টের টপ যদি পরেন স্ট্রেট কাট জিন্সের সঙ্গে, তাহলেও দেখতে লাগবে সিম্পল কিন্তু স্মার্ট। ছোটখাটো এক্সেসরিজেই পুরো লুকটা হয়ে উঠতে পারে পরিপাটি। হাতে বড় একটা ঘড়ি বা কানে হুপ ইয়ারিং, এইটুকুই যথেষ্ট।
নতুন কিছু পরার আগে আত্মবিশ্বাস গড়তে বেসিক পোশাকের সঙ্গেই শুরু করা যায়। একবার অভ্যস্ত হয়ে গেলে, জিনঘ্যাম প্রিন্টেও তৈরি হবে আপনার নিজস্ব স্টাইল।
ঢিলেঢালা কাটই এখন বেশি চলতি
এই সময়ের ফ্যাশনে ছিমছাম নয়, বরং ঢিলেঢালা আর একটু ওভারসাইজড কাটই বেশি জনপ্রিয়। জিনঘ্যাম প্রিন্টকেও সেই ছাঁটে পরলে পুরো লুকটা হয়ে উঠবে সময়ের সঙ্গে মানানসই।
একটা বড়সড় জিনঘ্যাম শার্ট হালকা ঢিলেঢালা প্যান্টের সঙ্গে পরে অর্ধেক শার্ট ঢুকিয়ে দিন প্যান্টে। কাঁধে একটা ছোট ব্যাগ আর চোখে সানগ্লাস থাকলেই হয়ে গেল স্টাইলিশ আর কেয়ারফ্রি লুক। অথবা চাইলে বেছে নিতে পারেন গাঢ় রঙের জিনঘ্যাম প্রিন্টের কো–অর্ড সেট। মানে টপ আর বটম-দু’টিই একই প্রিন্ট ও কাপড়ে তৈরি, কিন্তু কাটে থাকবে নির্ভরযোগ্যতা আর স্বাচ্ছন্দ্য।
এই ধরনের কাটে সাজলে পোশাকটাই বলে দেবে। আপনি জানেন কোনটা এখনকার ধারা, আর কোনটা পুরোনো।
জিনঘ্যাম নাম শুনলেই অনেকের চোখে ভেসে ওঠে ছোটদের ফ্রক কিংবা পুরোনো দিনের ঘরোয়া সাজ। কিন্তু এখন এই ধারণা বদলাচ্ছে। কীভাবে পরছেন, কী সঙ্গে পরছেন, সেটার ওপরই নির্ভর করছে আপনি কেমন দেখাচ্ছেন। সঠিক কাট বেছে নেওয়া, পরিচিত রঙের বাইরে গিয়ে নতুন কিছু চেষ্টা করা আর বেসিক পোশাকের সঙ্গে জিনঘ্যামকে মিলিয়ে পরার মধ্যেই লুকিয়ে আছে স্টাইলের চাবিকাঠি।
সচেতনভাবে যদি স্টাইলিং করেন, তাহলে এই চেক প্রিন্টও হয়ে উঠতে পারে আপনার ফ্যাশনের অন্যতম স্টেটমেন্ট। পুরোনো ধাঁচে না ফিরে, নতুনভাবে ভাবলেই পরিচিত জিনিসেই পাওয়া যায় নতুনত্বের স্বাদ।
দৈএনকে/ জে. আ
