দীর্ঘায়ু ও সুস্থতার রহস্য: জাপানির ৭ কারণ


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে জাপানে মৃত্যুহারের পরিমাণ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল। তবে বর্তমানে দীর্ঘায়ু ও সুস্থ জীবনের ক্ষেত্রে বিশ্বে শীর্ষে চলে এসেছে জাপান। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা রয়েছে জাপানিদের জীবনযাপনের অভ্যাস। চলুন, জেনে নিই তাদের দীর্ঘায়ুর পিছনে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কারণ।
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস
জাপানিরা প্রচুর শাক-সবজি, সামুদ্রিক মাছ, ভাত ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেয়ে থাকে। এতে ভিটামিন, খনিজ ও ফাইটোকেমিক্যাল পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়, যা সুস্থতার বড় সহায়ক। খাদ্যাভ্যাস অবশ্যই মৃত্যুহারের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত মাইলেজ যোগ করে।
রান্নার পদ্ধতি
প্রচুর স্টিমিং, ফার্মেন্টিং, গ্রিলিং ও স্টির-ফ্রাই করা হয়।
খাবার ছোট প্লেটে পরিবেশন ও প্রতিবার এক বাটি স্যুপ খাওয়া হয়। এই ধরনে ওজন নিয়ন্ত্রণ বজায় থাকে। পাশাপাশি দেহের জন্য ফাইবার ও পুষ্টি ভালোভাবে গ্রহণ করা যায়।
চা সংস্কৃতি
উদ্ভিজ্জ প্রোটিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ মাচা বা জাপানি চা নিয়মিত পানের ফলে শরীর রোগ প্রতিরোধে সক্ষম থাকে।
তাজা খাবার
জাপানিরা উৎপাদনের মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে খাবার খান, যা তাদের খাদ্যকে পুষ্টিগুণে অধিক সমৃদ্ধ রাখে।
ছোট প্লেট ও নিয়ন্ত্রিত খাবার
তারা খাবারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে। সাধারণত ৮০ শতাংশ ভর্তি হওয়ার সময়ই প্লেটে আর খাবার নেওয়া হয় না। এর ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণসহ হজম শক্তি বজায় থাকে।
দৈনন্দিন শারীরিক পরিশ্রম
জনসাধারণ গণপরিবহন ব্যবহার করে।
তারা স্টেশনে হেঁটে যায়, ট্রেনে দাঁড়িয়ে থাকে এবং স্টেশন থেকে তাদের কর্মক্ষেত্রে হেঁটে যায়। যদিও দেশে প্রচুর গাড়ি রয়েছে, এটি ব্যবহার করা তাদের জন্য বিলাসিতা বলে মনে করা হয়। জাপানিরা প্রতিদিন সকালে ব্যায়াম করতে পছন্দ করে। এর ফলে তাদের শক্তি বৃদ্ধি পায়, কর্মক্ষেত্রে আরো মনোযোগ দেওয়া হয় এবং ক্রীড়াবিদদের দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।
ব্যাপক ও সহজলভ্য স্বাস্থ্যসেবা
১৯৬০-এর পর থেকে জাপানে স্বাস্থ্যব্যবস্থা ব্যাপক উন্নত। জাপানিতে একজন মানুষ বছরে প্রায় ১২ বার ডাক্তারের কাছে যান। সংখ্যা প্রায় ৪ গুণ বেশি যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায়। আর স্বাস্থ্যব্যবস্থায় সরকার খরচ মাত্র ৮০% জিডিপি।
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, দৈনন্দিন শারীরিক পরিশ্রম ও উন্নত স্বাস্থ্যসেবা—এই তিন স্তম্ভ জাপানের দীর্ঘায়ুর গোপন রহস্য।
দৈএনকে/ জে. আ
