সাকিবের রাজনৈতিক ভূমিকা শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি বেঈমানি: আমিনুল


বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে নিয়ে মন্তব্য করেছেন বিএনপি ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক ও জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক। তিনি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে মাগুরা-১ আসন থেকে নির্বাচিত হয়ে সাকিব একটি বিতর্কিত সরকারের অংশ হয়েছেন।
আমিনুল হকের দাবি, সরকার পতনের আগেই জনগণের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়েছেন সাকিব। তিনি বলেন, “সাকিব যদি একটি অবৈধ সরকারের অংশ হয়ে থাকেন, তাহলে সে বিষয়ে বিচার ইতিহাসই করবে।”
তিনি আরও বলেন, “সাকিবের মতো তারকা কেউ যদি জনআকাঙ্ক্ষার বিপক্ষে অবস্থান নেন, তা হলে সেটি শুধু রাজনৈতিক নয়, নৈতিক প্রশ্নও তুলে দেয়। শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি কেউ করলে তা ইতিহাস কখনও ক্ষমা করে না।”
সাকিব আল হাসান, দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সফল তারকা, এখন বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মাগুরা-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই তাকে ঘিরে সমালোচনা বেড়ে যায়।
খেলোয়াড়ি জীবন চলাকালেই রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠা সাকিবের এই পদক্ষেপ দেশের ক্রীড়াঙ্গন থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মাঝেও মিশ্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়। বিশেষ করে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সরকারবিরোধী আন্দোলনের সময় তার অবস্থান ও বক্তব্য নিয়ে তীব্র জনরোষ দেখা দেয়।
জানা গেছে, গত বছরের জুলাই থেকেই তিনি দেশের বাইরে অবস্থান করছেন এবং সরকার পরিবর্তনের পর আর দেশে ফেরেননি। যদিও চলতি বছর অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজে খেলার কথা ছিল তার, তবে পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় সেই সফরেও তাকে দেখা যায়নি।
সাকিবের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে একাধিক মামলা বিচারাধীন রয়েছে এবং আদালত অবমাননার অভিযোগে তার নামে কারাদণ্ডের আদেশও রয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।
সম্প্রতি সাকিবকে নিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক ও বিএনপি ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক। তিনি বলেন, "সাকিব একজন অবৈধ সংসদের এমপি হিসেবে ইতিহাসের কাছে দায়বদ্ধ। খেলোয়াড় থাকা অবস্থায় রাজনৈতিক প্রলোভনে পড়ে যেভাবে তিনি বিতর্কিত সরকারের অংশ হয়েছেন, তা ভুলে গেলে শহীদদের আত্মত্যাগকে অবমূল্যায়ন করা হবে।"
এর আগেও সাকিবের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নিয়ে একই ধরনের বক্তব্য দিয়েছিলেন আমিনুল। তিনি বলেছিলেন, "সাকিব স্বেচ্ছায় স্বৈরাচার সরকারের অংশ হয়ে জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। এর জন্য অবশ্যই একদিন তার জবাবদিহি করতে হবে।"
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের নির্বাচনেও রাজনীতিতে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন সাকিব। সে সময় তিনি মনোনয়ন না পেলেও, ২০২৪ সালে তিনি তা অর্জন করে সংসদে প্রবেশ করেন। তবে এ সিদ্ধান্তই এখন তার জন্য সমালোচনার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
