গর্ভবতী নারী কর্মকর্তাকে রাঙামাটিতে বদলি: বেতারের ডিজির বিরুদ্ধে ‘অমানবিকতা’র অভিযোগ


বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক (ডিজি) এএসএম জাহিদের বিরুদ্ধে বদলি বাণিজ্যসহ একাধিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সর্বশেষ অভিযোগটি এসেছে এক গর্ভবতী নারী কর্মকর্তার প্রতি ‘অমানবিক’ আচরণ ঘিরে।
সূত্র মতে, গত ১০ মাসে বেতারে অন্তত ৪৫০ জন কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে, যার পেছনে কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ সময় বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা আর্থিক লেনদেন না করায় দূরবর্তী ও প্রত্যন্ত এলাকায় বদলির শিকার হয়েছেন বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।
বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা সর্বশেষ ঘটনাটি একজন গর্ভবতী নারী কর্মকর্তাকে ঘিরে। তিনি ঢাকায় কর্মরত ছিলেন এবং তার চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী দীর্ঘপথ ভ্রমণ তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বদলির আদেশ প্রত্যাহারে বার্তা বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা অনুরোধ জানালেও তা গ্রহণ করেননি ডিজি।
তবে সবচেয়ে বিস্ময়কর হলো—ওই কর্মকর্তা অর্জিত ছুটির (Earned Leave) আবেদন করলেও সেটিও নাকচ করে দেওয়া হয়। ফলে, চিকিৎসকের বারণ এবং পারিবারিক অবস্থান সত্ত্বেও তাকে রাঙামাটি বদলি করা হয়, যা কর্মচারীদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
বেতার অধিদপ্তরের অভ্যন্তরীণ সূত্রগুলো বলছে, দুদকের চলমান দুর্নীতির অনুসন্ধান থামাতে চেষ্টা চালাচ্ছেন বর্তমান ডিজি।
অভিযোগ রয়েছে, ডিজি জাহিদ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সময়ে বিদেশ সফরসঙ্গী ছিলেন এবং সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে দীর্ঘদিন নানা সুবিধা ভোগ করে আসছেন। তবে বর্তমান সরকার পরিবর্তনের পর তিনি রাজনৈতিক অবস্থান পাল্টে বিএনপি ঘনিষ্ঠ হিসেবে নিজেকে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন।
এ বিষয়ে বেতারের ডিজি এএসএম জাহিদের বক্তব্য জানার জন্য একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
এদিকে মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, একজন গর্ভবতী নারীর স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় না নিয়ে দূরবর্তী এলাকায় বদলি করাটা শুধু প্রশাসনিক নয়, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেও প্রশ্নবিদ্ধ। তারা এর সুষ্ঠু তদন্ত ও সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহির দাবি জানিয়েছেন।
