অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত ছিল অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট প্রণয়ন: আমীর খসরু


বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, জুলাই–আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের বাজেট অব্যাহত রাখা অপ্রয়োজনীয় ছিল। তিনি মনে করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত ছিল একটি সীমিত এবং অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট প্রণয়ন করা।
এ মন্তব্য তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে রবিবার (১০ আগস্ট) রাজধানীর একটি হোটেলে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডি আয়োজিত এক সংলাপে প্রদান করেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের বাজেট চালিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন ছিল না, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট দেওয়া উচিত ছিল।’
কথা বলার সুযোগ অব্যাহত থাকলে আপনা–আপনিই অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলেও মনে করেন তিনি। আমীর খসরু বলেন, ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারের পতনের পর বাংলাদেশের মানুষের মনোজগতে বিশাল পরিবর্তন এসেছে। এই পরিবর্তন বুঝতে না পারলে কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তি টিকতে পারবে না।
পাশাপাশি, সাংঘর্ষিক রাজনৈতিক সংস্কৃতি থেকেও সবাইকে বেরিয়ে আসার পরামর্শ দেন তিনি। বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, বক্তব্যের মাধ্যমে বিষোদগার বন্ধ করতে হবে। গণতন্ত্র মানে অন্যজনের কথা শুনে সহ্য করা, তার মতকে সম্মান দেওয়া।
‘রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন না হলে সংস্কার অসম্ভব। বিপ্লবোত্তর যে দেশ দ্রুত নির্বাচন করেছে, তারা ভালো করেছে; যারা দীর্ঘ সময় নিয়েছে, সেখানে অন্তঃকোন্দল বেড়েছে।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার দিকে যাচ্ছে। এটা একটি অন্তর্বর্তী সরকার। তাদের প্রাথমিক দায়িত্ব যেখান থেকে গণতন্ত্র ধ্বংস হয়েছে, সেখান থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা। জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে।
আমীর খসরু বলেন, ঐকমত্যের প্রচেষ্টা একটি ভালো উদ্যোগ। আলাদা দর্শন থাকবে, কিন্তু সবাইকে এক জায়গায় আসতে হবে—এটা বাকশালের আদর্শ। চাপিয়ে দেওয়া কোনো পরিবর্তন টেকসই হবে না। অর্থনৈতিক উন্নতি করা সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।
এই সরকারের সময় বিনিয়োগ আসেনি মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, এতে তাদের দোষ নেই। বিনিয়োগে বাংলাদেশ অনেক নিচে। সিরিয়াস ডিরেগুলেশন ও সিরিয়াল লিবারেলিজম ছাড়া দেশের অর্থনীতি এগিয়ে নেওয়া যাবে না।
‘সরকারের অনেক দায়িত্ব বেসরকারি খাতে ছেড়ে দিতে হবে। ট্রেড বডিগুলোর হাতে অনেক কার্যক্রম তুলে দিয়ে সরকারকে নির্ভার হতে হবে। ফিজিক্যাল কন্ট্রাক্ট না কমালে দুর্নীতি কমানো যাবে না। দেশে যত নিয়ন্ত্রণ (রেগুলেশন) থাকবে, তত দুর্নীতি বাড়বে। অর্থনীতিকে গণতান্ত্রিক করতে হবে, সবার অংশগ্রহণ লাগবে,’ যোগ করেন তিনি।
