বিদ্যুৎ খাতের দ্বন্দ্ব মেটাতে বাংলাদেশ-আদানি গ্রুপ আন্তর্জাতিক সালিশে সম্মত

বাংলাদেশ এবং ভারতের আদানি পাওয়ার সংস্থার মধ্যে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ ও ব্যয় হিসাব নিয়ে যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছিল, তা মেটানোর জন্য দুই পক্ষ আন্তর্জাতিক সালিশ প্রক্রিয়ায় যেতে সম্মত হয়েছে।
এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে দুই দেশই চায়, বিদ্যুৎ খাতের কার্যক্রম সুষ্ঠু ও স্বচ্ছভাবে চালু রাখা যায় এবং আর্থিক অমীমাংসিত বিষয়গুলো সমাধান করা যায়।
বিদ্যুৎ খাতের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সালিশ প্রক্রিয়া দুই দেশের এনার্জি সেক্টরে সহযোগিতা ও দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার দিকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
চুক্তির আওতায়, দুই পক্ষ আগামী সময়ে বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ, ব্যয় হিসাব এবং প্রয়োজনীয় আর্থিক সমন্বয় নিয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে।
ভারতের ধনকুবের গৌতম আদানির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানটি ২০১৭ সালের চুক্তি অনুযায়ী পূর্ব ভারতের গড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্র (ক্ষমতা ১,৬০০ মেগাওয়াট) থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে, যা দেশের মোট চাহিদার প্রায় ১০ শতাংশ।
আদানি পাওয়ারের মুখপাত্র সোমবার (৩ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে জানান, কিছু ব্যয় ও বিলিং নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। উভয় পক্ষ সালিশ আহ্বানে সম্মত হয়েছে। আমরা দ্রুত ও পারস্পরিকভাবে লাভজনক সমাধানে আশাবাদী।
তবে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান রয়টার্স-কে বলেন, আলোচনা প্রক্রিয়া এখনো চলছে, প্রয়োজনে সালিশে যাওয়া হবে।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার অভিযোগ করেছিল যে, ভারত সরকারের কর সুবিধা গড্ডা প্লান্ট বিদ্যুৎ মূল্যে প্রতিফলিত করেনি, যা চুক্তি লঙ্ঘনের শামিল।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ আদানির কাছ থেকে প্রতি ইউনিট ১৪.৮৭ টাকায় বিদ্যুৎ কিনেছে, যা ভারতের অন্যান্য কোম্পানির গড় দামের (৯.৫৭ টাকা) তুলনায় অনেক বেশি।
গত সপ্তাহে আদানি পাওয়ার জানায়, বাংলাদেশের কাছে তাদের বকেয়া বিল এখন ১৫ দিনের সমপরিমাণে নেমে এসেছে, যেখানে মে মাসে তা ছিল প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলার।
কোম্পানিটি আরও জানিয়েছে, তারা বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ এবং বাংলাদেশকে নিরবচ্ছিন্ন ও প্রতিযোগিতামূলক দামে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখবে।