বিশ্ব বন্ধু দিবস আজ: অদৃশ্য ভালোবাসার শক্তি ও স্মৃতির দিন


জীবনের পথচলায় কিছু সম্পর্ক রক্তের না হয়েও হৃদয়ের সবচেয়ে কাছের হয়ে ওঠে—তেমনই এক সম্পর্ক বন্ধুত্ব।
বন্ধু সেই মানুষ, যার কাঁধে নিশ্চিন্তে ভর দেওয়া যায়, যে কোনো হিসাব ছাড়াই পাশে দাঁড়ায়।
বন্ধুত্ব মানেই গভীর বোঝাপড়া, না বলা কথা বোঝার অসীম ক্ষমতা, আর ছোট ছোট মুহূর্তে বড় ভালোবাসার প্রকাশ। হয়তো প্রতিদিন দেখা হয় না, আড্ডার ভাষা বদলে গেছে সময়ের সাথে, তবু মনের কোনে জমে থাকা বন্ধুত্ব ঠিকই জীবন্ত হয়ে ওঠে এই বিশেষ দিনে।
বন্ধুত্ব উদযাপনের সূচনা আধুনিককালে হলেও, মানুষের হৃদয়ে এর শেকড় অনেক গভীরে। এক শতাব্দী আগেও ‘বন্ধু দিবস’ নামে কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছিল না। ১৯৩০-এর দশকে মার্কিন উদ্যোক্তা জয়েস ক্লাইড হল প্রথম ‘বন্ধু দিবস’ পালনের ধারণা আনেন। পরে ১৯৫৮ সালে প্যারাগুয়ের চিকিৎসক র্যামন আর্তেমিও ব্রাচো এই দিবসকে আন্তর্জাতিকভাবে পালনের প্রস্তাব দেন। আর জাতিসংঘ ২০১১ সালে ৩০ জুলাইকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘আন্তর্জাতিক বন্ধু দিবস’ ঘোষণা করে।
তবে বাংলাদেশ ও ভারতসহ অনেক দেশেই আগস্টের প্রথম রোববার বন্ধু দিবস হিসেবে পালন করা হয়। সামাজিকমাধ্যমে এদিন ভরে ওঠে অনুভবের ঝরায়। দেখা যায় ছবির ক্যারোসেল, পুরোনো আড্ডার স্মৃতি অথবা ‘তোকে মনে পড়ে’ বার্তা।
বন্ধু মানে এমন কেউ, যার সঙ্গে কোনো মুখোশ পরে কথা বলতে হয় না। ‘ভালো আছিস?’ বলা লাগে না, কারণ চোখের দৃষ্টিতেই সব বলা হয়ে যায়। বন্ধু মানে চায়ের দোকানে বিকেলের হালকা বাতাস, ক্যাম্পাসের নির্দিষ্ট কর্নার, নদীর পাড়ের নিশ্চুপ হাঁটাচলা কিংবা কোনো সন্ধ্যায় নিঃশব্দে পাশে বসে থাকা।
এই দিনে কেউ কেউ ফোন করে পুরোনো বন্ধুদের, কেউ খুঁজে নেয় সেই পুরোনো আড্ডার জায়গাগুলো। কেউ হয়তো লিখে ফেলে একটি চিঠি—প্রিয় বন্ধুর উদ্দেশে, যা কখনো বলা হয়নি মুখে।
বন্ধুত্বের মানে সময়ের সঙ্গে বদলায় না, শুধু রূপ নেয়। স্কুলের বেঞ্চ থেকে কর্মস্থলের করিডোর— বন্ধুত্ব থাকে, রয়ে যায় অন্তরের গভীরে। আজ সেই সম্পর্কের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর দিন। আজ বন্ধুত্বের জয়গান গাওয়ার দিন। সবাইকে বন্ধু দিবসের শুভেচ্ছা।
