সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
Natun Kagoj
শিরোনাম
  • কুবির বার্ষিক বাজেট পাশ ৭৬ কোটি ১০ লাখ টাকা ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রতিমন্ত্রী অবৈধ পন্থায় কয়লা আমদানি করে অর্থ বিদেশে পাচার করেছে : হাবিব ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড ৪২৯ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, হাসপাতালে ভর্তি নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে চীন কাজ করতে চায়: মির্জা ফখরুল একে-৪৭ নয়, উপদেষ্টার ছিল লাইসেন্সকৃত একটি অস্ত্র: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রমনা রেস্তোরাঁ দখলে নিয়ে বিএনপি নেতার ব্যবসা গাজীপুরে চুরির অপবাদে শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা, কারখানায় ছুটি অর্থবছরের শেষ দিনে ব্যাংকে লেনদেন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সাদা পোশাকে ব্যর্থতা, রঙিন পোশাকে প্রত্যাবর্তনের আশা মালয়েশিয়ায় আটক হওয়া বাংলাদেশিরা আইএসের সঙ্গে যুক্ত
  • দলবদলের রহস্যে মোবারক হোসেন: হত্যা চেষ্টা মামলার আসামি কীভাবে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন?

    দলবদলের রহস্যে মোবারক হোসেন: হত্যা চেষ্টা মামলার আসামি কীভাবে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন?
    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    কেরানীগঞ্জের রাজনীতিতে নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন মোবারক হোসেন। তিনি এক সময় জিনজিরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সক্রিয় নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তাঁর রাজনৈতিক পরিচিতি শুধু এখানেই সীমাবদ্ধ নয়—তাঁর রয়েছে কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী মো. বিল্লাল হোসেন এবং ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হাজী মো. মজিবুর রহমানের আত্মীয়তার সম্পর্কও।

    এই সম্পর্ক ও পটভূমি থাকা সত্ত্বেও, মোবারক হোসেন বর্তমানে নিজেকে বিএনপির সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে দাবি করছেন, যা রাজনৈতিক অঙ্গনে বিস্ময় ও সন্দেহের জন্ম দিয়েছে।

    বিশ্বস্ত সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, মোবারক হোসেন নিজেকে বিএনপির নেত্রী এবং ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিপুন রায়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন। শুধু তা-ই নয়, তিনি ‘কেরানীগঞ্জ ওয়াশিং ফ্যাক্টরি মালিক সমিতি’র সভাপতি হিসেবে নিজেকে ঘোষণা করেছেন এবং দাবি করেছেন, এই কমিটি গঠনে নিপুন রায়ের প্রত্যক্ষ সমর্থন রয়েছে।

    মোবারক হোসেনের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের হওয়া একটি হত্যা চেষ্টার মামলার তথ্য পাওয়া গেছে (মামলা নম্বর: ১৭)। মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, গত জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র ও সাধারণ জনগণের উপর গুলির ঘটনার সাথে তাঁর সম্পৃক্ততা রয়েছে এবং তিনি আসামি তালিকায় ২২ নম্বরে রয়েছেন।

    বিচারাধীন এমন একটি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকার পরও তিনি কেরানীগঞ্জ এলাকায় নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, যা প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা এবং রাজনৈতিক প্রভাবশালী মহলের মদতকে ইঙ্গিত করে।

    কেরানীগঞ্জ দক্ষিণের রাজনৈতিক কর্মী এবং সাধারণ জনগণ মোবারক হোসেনের আচরণ এবং রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে উদ্বিগ্ন। একজন মামলার আসামি কীভাবে প্রকাশ্যে নিজেকে রাজনৈতিক নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন, তা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক প্রশ্ন উঠেছে।

    এছাড়াও, আওয়ামী লীগের সঙ্গে অতীত ও পারিবারিক ঘনিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও বিএনপির ব্যানারে নিজের অবস্থান তৈরি করার প্রচেষ্টা তাঁকে আরও বিতর্কিত করেছে।

    বিশ্লেষকদের মতে, মোবারক হোসেনের মতো বিতর্কিত ব্যক্তিদের ব্যবহার করে কোনো রাজনৈতিক শক্তি যদি লাভবান হতে চায়, তবে সেটি শুধু রাজনৈতিক অঙ্গনকেই কলুষিত করে না, বরং আইনের শাসনের ওপরও চরম আঘাত হানে। স্থানীয় প্রশাসনের নীরবতা এবং রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরীণ দ্বৈত নীতি এই প্রক্রিয়াকে আরও সহায়ক করে তুলছে।

    মোবারক হোসেনের দলবদল, মামলার আসামি হিসেবে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং বিএনপির ছত্রছায়ায় প্রকাশ্য রাজনীতিতে ফিরে আসা—সব মিলিয়ে কেরানীগঞ্জে এক গভীর রাজনৈতিক সংকট ও আইনি শৈথিল্যের চিত্র ফুটে উঠছে। এ ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আইনের শাসন নিয়ে প্রশ্ন ও রাজনৈতিক অনাস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

    এই পরিস্থিতিতে প্রয়োজন একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্ত, যাতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয় এবং কেরানীগঞ্জে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক রাজনীতির পথ উন্মুক্ত হয়।


    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    সর্বশেষ