হাইকোর্টের সিদ্ধান্তে আপত্তি, সুপ্রিম কোর্টে গেলেন ইমরান খান


পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানের জামিন আবেদন খারিজ করেছে লাহোর হাইকোর্ট। মে ৯-এ সংঘটিত সহিংসতার ঘটনায় দায়ের হওয়া আটটি মামলায় জামিনের আবেদন করেছিলেন তিনি।
এর আগে সন্ত্রাসবিরোধী আদালতেও জামিন না পেয়ে হাইকোর্টে যান ইমরান খান। তবে সেখানেও তার আবেদন গ্রহণযোগ্য হয়নি। ফলে শনিবার (২৬ জুলাই) তিনি সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছেন বলে জানিয়েছে দেশটির শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম ডন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৯ মে ইমরান খানের গ্রেপ্তারের পর দেশজুড়ে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় পিটিআইয়ের অনেক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ ও সহিংসতার অভিযোগে মামলা করা হয়।
শনিবার প্রবীণ আইনজীবী সালমান সাফদারের মাধ্যমে দায়ের করা এই পিটিশনে বলা হয়েছে, ইমরান খানের বিরুদ্ধে ৯ মে’র সহিংসতা উসকে দেওয়ার ও ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
তবে পিটিশনে যুক্তি দেওয়া হয়েছে, অভিযোগ আনা অপরাধ সংঘটনের সময় ইমরান খান জাতীয় জবাবদিহিতা ব্যুরোর হেফাজতে ছিলেন। তাই সহিংসতায় তার সম্পৃক্ততা অসম্ভব।
এর আগে ইমরান খানের বোন আলীমা খান দাবি করেন, আদিয়ালা জেল কর্তৃপক্ষ মামলার নথিপত্র জব্দ করে পিটিশন দাখিল বাধাগ্রস্ত করছে।
নতুন এই আপিলে বলা হয়েছে, পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা গত দুই বছর ধরে ‘অভূতপূর্ব রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার’।
পিটিশনে দাবি করা হয়েছে, মামলার ঘটনাস্থলের সঙ্গে ইমরান খানের কোনও ‘বিশ্বাসযোগ্য’ সংযোগ প্রমাণ করতে পারে না প্রসিকিউশন।
২০২৩ সালের ৯ মে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ইমরান খানের ‘অবৈধ ও অযৌক্তিক’ গ্রেফতারের পরে, লাহোর ও ইসলামাবাদে একাধিক এফআইআর দায়ের করা হয়। তবে কোনোটিতেই ষড়যন্ত্রের বিষয়ে নির্দিষ্ট অভিযোগ বা বিস্তারিত তথ্য ছিল না বলে দাবি করা হয়েছে।
পিটিশনে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, যদি প্রসিকিউশনের দাবি অনুযায়ী পুলিশ ৭ মে থেকেই সহিংসতার ষড়যন্ত্র সম্পর্কে জানত, তাহলে তারা হামলা ঠেকাতে পদক্ষেপ নেয়নি কেন?
পিটিশনে আরও অভিযোগ করা হয়েছে, ইমরান খানকে এই মামলাগুলোতে ‘রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পরিকল্পনার অংশ হিসেবে’ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর উদ্দেশ্য তার কারাবাস দীর্ঘায়িত করা, হয়রানি করা এবং তার জনমত ক্ষুণ্ন করা।
জামিন না দেওয়ার কোনও কারণ ছিল না বলেও দাবি করা হয়েছে পিটিশনে।
পিটিশনে দাবি করা হয়েছে, লাহোর হাইকোর্ট প্রসিকিউশনের সাজানো ও ভুয়া প্রমাণের উপর ভিত্তি করে ইমরান খানকে জামিন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এছাড়া উচ্চ আদালত খেয়াল করেনি যে, প্রসিকিউশন ধারাবাহিকভাবে তাদের বক্তব্য পরিবর্তন করেছে এবং মামলার বর্ণনা বারবার পাল্টাচ্ছে।
শনিবারই ইমরান খানের বোন আলিমা খান দাবি করেন, তার ভাইয়ের আইনি দলকে আদিয়ালা জেলে তোশাখানা ২ মামলার শুনানিতে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
তিনি দাবি করেন, জেল কর্তৃপক্ষ বিচারকের আদেশ লঙ্ঘন করেছে। তিনি বারবার বলেছেন যে, ইমরান খান ও বুশরা বিবির আইনজীবীদের জেলে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হোক।
