রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
Natun Kagoj

পুলিশের পোশাকের অন্তরালে ছাত্রলীগ ক্যাডার মারুফের হিরোইজম

পুলিশের পোশাকের অন্তরালে ছাত্রলীগ ক্যাডার মারুফের হিরোইজম
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

* নেপথ্যে ওয়ারী সাবেক দাপটে এডিসি শাহিদুর 
* বহাল স্বপদে উত্তরা ট্রাফিক ডিভিশনের
* উত্তরাধিকারসূত্রে বিশ্বাসী আওয়ামী মতাদর্শে 


চোখে কালো চমশা। স্পাইক চুল। হাতে ওয়াকিটকি। গায়ে পুলিশের পোশাক। প্রথম দর্শনেই দেখে বোঝার কোন উপায় নেই তিনি পুলিশের পোশাকের অন্তরালে ছাত্রলীগের সাবেক পদ থাকা সক্রিয় ক্যাডার। বলছিলাম উত্তরা ট্রাফিক ডিভিশনে কর্মরত থাকা পুলিশ সার্জেন্ট আব্দুল অল মারুফের কথা। এ যেন ধরাকে সরাজ্ঞান করার মতো অবস্থা। সরকারি টাকায় কেনা পুলিশের পোশাকের অন্তরালে এখনো তিনি সেজে আছেন রাজা। 

প্রাচীন প্রবাদ সব আমলেই তিনি রাজা এই কথাটি যেন বাস্তবতায় রূপ দিল পুলিশের এই কর্মকর্তা। নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সোহাগ নাজমুল, কমিটির উপ-স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয় সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে এখনো স্বপদে বহাল রয়েছেন ঢাকা মেট্রপলিটন পুলিশের উত্তরা ট্রাফিক ডিভিশনের পুলিশ সার্জেন্ট আব্দুল্লা আল-মারুফ। 

নতুন কাগজের দীর্ঘ অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য। 

অনুসন্ধান বলছে, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী এলাকা ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুরের দত্তনগর কৃষিখামার এলাকায় জন্ম এই ট্রাফিক সার্জেন্ট আব্দুল্লাহ আল-মারুফের। ছোট বেলা থেকেই উত্তরাধিকারসূত্রে আওয়ামী মতাদর্শ তার। সুচতুর পুলিশ এই সাজেন্ট ভবিষৎত চিন্তায় পেশি শক্তি বা জেলা শহরে প্রভাব চার্চায় বিয়ে করেছেন নিজ জেলা শহর, ঝিনাইদহে। তার সহধর্মী পেশায় একজন ব্যাংকার। মারুফের আওয়ামী দুঃশাসন আমলে কামানো কালো টাকায় তৈরি করা নামে বেনামে বহু সম্পদের মালিক তার স্ত্রীসহ স্ত্রীর পরিবারের অন্য নরা। যা নতুন কাগজকে নিশ্চিত করেছে একাধিক বিসস্ত সূত্র।

একটি বিশেষ সূত্রের বরাত, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ঝিনাইদহ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নবী নেওয়াজের কাছ থেকে তার স্বাক্ষরিত প্যাডে ব্যক্তিগত সুপারিশপত্র নেওয়াসহ পুলিশের চাকুরি প্রাপ্তিতে সার্জেন্ট মারুফকে সহায়তা করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) ওয়ারী বিভাগের তৎকালীন দাপটে এডিসি শাহিদুর রহমান। 

উল্লেখ্য, ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারু আজিম আনারকে অপহরণের পর হত্যার ঘটনায় ঢাকায় হওয়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন এই এডিসি শাহিদুর রহমান। যাকে তৎকালীন সময়ে বহুল বিতর্কের কারনে বদলি করে বরিশাল জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

অপরদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উত্তরা ট্রাফিক ডিভিশনে একাধিক ট্রাফিক জানান, পতিত সরকারে আমলে মারুফ প্রায় ৭ বছর গাজীপুরে মেট্রোপলিটন পুলিশে ছিলেন। তখন তার ভয়ে তটস্থ থাকতো তার উচ্চপদস্থরা, এখনো উত্তরা ট্রাফিক ডিভিশন জুড়ে এক মুর্তিমান আতঙ্ক এই পুলিশ সার্জেন্ট মারুফ। একান্তে চায়ের আড্ডায় “পুলিশের পোশাকের অন্তরালে ছাত্রলীগের ক্যাডার মারুফের হিরোইজম” এই কথা রসিকতা করে বলতে শোনা গেছে একাধিক ট্রাফিক সাজেন্টকে।  

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়ে ঢাকা মেট্রপলিটন পুলিশের উত্তরা ট্রাফিক ডিভিশনের সার্জেন্ট মারুফের সাথে (২৩ অক্টোবর) বৃহস্পতিবার বিকেলে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ভাই যা পারে লেখেন। আমি যদি ছাত্রলীগের কোনো পোস্টে থাকি তাহলে লেখেন। এটা আপনার ব্যাপার। 


গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

আরও পড়ুন