বিশ্বজুড়ে মানসিক স্বাস্থ্য সংকট, মৃত্যু সংখ্যা কোটি ছাড়ালো


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে ৩০০ কোটিরও বেশি মানুষ স্নায়বিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে। এসব রোগের কারণে প্রতিবছর ১ কোটি ১০ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।
জাতিসংঘের সংস্থাটি সতর্ক করেছে, চিকিৎসার অপ্রতুলতা ও যথাযথ যত্নের অভাবে প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষ জীবন হারাচ্ছে।
সংস্থাটির সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী ৩০০ কোটিরও বেশি মানুষ কোনো না কোনো স্নায়বিক বা মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত। প্রতিবছর এসব রোগের কারণে ১ কোটি ১০ লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।
নীতিমালা ও তহবিলের অভাব
বিশ্বের মাত্র ৬৩টি দেশে স্নায়বিক রোগের জন্য জাতীয় নীতিমালা আছে। আর ৩৪টি দেশ এই বিষয়ে নির্দিষ্ট বাজেট বরাদ্দ করে।
ডব্লিউএইচও কর্মকর্তারা বলেছেন, এই ব্যবধান বৈশ্বিকভাবে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ার জরুরি প্রয়োজনীয়তাকে স্পষ্ট করে — যাতে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা ও গবেষণাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় বৈষম্য
ডব্লিউএইচও-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানসিক ও স্নায়বিক রোগগুলো যথাযথভাবে নির্ণয় ও চিকিৎসা করা সম্ভব হলেও, নিম্নআয়ের ও গ্রামীণ অঞ্চলের লাখো মানুষ এখনো সেবার বাইরে থেকে যাচ্ছে।
অপ্রতুল স্বাস্থ্য অবকাঠামো, দারিদ্র্য, এবং সামাজিক কলঙ্ক অনেককেই চিকিৎসা নিতে বাধা দেয়। সংস্থাটি বলেছে, সময়মতো রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা পাওয়া গেলে অসংখ্য মৃত্যু রোধ করা সম্ভব এবং লাখ লাখ মানুষের জীবনের মান উন্নত হবে।
জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান
ডব্লিউএইচও’র সহকারী মহাপরিচালক জেরেমি ফারার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি মানুষ মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে। আমরা তাদের সুস্থতা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিম্নআয়ের দেশগুলোতে গবেষণা, স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামো এবং প্রশিক্ষিত পেশাদারদের অভাব ক্রমশ চিকিৎসা ব্যবধানকে বাড়িয়ে তুলছে।’
ফারারের মতে, নিম্নআয়ের দেশগুলোতে ধনী দেশগুলোর তুলনায় স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞের সংখ্যা ৮০ গুণ কম। এই বৈষম্যের ফলে কোটি কোটি মানুষ প্রয়োজনীয় স্নায়ুবিষয়ক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, যা বৈশ্বিক মানসিক স্বাস্থ্য সংকটকে আরও তীব্র করছে।
ডব্লিউএইচও সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন তারা তথ্যভিত্তিক ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা বৃদ্ধি, সহজপ্রাপ্যতা উন্নয়ন এবং স্বাস্থ্যনীতিতে মানসিক স্বাস্থ্যকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়।
দৈএনকে/রে. আ
