বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫
Natun Kagoj
শিরোনাম
  • সরকারের নীতি ও অস্বচ্ছ সিদ্ধান্তে ওষুধ শিল্পে সংকট: মির্জা ফখরুল মালয়েশিয়া সফর শেষে দেশের পথে প্রধান উপদেষ্টা গোপালগঞ্জ স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সুজন সিকদার গ্রেপ্তার বিএনপি ক্ষমতায় এলে পুলিশ হত্যা মামলায় ফাঁসানো হতে পারে আনিসুলদের মামলা প্রত্যাহার, জিএম কাদেরের কার্যক্রমে আর বাধা নেই ৫ দফা দাবিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের এক মাসের আলটিমেটাম সরকারকে শিক্ষার্থীদের অবরোধ প্রত্যাহারে ঢাকা-উত্তরাঞ্চল রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক যতীন সরকার আর নেই ঋণখেলাপিরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না: অর্থ উপদেষ্টা তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর: খোলা হলো ৪৪ গেইট
  • মা-বাবা না চাইলে বিয়ে কীভাবে সম্ভব?

    মা-বাবা না চাইলে বিয়ে কীভাবে সম্ভব?
    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

    ইসলামে বিয়ে কেবল একটি সামাজিক চুক্তি নয়, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতও বটে। তাই বিয়ের বিষয়ে শরিয়ত স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে। কিন্তু যখন মা-বাবা যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া বিয়েতে আপত্তি জানান, তখন সন্তান কী করতে পারে? চলুন জেনে নিই শরিয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে করণীয়।

    ১. ইসলামে বিয়ের গুরুত্ব ও পিতা-মাতার মর্যাদা

    রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন,

    "বিয়ে আমার সুন্নত; যে আমার সুন্নত থেকে বিমুখ হয়, সে আমার দলভুক্ত নয়।"— সুনান ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১৮৪৬

    অন্যদিকে, আল্লাহ তাআলা পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহারকে ফরজ করে বলেন,

    "তোমার প্রতিপালক আদেশ দিয়েছেন, তাঁকে ছাড়া আর কাউকে উপাসনা করো না এবং পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করো।"— সুরা বনি ইসরাইল: ২৩

    এ থেকে বোঝা যায়, ইসলাম যেমন বিয়েকে গুরুত্ব দেয়, তেমনি মা-বাবার সন্তুষ্টিকেও সমানভাবে গুরুত্ব দেয়।

    ২. মা-বাবার অসম্মতিতে বিয়ের অনুমতি শরিয়তের দৃষ্টিতে যদি নিচের শর্তগুলো পূরণ হয়, তবে মা-বাবার অসম্মতি সত্ত্বেও বিয়ে বৈধ হতে পারে:

    শরয়ি সক্ষমতা: শারীরিক, মানসিক ও আর্থিকভাবে বিয়ের উপযুক্ত হওয়া

    গুনাহে পড়ার আশঙ্কা: বিয়ে না করলে হারামে পতনের বাস্তব সম্ভাবনা

    অযুক্তিক আপত্তি: বংশ, গোষ্ঠী বা সামাজিক মর্যাদার অজুহাত

    শরিয়তসম্মত পাত্র/পাত্রী: ধর্মীয় ও নৈতিক মানদণ্ডে উপযুক্ত

    ইমাম নববি (রহ.) বলেন,

    "যদি বিয়ে ফরজ বা ওয়াজিব পর্যায়ে পৌঁছে এবং মা-বাবার আপত্তি অযুক্তিক হয়, তবে তাদের মত অগ্রাহ্য করা যাবে।"— আল-মাজমু: ১৬/৩৪২

    ৩. করণীয় কী? এমন পরিস্থিতিতে সন্তানের জন্য করণীয় হলো:

    মা-বাবার সঙ্গে নম্রভাবে আলোচনা করা

    পারিবারিক প্রবীণ বা সম্মানিত আলেমদের মাধ্যমে বোঝানো

    প্রয়োজন হলে স্থানীয় ইসলামিক স্কলার বা দারুল ইফতা থেকে পরামর্শ নেওয়া

    শেষ পর্যন্ত বিয়ে হলেও মা-বাবার সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করা এবং তাদের হক আদায়ে সচেষ্ট থাকা

    ৪. বিশেষ সতর্কতা অর্থনৈতিকভাবে সক্ষম না হলে বিয়ের চিন্তা না করা

    কেবল আবেগের বশবর্তী হয়ে সিদ্ধান্ত না নেওয়া

    বিয়ের পরও মা-বাবার প্রতি দায়িত্ববোধ বজায় রাখা

    শরিয়তের বিরুদ্ধে কোনো সিদ্ধান্ত যেন না হয় (যেমন: অমুসলিম পাত্র/পাত্রীর সঙ্গে বিয়ে)

    উপসংহার ইসলামে বিয়ে যেমন জরুরি, তেমনি মা-বাবার সন্তুষ্টিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে শরিয়তের বিধান সর্বোচ্চ, এবং তা মেনে চলাই মুমিনের কর্তব্য। তাই বিয়ে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় আবেগ নয়, বিবেক ও শরিয়তের নির্দেশনাকেই প্রাধান্য দিতে হবে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে হিদায়াত দান করুন। আমিন।

    তথ্যসূত্র:

    সুরা বনি ইসরাইল: ২৩;

    সুনান ইবনে মাজাহ: ১৮৪৬;

    আল-মাজমু: ১৬/৩৪২;

    ফতোয়ায়ে আলমগিরি: ১/২৯৬;

    রদ্দুল মুহতার: ৩/৫৮


    দৈএনকে/ জে .আ
    গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন