হ্যাকারদের টার্গেটে গুগলের জেমিনি এআই, স্মার্ট হোমে বিপদ


দিনদিন এআই প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়লেও এর নিরাপত্তা ঝুঁকিও তেমনি বেড়ে চলছে। কল্পনার বাইরে মনে হলেও গবেষকরা জানিয়েছেন, হ্যাকাররা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে আপনার ঘরের লাইট বা ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি নিয়ন্ত্রণ করে বন্ধ করতে পারে।
সম্প্রতি তিনজন নিরাপত্তা গবেষক প্রমাণ করেছেন, গুগলের জনপ্রিয় এআই অ্যাসিস্ট্যান্ট ‘জেমিনি’কে হ্যাক করে স্মার্ট হোম ডিভাইস নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। এর মাধ্যমে সহজেই ঘরের লাইট, ফ্যানসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি বন্ধ-চালু করা যায়।
তারা প্রথমে একটি গুগল ক্যালেন্ডার ইনভাইটেশনের মাধ্যমে অ্যান্ড্রয়েড ফোনে থাকা জেমিনি অ্যাসিস্ট্যান্ট হ্যাক করে। এরপর ইনভাইটেশন লিংকে বিশেষভাবে তৈরি ক্ষতিকর কোড যুক্ত করে। গবেষকেরা জেমিনিকে ইনভাইটেশনের বিবরণ সংক্ষেপে বলার প্রম্পট দিলে কোডটি সক্রিয় হয়ে পড়ে। এরপর তা ঘরের অন্যান্য ডিভাইসে ধারাবাহিকভাবে কমান্ড কার্যকর করতে থাকে।
ফলে এটি স্পষ্ট যে ভবিষ্যতে এই ধরনের এআই মডেল যদি স্বয়ংক্রিয় গাড়ি, রোবট কিংবা অন্যান্য জটিল যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত হয়, তাহলে নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি তৈরি হতে পারে।
হ্যাকিংয়ের প্রক্রিয়ার পুরো প্রযুক্তিগত বিবরণ প্রকাশ না করলেও গবেষকেরা জানান, স্মার্ট হোম প্রযুক্তিতে এআই ব্যবহারের আগে শক্তিশালী সুরক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। সম্ভবত এ কারণেই গুগল এখনো তাদের স্মার্ট স্পিকারে জেমিনি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়নি। তবে গুগলের পরিকল্পনা অনুযায়ী, শিগগিরই জেমিনি স্মার্ট ওয়াচ, স্মার্ট টিভি, এমনকি গাড়িসহ আরও বেশ কিছু যন্ত্রাংশে জেমিনি এআই যুক্ত করা হবে।
তেল আবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক বেন নাসি বলেন, “ভবিষ্যতে যখন এই ধরনের বড় বড় এআই মডেল স্বয়ংক্রিয় গাড়ি, হিউম্যানয়েড রোবটের মতো জটিল যন্ত্রে ব্যবহৃত হবে, তখন সেগুলোকে সুরক্ষিত করা খুবই জরুরি, কারণ এতে শুধু গোপনীয়তা নয়, বরং নিরাপত্তাও জড়িত।”
গুগল বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নিয়ে ইতোমধ্যেই সমস্যা সমাধানে কাজ করছে। গুগলের প্রতিনিধি অ্যান্ডি ওয়েন জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত এই দুর্বলতা কেউ কাজে লাগায়নি, তবে তারা সতর্ক রয়েছে এবং এআই প্রম্পট ইনজেকশন আক্রমণ প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিচ্ছে।
দৈএনকে/জে, আ
