লাইসেন্স বিহীন ব্লাডব্যাংক এর বিরুদ্ধে হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত রক্ত সরবরাহের অভিযোগ


রক্ত জীবন বাঁচায়, কিন্তু সেই রক্ত যদি হয় সংক্রমিত—তবে তা মৃত্যু ডেকে আনতেও পারে। এমনই ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে মানিকগঞ্জ শহরে।
অভিযোগ উঠেছে, শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার বেসরকারি প্রতিষ্ঠান 'দেশ সেবা ব্লাড ব্যাংক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার' থেকে হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসে আক্রান্ত রক্ত সরবরাহের চেষ্টা করা হয়েছিল এক তরুণী রোগীকে।
জরুরি অস্ত্রোপচারের জন্য ভর্তি থাকা খাদিজা আক্তার (২০)-এর জন্য গত ৭ জুলাই ওই ব্লাড ব্যাংক থেকে রক্ত সংগ্রহ করা হয়। তবে ক্লিনিকের একজন নার্স রক্ত রিপোর্টে সন্দেহজনক অসঙ্গতি দেখে পুনরায় পরীক্ষা করান। এতে রক্তে হেপাটাইটিস বি পজিটিভ ধরা পড়ে। শেষ মুহূর্তে সতর্কতা না থাকলে রোগীর শরীরে মারাত্মক সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারত।
রোগীর স্বামী শাহ আলম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “টাকার বিনিময়ে রক্ত কিনেছিলাম—ভাবিনি সেটাই প্রাণনাশের কারণ হতে পারত।”
বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিত ভাড়া করা রক্তদাতার মাধ্যমে রক্ত সংগ্রহ করে, যাদের স্বাস্থ্যগত কোনো যাচাই হয় না। অধিকাংশ সময় এইচআইভি, হেপাটাইটিস-বি/সি, সিফিলিসের স্ক্রিনিং হয় না—হয়ও যদি, সেটি কাগজে-কলমে লোক দেখানো মাত্র।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক দিক হলো—প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্সের মেয়াদ ২০১৫ সালে শেষ হলেও এখনো তা নবায়ন হয়নি। নেই হালনাগাদ ট্রেড লাইসেন্সও।
এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীম রেজা বলেন, “আমি শুধু ডোনার ম্যানেজ করে দিয়েছি। টেস্ট করাইনি।”
এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ড্যাব মানিকগঞ্জ জেলা সভাপতি ডা. বদরুল আলম চৌধুরী বলেন, “রক্ত যদি হয় বাণিজ্যের পণ্য, তবে তা শুধু অনৈতিক নয়—গুরুতর অপরাধ।”
সুজন মানিকগঞ্জ শাখার সভাপতি অধ্যাপক ইন্তাজ উদ্দিন বলেন, “ইচ্ছাকৃতভাবে জীবনের ঝুঁকি সৃষ্টি করা হলে তা ফৌজদারি অপরাধ। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ছাড়া এমন অপকর্ম থামবে না।”
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ খুরশিদ আলম জানান, “লাইসেন্স ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠান রক্ত সরবরাহ করতে পারবে না। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব এবং প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দেওয়া হবে।
দৈএনকে/জে, আ
