শেষ ম্যাচে মুখ থুবড়ে বাংলাদেশ, সিরিজ গেল শ্রীলঙ্কার ঝুলিতে


শ্রীলঙ্কার মাটিতে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে সিরিজ জয়ের দ্বারপ্রান্তে ছিল বাংলাদেশ, কিন্তু শেষ ম্যাচে ব্যাটিং বিপর্যয়ে সব সম্ভাবনা উবে গেল। পাল্লেকেলেতে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ২৮৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে টাইগাররা। টপ অর্ডারের একের পর এক ব্যর্থতা, অযথা শট খেলা এবং আত্মবিশ্বাসহীন ব্যাটিংয়ে ধসে পড়ে গোটা ইনিংস। পুরো দল মাত্র ১৮৬ রানেই গুটিয়ে যায়, ফলে ৯৯ রানের বড় ব্যবধানে পরাজিত হয় বাংলাদেশ। এই হারের ফলে ২-১ ব্যবধানে সিরিজটি নিজেদের করে নেয় শ্রীলঙ্কা।
সিরিজ জয়ের স্বপ্ন নিয়ে পাল্লেকেলেতে নেমেছিল বাংলাদেশ, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোয় ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত ৯৯ রানে হেরে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে হারতে হলো মেহেদী হাসান মিরাজের দলকে।
ক্যান্ডির পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ২৮৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে টাইগাররা। শুরুর ধাক্কা সামলানোর আগেই একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে সফরকারীরা।
মেন্ডিস-আসালাঙ্কার দৃঢ়তায় বড় সংগ্রহ
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শ্রীলঙ্কা নির্ধারিত ৫০ ওভারে সংগ্রহ করে ২৮৫ রান। দলের বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন কুশল মেন্ডিস ও চারিথ আসালাঙ্কা।
মেন্ডিস ১১৪ বলে করেন ১২৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস, যার মধ্যে ছিল ১১টি চার ও ২টি ছক্কা। আসালাঙ্কা করেন কার্যকর ৫৮ রান। শেষ দিকে বাংলাদেশের বোলাররা কিছুটা নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে আনলেও লঙ্কানদের রান অনেকটাই চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়ায়। বাংলাদেশের পক্ষে মিরাজ ও তাসকিন নেন দুটি করে উইকেট |
ব্যাটিং বিপর্যয়ে ডুব বাংলাদেশের
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের শুরুতেই হোঁচট খায় বাংলাদেশ। তৃতীয় ওভারে শান্ত ফিরে যান শূন্য রানে। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে দল।
শ্রীলঙ্কার দুই পেসার দুশমন্ত চামিরা ও আসিথা ফার্নান্দো প্রথম দিকেই চাপ সৃষ্টি করে তুলে নেন তিনটি করে উইকেট। ওপেনিংয়ে ইমনের ২৮ ও হৃদয়ের ৫১ রানের ইনিংস কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও তা পর্যাপ্ত ছিল না।
উইকেট পতন থামেনি একটানা। মিডল অর্ডার ও লোয়ার অর্ডার থেকেও আসেনি কাঙ্ক্ষিত অবদান। ইনিংস থামে ৩৯.৪ ওভারে মাত্র ১৮৬ রানে। ম্যাচে কখনই প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারেনি বাংলাদেশ।
নির্ধারক পার্থক্য: কুশল মেন্ডিস
দারুণ ফর্মে থাকা কুশল মেন্ডিস পেয়েছেন ম্যাচ ও সিরিজ সেরার পুরস্কার। তিন ম্যাচে ২২৫ রান করে তিনি সিরিজে সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যাটার হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন।
ম্যাচ সারসংক্ষেপ
শ্রীলঙ্কা: ২৮৫/৭ (৫০ ওভার)
বাংলাদেশ: ১৮৬/১০ (৩৯.৪ ওভার)
ফল: শ্রীলঙ্কা ৯৯ রানে জয়ী
সিরিজ: শ্রীলঙ্কা ২-১ ব্যবধানে জয়ী
প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ: কুশল মেন্ডিস (১২৪ রান)
প্লেয়ার অব দ্য সিরিজ: কুশল মেন্ডিস (২২৫ রান)
প্রথম ম্যাচে পরাজয়ের পর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ঘুরে দাঁড়ালেও, সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে চাপ সামলাতে পারেনি বাংলাদেশ। ব্যাটিং ও বোলিং—দুই বিভাগেই ছিল অনুজ্জ্বলতা। শেষ ম্যাচে স্বপ্নের জায়গায় এসে তীব্র বাস্তবতায় মুখ থুবড়ে পড়ে মিরাজের দল।
