শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫
Natun Kagoj
শিরোনাম

রাঙ্গুনিয়ায় দুই ভাইয়ের গুলিবর্ষণ, শীর্ষ সন্ত্রাসী আইয়ুব আটক

রাঙ্গুনিয়ায় দুই ভাইয়ের গুলিবর্ষণ, শীর্ষ সন্ত্রাসী আইয়ুব আটক
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার চন্দ্রঘোনা কদমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মানববন্ধনে প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে তিন যুবদল নেতাকে আহত করার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ফ্যাসিস্ট সরকারের সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সহযোগী শীর্ষ সন্ত্রাসী আ.লীগ নেতা আইয়ুব (৪৬) কে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব-৭)।

শুক্রবার  দিবাগত রাত দেড়টার দিকে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার অক্সিজেন মীনা বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার সন্ত্রাসী আইয়ুব রাঙ্গুনিয়া উপজেলার চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নের কদমতলি উত্তর পাড়া গ্রামের মৃত ইছাহাক মিয়া ওরফে স্টার মিয়ার ছেলে।

শনিবার (৫ জুলাই) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাঙ্গুনিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এটিএম শিফাতুল মাজদার। 

তি‌নি জানান, রাঙ্গুনিয়া পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী মো. আইয়ুব চট্টগ্রাম মহানগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার অক্সিজেন মীনা বাজার এলাকায় গোপনে অবস্থান করছিলেন। গোপন সূ‌ত্রে তাঁর অবস্থান নি‌শ্চিত হওয়ার পর র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব-৭)।
অভিযান প‌রিচালনা ক‌রে তাঁকে গ্রেপ্তার করে রাঙ্গুনিয়া মডেল থানায় হস্তান্তর করেন।

ওসি এটিএম শিফাতুল মাজদার বলেন, 'সন্ত্রাসী আইয়ুব ২০২১ সালের একটি মামলায় ২ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তাঁর বিরুদ্ধে থানায় চুরি, ডাকাতি, অস্ত্র, ভুমি, মাদক, জুলাই আন্দোল‌নে হত‌্যাকাণ্ডসসহ একাধিক মামলা রয়েছে। গত ৫ আগস্টের পর থেকেই তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। তা‌ঁকে আজ আদাল‌তের মাধ‌্যমে কারাগা‌রে প্রেরণ করা হ‌বে, এবং তাঁকে রিমান্ডে এনে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।'

জানা গেছে, সন্ত্রাসী আইয়ুব রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য  হিসেবে পরিচিত হলেও, সবচে বেশি পরিচিত ছিলেন ফ্যাসিস্ট সরকারের সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী পলাতক ড. হাছান মাহমুদের সহযোগী হিসেবে। সে সুবাদে তিনি দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি, অস্ত্র নিয়ে শোডাউন, হুমকি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়, মাদক ব্যবসা, বালি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। গত ১০ জুন
চন্দ্রঘোনা কদমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মানববন্ধনে প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে  ব্রাশ ফায়ার করার একটি ভিডিও দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে মো. ইমন (২৬), মো. রহমত (২০) ও মো. জনি (১৮) নামে তিন যুবদল নেতাকে আহত হয়। এছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে ৪০২, ৩৬৩২ নং দু'টি জাল দলিল সৃষ্টি করে সংখ্যালগু হিন্দু পরিবার জমি জবর দখল নেয়ার অভিযোগ আছে। সম্প্রতি চন্দ্রঘোনা চারা বটতলের কর্ণফুলী নদীর বালুমহাল নিয়ে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় তাঁর আরেকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এঘটনার পর থেকে আইয়ুব কিছু দিন লোক চক্ষুর আড়ালে চলে যায়। তবে তাঁর কাছে ২টি একে-৪৭, ৫টি নাইন এমএম পিস্তলসহ বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র ভান্ডার থাকার তথ্য জানান এলাকাবাসী। অবশ্য র‍্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে আইয়ুব তা অস্বীকার করেন।

এদিকে আইয়ুব গ্রেপ্তার হওয়ার পরপরই ওই রাতে চন্দ্রঘোনা কদমতলী গ্রামে তাঁর দুই ভাই ইব্রাহিম ও তৈয়বের নেতৃত্বে আইয়ুব বাহিনী সদস্যরা ৬৫- ৭০ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে স্থানীয় মানুষ জনের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। এতে কেউ হতাহত হয়নি। তবে পুনরায় গুলিবর্ষণের আশঙ্কায় চন্দ্রঘোনার কদমতলি উত্তর পাড়া একালায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গ্রামবাসী। 


দৈএনকে/ জে. আ
গুগল নিউজে (Google News) নতুন কাগজ’র খবর পেতে ফলো করুন

সর্বশেষ

আরও পড়ুন