জুলাই সনদের খসড়া প্রকাশ, রাষ্ট্রপতির অভিশংসন প্রক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত


রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে একাধিক বৈঠকের পর জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জুলাই সনদের খসড়া প্রস্তুত করেছে। খসড়াটি ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে। দলগুলোর কাছে অনুরোধ করা হয়েছে, খসড়ার বিষয়ে কোনো মতামত বা প্রস্তাব থাকলে আগামী ২০ আগস্ট বিকেল ৪টার মধ্যে কমিশনের কার্যালয়ে লিখিতভাবে জমা দিতে।
শনিবার (১৬ আগস্ট) রাতে প্রকাশিত খসড়ায় উল্লেখ করা হয়, রাষ্ট্রদ্রোহ, গুরুতর অসদাচরণ বা সংবিধান লঙ্ঘনের মতো অপরাধের দায়ে রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রক্রিয়া চালানো যাবে।
সেক্ষেত্রে আইনসভার নিম্নকক্ষে অভিশংসন প্রস্তাবটি দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের ভোটে পাস করিবার পর তা উচ্চকক্ষে প্রেরণ এবং উচ্চকক্ষে শুনানির মাধ্যমে দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থনে অভিশংসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হইবে। এ প্রস্তাবে ২৮টি দল ও জোট একমত হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতির ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, সংবিধানে এরূপ যুক্ত করা হবে যে বাংলাদেশের একজন রাষ্ট্রপতি থাকবেন, যিনি আইন অনুযায়ী আইনসভার উভয় কক্ষের (নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষ) সদস্যদের গোপন ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে নির্বাচিত হবেন। রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হওয়ার সময় কোনো ব্যক্তি কোনো রাষ্ট্রীয়, সরকারি বা রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের পদে থাকতে পারবেন না।
রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও দায়িত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনতে এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪৮ (৩) সংশোধনীর প্রস্তাব করে কারও পরামর্শ বা সুপারিশ ছাড়াই নিজ এখতিয়ার বলে রাষ্ট্রপতি নিম্নলিখিত পদে নিয়োগ দিতে পারবেন—
১. জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ। ২. তথ্য কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ। ৩. বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ। ৪. আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ। ৫. বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ।
এ ছাড়া সনদে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতার জায়গায় বলা হয়েছে, কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত যে কোনো দণ্ডের মার্জনা, বিরাম মঞ্জুর করার এবং যেকোনো দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকিবে এবং আইনের দ্বারা নির্ধারিত মানদণ্ড, নীতি ও পদ্ধতি অনুসরণক্রমে উক্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করা হবে। সংশ্লিষ্ট আইনে এরূপ বিধান রাখা হবে যে, এরূপ কোনো আবেদন বিবেচনার পূর্বে মামলার বাদী বা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির পরিবারের সম্মতি গ্রহণ করা হবে। এই প্রস্তাবে ২৯টি দল ও জোট একমত হয়েছে।
