ইসলামী দলগুলোর সতর্কবার্তা: কালকের মধ্যে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হলে ঢাকায় আন্দোলন

আগামীকাল শুক্রবারের মধ্যে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি না হলে এবং গণভোটের বিষয়ে অবিলম্বে সিদ্ধান্ত নেওয়া না হলে আগামী মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকায় বৃহৎ জনস্রোত হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা আটটি ইসলামী দলের নেতারা।
দলগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা যুগপৎ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের কাছে দাবি আদায় ও বাস্তবায়নের জন্য চাপ সৃষ্টি করবে। নেতারা আরও জানিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পদক্ষেপ না নিলে আন্দোলন আরও কঠোর আকার নেবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই হুঁশিয়ারি রাজধানীর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রভাবিত করতে পারে এবং প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে হবে।
তারা বলছেন, জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। জুলাই জাতীয় সনদকে আইনি ভিত্তি দিতে হবে। সংস্কার না করে কোনো নির্বাচন বাংলাদেশের মাটিতে হতে দেওয়া হবে না, হবে না। সুতরাং আগে গণভোট দিতে হবে। তার আগে অনতিবিলম্বে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করতে হবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রায় পুলিশি বাধার পর রাজধানীর মৎস্য ভবন মোড়ে অবস্থান নিয়ে তারা এমন হুঁশিয়ারি দেন। এসময় দলগুলোর পক্ষে ৯ সদস্যের প্রতিনিধিদল যমুনায় স্মারকলিপি দিতে যান।
যমুনার ভেতরে বৈঠক চলাকালীন নেতাকর্মীরা মৎস ভবন মোড়ে গণভোট ও জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। তারা বলেন, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব ছিল তিনটি। বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন। শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
সমমনা আট দলের নেতারা আরও বলেন, আজ নেতৃবৃন্দ প্রধান উপদেষ্টার কাছে গিয়েছেন। আমরা আশা করি, আগামীকাল জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করা হবে এবং গণভোটের তারিখ ঘোষণা করা হবে। যদি তা না করা হয় আগামী ১১ নভেম্বর ঢাকায় জনতার মহাসমুদ্র সৃষ্টি হবে।
আজ প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিতে দুপুর ১২টায় পুরানা পল্টন মোড় থেকে সমমনা আট দলের একটি পদযাত্রা যমুনা অভিমুখে রওনা হয়। পদযাত্রাটি মৎস্য ভবন এলাকায় পৌঁছালে সেখান ব্যারিকেড দিয়ে বাধা দেয় পুলিশ। এসময় আন্দোলনকারীরা জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট ও জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। পরে সেখান থেকে একটি প্রতিনিধিদল স্মারকলিপি নিয়ে যমুনায় যান।
ইসলামী দলগুলোর পাঁচ দফা দাবি হলো—জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং ওই আদেশের ওপর নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করা; আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে বা উচ্চকক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি চালু করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা; ‘ফ্যাসিস্ট’ সরকারের সব জুলুম–নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং ‘স্বৈরাচারের দোসর’ জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
ইসলামী আটটি দলের মধ্যে রয়েছে—জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি।