হৃদয় শান্ত রাখতে এই ৫টি আমল যথেষ্ট

আধুনিক জীবনের ব্যস্ততা, অজানা ভয় এবং দুশ্চিন্তার কারণে অনেকেই মানসিক অস্থিরতায় ভুগছেন। কাজের চাপ, পারিবারিক সমস্যা বা জীবনের নানা অনিশ্চয়তা মনকে ভারাক্রান্ত করে তোলে, যার ফলে ইবাদতে মনোযোগ কমে যায় এবং জীবনে আসে এক ধরনের শূন্যতা। অথচ ইসলাম এমন কিছু সহজ ও বাস্তবমুখী আমল শিক্ষা দিয়েছে, যা নিয়মিত পালন করলে মন শান্ত হয়ে অন্তরে ফিরে আসে প্রশান্তি ও স্থিরতা।
নিচে কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত সেই পাঁচটি আমল তুলে ধরা হলো—
১. দোয়া করা
দোয়া হলো মুমিনের সবচেয়ে বড় অস্ত্র। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আমার বান্দারা যদি আমার বিষয়ে জিজ্ঞেস করে, তবে আমি তো কাছে আছি। আহ্বানকারী যখন আমাকে ডাকে, আমি তার আহ্বানে সাড়া দিই।’ (সুরা বাকারা: ১৮৬)
রাসুলুল্লাহ (সা.) দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে মুক্তির জন্য নিয়মিত এ দোয়া পড়তেন—
“আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হুজনি, ওয়াল আজাজি ওয়াল কাসালি, ওয়াল বুখলি ওয়াল জুবনি, ওয়া দালায়িদ দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজাল।” (বোখারি: ২৮২৯)
২. ইখলাস বা একনিষ্ঠতা
আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কাজ করলে মন শান্ত হয়, আত্মা প্রশান্তি পায়। প্রশংসা বা প্রতিদানের আশায় নয়, বরং শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আমল করলে মন থেকে অস্থিরতা দূর হয়। (সুরা বাইয়্যেনাহ: ৫)
৩. আল্লাহর নিয়ামত স্মরণ করা
মানুষ জীবনের প্রতিটি পরতে আল্লাহর অসংখ্য নিয়ামতে পরিপূর্ণ। সমস্যার দিকে না তাকিয়ে বরং নিয়ামতের দিকে তাকালে মন হালকা হয়। আল্লাহ বলেন, ‘তিনি তোমাদের যা কিছু প্রয়োজন, তা দিয়েছেন। আর তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ গুনে শেষ করতে পারবে না।’ (সুরা ইবরাহিম: ৩৪)
৪. আল্লাহর ওপর ভরসা রাখা
যিনি আল্লাহর ওপর ভরসা রাখেন, তার হৃদয়ে ভয় থাকে না। নবী ইবরাহিম (আ.) থেকে শুরু করে সাহাবায়ে কেরাম— সবাই আল্লাহর ওপর নির্ভর করে বিপদের মাঝেও শান্তি পেয়েছেন। (সুরা আলে ইমরান: ১৭৩–১৭৪)
৫. ধৈর্য ধরা
ধৈর্যশীল ব্যক্তি কখনো পরাজিত হয় না। আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ, ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা বাকারা: ১৫৩)
মানসিক অস্থিরতায় ভোগা মানুষ যদি এই পাঁচটি আমলকে জীবনের অংশ করে নেয়, তবে তার হৃদয় থেকে দূর হবে দুশ্চিন্তা, ফিরে আসবে প্রশান্তি, আর অন্তরে নেমে আসবে আল্লাহর রহমতের শান্ত ছায়া।
দৈএনকে/জে, আ